Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বাবা, আমার পা উড়ে গিয়েছে, বাঁচাও! ফোন করেই ঢলে পড়লেন চট্টগ্রামের মমিনুল

চারপাশে কানফাটানো আওয়াজ। বিকট শব্দে ক্ষণে ক্ষণে বিস্ফোরণ হচ্ছিল। সেই সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা ক্রমে ঘিরে ধরছিল চারপাশ। ডিপোর ভেতরে তখন আর্তনাদের শব্দে ভারী হয়ে উঠেছিল বাতাস। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এপাশ-ও পাশে পড়ে কাতরাচ্ছিলেন অনেকে। কেউ নিথর হয়ে পড়ে। চার দিকে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। হঠাৎই আরও জোরালো একটি বিস্ফোরণ হল। সেই বিস্ফোরণে পা উড়ে গেল সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া মমিনুলের। পকেট থেকে কোনও রকমে ফোনটা বের করে বাবাকে বলেছিলেন, ‘বাবা কিছু ক্ষণ পর পর এখানে ব্লাস্ট হচ্ছে। আমার পা উড়ে গিয়েছে’। তার পরই ফোনটা কেটে গিয়েছিল।

ফোনের অপর প্রান্তে তখন ছেলের গলা শোনার অপেক্ষায় তখনও ফোন কানে ধরে রেখেছিলেন ফরিদুল হক। কিন্তু না, ফোনের ও পার থেকে ছেলের কণ্ঠস্বর আর শুনতে পেলেন না তিনি। তখনই মনের মধ্যে একটা আশঙ্কা দলা পাকিয়ে উঠেছিল ফরিদুলের। তিনি জানতে পেরেছিলেন, সীতাকুণ্ডের ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার পর পরই ছেলের বাঁচানোর আর্তি ভেসে আসা যেন বজ্রাঘাতের মতো ছিল।

সংবাদ মাধ্যমকে ফরিদুল বলেন, ‘ফোনেই ছেলের আর্ত চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। ও চিৎকার করে বলছিল, ‘বাবা এখানে কিছু ক্ষণ পর পর ব্লাস্ট হচ্ছে’। তারপর আরও একবার ফোন করে ছেলে। তখন জানায় ওর পা উড়ে গেছে বিস্ফোরণে’। এর পরই আত্মীয়দের বিষয়টি জানিয়ে তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলেন ফরিদুল। হাসপাতালে যান মমিনুলের কাকা খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ’হাসপাতালে গিয়ে ভাতিজার মরদেহ দেখতে পেলাম’। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে এক জন মমিনুল।

অর্থনীতিতে স্নাতক করে সম্প্রতি সীতাকুণ্ডের কন্টেনার ডিপোতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন মমিনুল। তারা দুই ভাই এক বোন। ভাইবোনদের মধ্যে মমিনুল মেজো। পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পরিবারে সচ্ছল অবস্থা ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। মমিনুলের মামাতো ভাই তায়েব জানিয়েছেন, চাকরি করতে করতেই স্নাতকোত্তর করবেন বলে তাকে জানিয়েছিলেন মমিনুল। কিন্তু তা অধরাই থেকে গেল। তায়েব বলেন, ‘মমিনুল শনিবার রাত ৮টায় ডিপোতে যায়। রাত ৯টার সময় ফোন করে বলে, ভাই আমাকে বাঁচা। তার পরই হাসপাতালে এসে দেখি ভাই আর বেঁচে নেই’।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.