Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

লটারির টাকা পেয়ে প্রথমেই স্ত্রীর জন্য স্বর্ণ কিনবেন প্রবাসী বাংলাদেশি


দুবাইভিত্তিক লটারি আয়োজক প্রতিষ্ঠান মাহজুজের ড্রতে ১০ লাখ দিরহাম জেতা সেই প্রবাসী বাংলাদেশির নাম আবদুল কাদের। পেশায় ক্রেন অপারেটর কাদের এতদিন অর্থাভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটা ব্যাংক হিসাবও খুলতে পারেননি, সেই তিনিই ৪৬তম সাপ্তাহিক মাহজুজ ড্রতে দ্বিতীয় পুরস্কার জিতে হুট করেই কোটিপতি হয়ে গেলেন।

মাহজুজের ড্রতে প্রথম বাংলাদেশি এবং এ বছরের ড্রতে ১৬তম কোটিপতি হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন ৩২ বছর বয়সী আব্দুল কাদের। গত বুধবার (১৩ অক্টোবর) তিনি লটারিতে জিতেছেন ১০ লাখ দিরহাম, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২ কোটি ৩২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

নিজের জীবন সংগ্রাম ও হঠাৎ কোটিপতি হওয়ার অনুভূতি সম্পর্কে আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের সঙ্গে সম্প্রতি কথা বলেছেন বাংলাদেশি এ যুবক।

জানা যায়, অভাবের তাড়নায় বছর দশেক আগে আমিরাতে পাড়ি জমান আব্দুল কাদের। সেখানে ক্রেন অপারেটরের কাজ করেন তিনি। এতদিন ব্যাংকে টাকা জমানো তো দূরের কথা, ব্যাংকে হিসাব খোলারও সুযোগ হয়নি তার। থাকা-খাওয়ার খরচ বাদ দিয়ে মজুরির প্রতিটি দিরহাম দেশে পাঠিয়েছেন পরিবারের কাছে। যেহেতু উপার্জনের অধিকাংশই দেশের বাড়িতে পাঠান, তাই ফোনের জন্য ইন্টারনেটের ডেটা কেনাও তার পক্ষে কঠিন ছিল।

কাদের খালিজ টাইমসকে জানান, লটারিতে দ্বিতীয় পুরস্কার জেতার পর আবেগ-উত্তেজনায় তাৎক্ষণিকভাবে হতভম্ব হয়ে গেছিলাম। আমি আসলে এখনো মেলাতে পারছি না ১০ লাখের মধ্যে কতগুলো শূন্য থাকে। ধরে আসা গলায় তিনি আরও বলেন, যতদিন দুবাই রয়েছি, থাকা-খাওয়ার খরচ বাদে উপার্জনের প্রতিটি কড়ি বাংলাদেশে পাঠিয়েছি।

দুই সন্তানের জনক কাদের জানান, দেশে পাঠানো টাকায় যেন টান না পড়ে, সেজন্য ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ বাবদ কখনোই বেশি অর্থ খরচ করতেন না। তিনি বলেন, রাতে যখন ওই ড্র অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল, আমি নাইট শিফটে কাজ করছিলাম। ফোনে সেই অনুষ্ঠান দেখার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু পর্যাপ্ত ইন্টারনেট ডেটা না থাকায় বারবার বাফারিং হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত এক বন্ধুকে ড্রয়ের ফলাফল চেক করতে অনুরোধ করি। সেখান থেকেই জানতে পারি- আমি দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছি।

আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, পুরস্কার জেতার পর স্ত্রীকে চমকে দেওয়ার জন্য তার আর তর সইছে না। নিজের স্ত্রীকে খুবই ধৈর্যশীল ও সহানুভূতিসম্পন্ন নারী উল্লেখ করে তিনি বলেন, টাকা পাওয়ার পর আমি প্রথমেই স্বর্ণের দোকানে যাবো আর তার জন্য কিছু স্বর্ণালঙ্কার কিনবো। ১০ বছর ধরে দুবাই রয়েছি, কিন্তু এতদিন স্ত্রীকে এক রতিও স্বর্ণ উপহার দিতে পারিনি।

কঠোর পরিশ্রমী এ প্রবাসী আরও বলেন, পুরস্কারের টাকার একটা অংশ বাবা ও ভাইদের দেবো। তারা মারাত্মক অর্থকষ্টে রয়েছে। একটি অংশ দিয়ে বাড়ি বানিয়ে তা ভাড়া দেবো- এটি আসছে বছরগুলোতে আমাদের জন্য একটি নিশ্চিত আয়ের উৎস হবে।

পুরস্কারের অর্থের আরেকটি অংশ সন্তানদের শিক্ষার জন্য তুলে রাখা হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, অভাবের কারণে পড়াশোনা করতে পারিনি। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর স্কুল ছেড়ে কাজে নামতে হয়েছে। আমি চাই না সন্তানদের অবস্থাও আমার মতো হোক। লেখাপড়া শিখে তারা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়, এই টাকার একটি অংশ সে জন্য বরাদ্দ থাকবে।

পরিবারের সব চাহিদা মেটানোর পর একটি পশুর খামার করারও পরিকল্পনা রয়েছে লটারি জিতে কোটিপতি হওয়া আব্দুল কাদেরের।

এতদিনের অর্থকষ্ট নিমিষে দূর হতে দেখে যারপরনাই খুশি এ প্রবাসী। এর জন্য মাহজুজ কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি দারুণ। এমনকি আমার মতো অস্বচ্ছল ব্যক্তিরাও এতে অংশ নিতে পারে।

এর আগে আরও চারবার মাহজুজ ড্রতে অংশ নিয়েছেন আব্দুল কাদের। তবে পঞ্চমবারে এসে ভাগ্যের শিঁকে ছিড়লো তার।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.