Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মায়ের কাছে রান্না শিখে সিঙ্গাপুরে বিরিয়ানির দোকান বাংলাদেশির


বাংলাদেশে সাধারণত রান্নাবান্নার কাজটা মেয়েরাই করে থাকে, ছেলেদের খুব একটা চুলার পিঠে বসতে দেখা যায় না। তবে সময় বদলাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে পুরোনো ধ্যান-ধারণা, রীতিনীতি। এখন মেয়েদেরও মাঠে কাজ করতে দেখা যায়, ছেলেদের দেখা যায় রান্না করতে। আর তাতে সফল হওয়ার নজিরও রয়েছে ভুরিভুরি।

বেপার শরিফের বাড়ি গাজীপুরের উত্তর খামের গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই রান্নাবান্নায় আগ্রহ তার। তবে দেশের আর দশটা পরিবারের মতোই শরিফের বাড়িতেও এসব কাজ তার মা-ই করতেন। মায়ের রান্না দেখতে দেখতে একসময় সেটি শিখেও যান তিনি। আর সেই শিক্ষাই বদলে দিয়েছে তার পরিবারের অবস্থা। এখন সিঙ্গাপুরে একটি বিরিয়ানির দোকানের মালিক হয়ে উঠেছেন শরিফ।

সম্প্রতি সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইট টাইমস শরিফের জীবনযাত্রা নিয়ে চমৎকার একটি ভিডিওচিত্র নির্মাণ করেছে। এতে উঠে এসেছে বাংলাদেশি এ যুবকের দৈনন্দিন জীবন আর সংগ্রামের কাহিনী।

ভিডিওতে শরিফ বলেন, আমার বাড়ি ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে উত্তর খামের গ্রামে। গ্রামটি চমৎকার। রাস্তার পাশেই আমাদের বাড়ি।

মায়ের কাছে রান্না শেখার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার মা জানেন না আমি কেন রান্না শিখতে চাইতাম। তিনি কখনো কিছু বলেননি। আমি দেখে দেখেই শিখে নিয়েছি।

শরিফ জানান, তিনি তার বোনের বিয়েতে বিরিয়ানি রান্না করেছিলেন। এরপর থেকেই এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।

ভিডিওতে এ যুবক জানান, তিনি আট বছর আগে সিঙ্গাপুরে যান, সেখানে টানা ছয় বছর নির্মাণশ্রমিকের কাজ করেছেন। এরপর বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এখানে স্থানীয় একটি স্কিল ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আবারও সিঙ্গাপুরে ফিরে যান।

সে সময় সিঙ্গাপুরের জনশক্তি মন্ত্রণালয় তাকে রুবেন নামে এক ব্যক্তির খাদ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে পাঠায়।

শরিফ বলেন, রুবেন জানতে চান আমার কী দক্ষতা রয়েছে। তাকে বলি, আমি ভালো রান্না করতে পারি। আর আজ আমি তার (রুবেন) বিরিয়ানির দোকানের অংশীদার।

বর্তমানে সিঙ্গাপুরের উত্তরাঞ্চলীয় ইশুন শহরে ‘বিরিয়ানি ৪৭’ নামে দোকানে খাবার বিক্রি করেন এ যুবক।

তিনি বলেন, এটি শুরু করতে আমি আর্থিকভাবে কোনও অবদান রাখিনি। এখন ধীরে ধীরে তার অর্থ পরিশোধ করছি। সিঙ্গাপুরে এটাই এখন আমার জীবন।

শরিফ বলেন, আমি প্রতিদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে ভোর সাড়ে ৬টায় দোকানে পৌঁছাই। এরপর প্রায় তিন-চার ঘণ্টা রান্না করি। আমি মুরগির মাংস, খাসির মাংস, মাছ ও টোফু রান্না করি। বেলা ১১টা ২০ মিনিটের মধ্যে রান্না শেষ করে দোকান খোলার প্রস্তুতি নেই। দোকান খোলা হয় সাড়ে ১১টায়। বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে সব বিরিয়ানি বিক্রি হয়ে যায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবাই বাড়িতে রান্না করে আর আমরা খাবার খুব একটা কিনি না। কিন্তু বেশিরভাগ সিঙ্গাপুরিয়ান বাড়িতে রান্না করে না। এখানে মানুষজন সাধারণত খাবার কিনে খেতেই পছন্দ করে। ক্রেতারা আমার কাছে আসে এবং খাবারের জন্য আমার প্রশংসা করে।

গাজীপুরের এ যুবক বলেন, সিঙ্গাপুর আমাকে গ্রহণ করেছে। আমার নিজেকে আর বিদেশি বলে মনে হয় না। মনে হয় আমিও সিঙ্গাপুরিয়ান। বাংলাদেশের পাশাপাশি এখানেও আমার নতুন একটি পরিবার হয়েছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.