Beanibazarview24.com
আর্থিক অনিময়মের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে অনলাইন কেনাবেচার প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেলকে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই চিঠি অনুমোদনের জন্য আদালতেও যাবে শিগগিরই। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরপরই শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে মো. রাসেল জানান, বিষয়টি তিনি ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখছেন। ইভ্যালির এই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের লেখা ফেসবুক পোস্টটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো–
‘আমি আমার বিদেশ যাওয়া নিষেধাজ্ঞা বিষয়টি পজিটিভলি দেখছি। বাংলাদেশের সব বড় কোম্পানির সাথে আমার সম্পর্ক। হয়তো আমাকে ভালোবাসার জন্য ওনাদের ভয়ের এই বিষয়টা আমাকে বলতেন না। আমরা বিজনেস করেছি সবার সাথেই। এখন ওনারা আরো বেশি কনফিডেনস পাবে।
এখন আমরা অনেকটাই প্রফিট এ বিজনেস শুরু করেছি। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী গ্রাহকদের টাকা আমাদের হাতে আসার সুযোগ নাই। এ ছাড়া তদন্ত করলেই সবাই দেখবেন পুরাতন অর্ডার কি পরিমান ডেইলি যাচ্ছে।
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এ লস হয়েছে, সেটা বিজনেস করেই প্রফিট করে ফেলব এর চেয়ে কম সময়ে। কারণ আমাদের ক্রয় মূল্য বাজার মূল্য থেকে অনেক কম। সরকারের সামগ্রিক কার্যক্রম জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য।
আমি শুধু একটাই রিকোয়েস্ট করব যে আমাদের তদন্ত বিষয়ে অতি উৎসাহ নিয়ে কেউ কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বলবেন না।আপনাদের রেগুলার কেনাকাটা ইভ্যালি তে করুন। এতেই ইভ্যালির লস এর যৌক্তিকতা আসবে।
কখনো কোন দেশের মালটিপল ভিসা ছিল না, এখন কোন ভিসা ও নাই এবং কখনো কোন সিটিজেনশীপ এর জন্য এপ্লাই করি নাই। ঘুরতে গিয়েছিলাম কয়েকবার। দেশ আমাদের। আমরা সবাই দেশের জন্যই কাজ করতে চাই। দোয়া রাখবেন।’
প্রসঙ্গত, দেশের আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ই-ভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী ও কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে দুদকের ৩৩৮ কোটি টাকা জালিয়াতি বা আত্মসাতের তদন্ত চলমান থাকায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
গত ৪ জুলাই, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া ৩৩৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা করে ইভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তার প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে দুদক। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করেছে কমিশন। টিমের আরেক সদস্য হলেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শিহাব সালাম।
গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায় যে, ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭.১৮ কোটি টাকা। গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ ২১৩.৯৪ কোটি টাকা এবং মার্চেন্টদের নিকট হতে ১৮৯.৮৫ কোটি টাকার মালামাল বাকিতে গ্রহণের পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৩.৮০ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা।
গ্রাহকদের কাছ থেকে ২১৪ কোটি টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়া ও মার্চেন্টদের ১৯০ কোটি টাকা পাওনা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকেও নির্দেশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির প্রকৃত দেনা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় গত মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে। এজন্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলকে কোম্পানির ডাটাবেজে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.