Beanibazarview24.com
যুক্তরাষ্ট্রে আবার ভয়ংকর হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর সংক্রমণ ও মৃ.ত্যু.র সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। ডিসেম্বরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। করোনার থাবা পড়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও। গত এক সপ্তাহে করোনায় ৮ বাংলাদেশি মার্কিনের মৃ.ত্যু.র খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত কয়েক দিনে করোনাভাইরাসে চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএর সভাপতি আবদুল হাই (জিয়া), মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা ইফতেখার আহমেদ (খসরু), মিশিগান রাজ্যে এবাদুর রহমান, এনামুল হক, নিউইয়র্কের কুইন্স বাসিন্দা হেনোরা বেগম, নিউজার্সি রাজ্যের বাসিন্দা আবদুল লতিফ মিয়া, মো. আলতাফুর রহমান ও মাহবুব সিদ্দিকীকে হারিয়েছে কমিউনিটি।
গত সপ্তাহে করোনা সংক্রমিত হয়ে মা.রা গেছেন নিউইয়র্কে বসবাসরত তিন বাংলাদেশি মার্কিন। এর মধ্যে নিউইয়র্কে দুজনের মৃ.ত্যু হয়। অন্যজন ভাগনির বিয়েতে যোগ দিতে বাংলাদেশে গিয়ে সেখানেই মা.রা যান। এরা হলেন গোলাম রহমান, আবুল কালাম আজাদ ও শেফালি বেগম। এ ছাড়া জুলকারনাইন জায়গিরদার নামের আরেক বাংলাদেশি করোনা আক্রান্ত হয়ে ফিলাডেলফিয়ার একটি হাসপাতালে মা.রা গেছেন।
জানা গেছে, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান রাজ্যে অনেক বাংলাদেশি মার্কিন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুর রহমানসহ পরিবারের সব সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। ফজলুর রহমান নিজেই প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা অফিসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। বর্তমানে তাঁরা সুস্থ আছেন।
১ ডিসেম্বর দুপুরে ব্রুকলিনে চট্টগ্রাম সমিতি ভবনের সামনে প্রয়াত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের জানাজায় অংশ নেওয়ার পর বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি মার্কিন করোনা সংক্রমিত হন বলে জানা গেছে। আবুল কালামের করোনায় মৃ.ত্যু হয়েছে।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ৯ ডিসেম্বর নিয়মিত করোনা প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ৮ ডিসেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে ৯৫ জনের মৃ.ত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা সংক্রমণের প্রধান কারণ রেস্তোরাঁর ভেতর খাবার ব্যবস্থা।
কুমো ইঙ্গিত দিয়েছেন, করোনা সংক্রমণে হাসপাতালের ভর্তি সংখ্যা নিম্নমুখী না হলে আগামী সপ্তাহে রেস্তোরাঁয় খাবার ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে গত এক সপ্তাহে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ কোভিড-১৯–এ মা.রা গেছেন। এক সপ্তাহের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ২ হাজার ২৪৯ মানুষের মৃ.ত্যু হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস–এর তথ্যমতে, চলতি বছরের ১৭ এপ্রিলের আগের সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৩২ জনের মৃ.ত্যু হয়েছিল।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর মহামারি আকারে গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে দেড় কোটির বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে টিকাদান কর্মসূচি শুরু এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে টিকার অনুমোদন শেষ ধাপে থাকায় অনেকে মহামারির প্রকোপ কমার আশা দেখলেও পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। গত এক সপ্তাহেই ১৫ হাজারের বেশি মার্কিনের মৃ.ত্যু হয়েছে।
অ্যারিজোনা, আলাবামা এবং ওহাইও অঙ্গরাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার দিনে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত মোট মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লাখ ছাড়াল। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৩ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর করোনার প্রকোপ কমার লক্ষণ তো দেখা যাচ্ছে না, উল্টো ছুটি ও উৎসবের মৌসুম শুরু হওয়ায় শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সংক্রমণের বিস্তার আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও করোনা টাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য ডা. অ্যান্থনি ফাউসি ৮ ডিসেম্বর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা এখন খুব চ্যালেঞ্জিং একটা সময়ের মধ্যে রয়েছি।’
ফাউসি আরও বলেন , ‘করোনার সবচেয়ে খারাপ সময় আসবে জানুয়ারিতে। তিনি সবাইকে সতর্ক করে আরও বলেছেন, যদি প্রতিটি নাগরিক ভ্যাকসিন গ্রহণ করে, তবে আগামী বছরের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিকরূপে ফিরবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.