Beanibazarview24.com






রেকর্ড গড়েছে সিলেটে করো’নায় মৃ’ত্যু। একদিনেই মা’রা গেলেন ৮ জন। ৭২ ঘণ্টায় মৃ’ত্যু হয়েছে ১৩ জনের। সিলেটে করো’নায় মৃ’ত্যুর মিছিল চলছে। করো’নার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের সিলেটে উদ্বেগ আর আতঙ্ক জেঁকে বসেছে। চিকিৎসকরা বলছেন- বেশি মৃ’ত্যু হচ্ছে আইসিইউতে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগীরা মা’রা যাচ্ছে। সিলেটের আইসিইউতে জীবন-মৃ’ত্যু নিয়ে ল’ড়াই চলছে।




চিকিৎসকরা মূলত করো’নার সঙ্গে মূল ‘ফাইট’ করছেন আইসিইউতে। এখানে ক্রিটিক্যাল রোগীর সংখ্যা বেশি থাকে। এ কারণে সিলেটের সরকারি ব্যবস্থাপনায় আইসিইউ’র পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়ও আইসিইউতে রোগী এবং রোগ নিয়ে ল’ড়াই করতে হচ্ছে। এতে সিলেটের চিকিৎসকরা সফল। কারণ সিলেটের আইসিইউতে করো’না আ’ক্রান্ত রোগীর মৃ’ত্যুর সংখ্যা খুবই কম। সম্প্রতি মা’র্চ ও এপ্রিল মাসে এসে মৃ’ত্যু বেড়েছে। করো’না আ’ক্রান্ত রোগীদের দেরিতে হাসপাতা’লে নিয়ে আসা, বাসায় রেখে অক্সিজেন দেয়ার কারণে অনেক রোগীকে আইসিইউ সা’পোর্টে নিলে বাঁ’চানো যাচ্ছে না বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন।




স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে- সিলেটে গতকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে মা’রা গেছে ৮ জন করো’না রোগী। গত বছরের করো’নার পিক টাইমেও এত রোগী একদিনে মা’রা যাননি। করো’নার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে রোগী মৃ’ত্যুর জানান মিলেছে। এপ্রিলেই একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃ’ত্যু হয়েছে। কিন্তু এবার একদিনে মা’রা গেলেন ৮ জন। মা’রা যাওয়া সব রোগীই হচ্ছে সিলেট জে’লার বাসিন্দা। এই ৮ জনের মধ্যে সিলেটের কোভিড ডেডিকে’টেড হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহম’দ হাসপাতা’লে মা’রা গেছেন ৩ জন। আইসিইউতে ওই রোগীদের নিয়ে প্রা’ণান্তকর ল’ড়াই করেও বাঁ’চাতে পারেননি চিকিৎসকরা।




হাসপাতা’লের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুশান্ত মহাপাত্র জানিয়েছেন, শামসুদ্দিনের আইসিইউ সবচেয়ে সফল। এই আইসিইউতে রোগী মৃ’ত্যুর সংখ্যা খুবই কম। এখন উচ্চবিত্তরাও এই আইসিইউতে ছুটে আসছেন। ফলে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে শামসুদ্দিনের আইসিইউতে প্রচণ্ড চাপ বেড়েছে। মেনেজ করে রোগী ভর্তি করতে হচ্ছে। তিনি জানান, অনেক ক্ষেত্রে খুব ক্রিটিক্যাল রোগী শেষ মুহূর্তে পাঠানো হয় শামসুদ্দিনে। ফলে তাদের বাঁ’চানোর কোনো সুযোগ থাকে না। এ জন্য করো’না আ’ক্রান্ত হওয়ার পর থেকে রোগীকে চিকিৎসকদের পরাম’র্শ ও নজরে থাকার আহ্বান জানান।




সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের উপ- পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় আশ্বস্ত করে বলেছেন- ‘করো’নার চিকিৎসা নিয়ে সিলেটে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। আম’রা প্রস্তুত আছি। শামসুদ্দিনে গতকাল আইসিইউ মিলিয়ে রোগী ছিলেন ৭৩ জন। আরো ২৭ জন রোগী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ওসমানী হাসপাতা’লের দুয়ার খোলা রয়েছে। আইসিইউ, আইসোলেশন ওয়ার্ড আরো বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। করো’না আ’ক্রান্ত রোগীরা সিলেটে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা না পেয়ে মা’রা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। এখানে চিকিৎসকদের প্রা’ণান্তকর ল’ড়াই অব্যাহত রয়েছে।’ এদিকে সিলেটের বেসরকারি হাসপাতা’লেও আইসিইউতে রোগী বেশি। বেসরকারি হাসপাতা’লে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মা’রা গেছেন ৫ জন রোগী।




করো’না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া স্বাক্ষরিত সর্বশেষ সিলেট বিভাগীয় কোভিড রিপোর্টে জানা গেছে- সিলেটে করো’না আ’ক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। গতকাল সিলেটে করো’নায় নতুন করে আ’ক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ জন। যার মধ্যে ১৮ জনই সিলেটের। সিলেট বিভাগে করো’না প্রমাণিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ২৩২ জন। এরমধ্যে শুধুমাত্র সিলেট জে’লায় আ’ক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৯৩০ জন।




এ ছাড়া সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৭১৪ জন, হবিগঞ্জে ২ হাজার ৩১৫ জন ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ২৭৩ জনের করো’নায় আ’ক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১২৯ জন। এরমধ্যে সিলেটের ১২৮ ও মৌলভীবাজারের আরো ১ জন রয়েছেন। এ নিয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ হাজার ৪৪৩ জন। এর মধ্যে সিলেট জে’লার ১১ হাজার ৯৯৯ জন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৫৮৫ জন, হবিগঞ্জে ১ হাজার ৭৭০ জন ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ৮৯ জন সুস্থ হয়েছেন।




গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জে’লায় হাসপাতা’লে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন করো’না আ’ক্রান্ত রোগী। সব মিলিয়ে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতা’লে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৭৮ জন। এরমধ্যে সিলেট জে’লায় ২৫৫ জন, সুনামগঞ্জে ৪ জন, হবিগঞ্জে ১৩ জন, মৌলভীবাজারে ৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে যে ৮ জন মা’রা গেছেন এরা সবাই সিলেট জে’লার। এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করো’নায় মৃ’তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৩২ জনে। এর মধ্যে সিলেট জে’লার ২৬১ জন, সুনামগঞ্জে ২৬ জন, হবিগঞ্জে ১৮ জন ও মৌলভীবাজারের ২৭ জন রয়েছেন। -মানবজমিন







Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.