Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সিলেটি লন্ডন প্রবাসী স্যার এনামের ১১শত কোটি টাকার নিঃস্বার্থ বিনিয়োগ


সিলেটের পরতে পরতে প্রবাসীদের বিনিয়োগ। স্থানীয় অর্থনীতির বিশাল চালিকাশক্তিও প্রবাসীরা। ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্টানিক উন্নয়নে সিলেটি রয়েছে প্রবাসীদের অনন্য অবদান। দেশে আসা রেমিটেন্সের ১৫ভাগ ওই সিলেটি প্রবাসীদের। প্রবাসীদের অর্থ ব্যক্তিগত বাসা বাড়ি নির্মান বা অনুৎপাদশীলখাতেই হয়েছে বিনিয়োগ।

সেকারনে টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি এখন সিলেটে নড়েবড়ে। নেই ভারী শিল্প কারখানা, মিল-ইন্ডাস্ট্রি। সরকার সংশ্লিষ্টদের অসহযোগিতা, তথ্যগত ঘাটতি, নিরাপদ পরিবেশ প্রতিবেশে, ঝুঁকির কারনে বর্তমানে বিনিয়োগ বিমুখও হচ্ছেন বেশিরভাগ প্রবাসী। একান্ত প্রয়োজন না হলে কোন প্রবাসী দেশে কিছু করতে চাচ্ছেন না। কারন বিনিয়োগ অভিজ্ঞতা সুখকরও নয় তাদের। ত্যক্ত এহেন পরিস্থিতির মধ্যে বদলে দেয়ার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন এক প্রবাসী।

দেশের জন্য ‘বদলাও – বদলে দাও’ যেন তার অন্তরাত্নার ‌শ্লোগান। ঘটনা যেন এমনই, তার নি:স্বার্থ বিনিয়োগে বদলে যাচ্ছে সিলেটের শিল্প নগরী ফেঞ্চুগঞ্জ। এ নগরী এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশের এক মডেলও। এখন নতুন রূপ পাচ্ছে উন্নয়ন নগরীতে। এরূপের রূপকার স্যার এনাম উল ইসলাম। ফেঞ্চুগঞ্জ বাংলাদেশের সিলেট জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি ও কুশিয়ারা নদীর তীরে অবস্থিত এ উপজেলাটি। ১৯০৭ সালে গঠিত হয় ফেঞ্চুগঞ্জ থানা। ১৯৮০ সালে উপজেলার স্বীকৃতি ফেঞ্চুগঞ্জ।

এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন। এর মধ্যে একটি ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন। স্থানীয় থানা রোড হয়ে সামান্য সামনেই ১নং ফেঞ্জুগঞ্জ ইউনিয়নের অবস্থান। ইউনিয়নের প্রসিদ্ধ গ্রাম হলো কেএমটিলা। এজনপদের যশ-খ্যাতি থাকলেও শিগগিরই নতুন মাত্রিকে পরিচিত পেতে যাচ্ছে এক ‘মিনি শহর’ হিসেবে। কেএমটিলার কৃতিমান ব্যক্তিত্ব হলেন স্যার এনাম উল ইসলাম। দাদা-পিতার মতো তিনিও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ।

৩৫ বছর পূর্বে কলেজ পড়–য়াকালীন সূদূর সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে টেমস নদীর পারে নোঙ্গর টেনেছিলেন। সেখানে গড়েছেন জীবনের কর্মবীরত্ব। তার নামের পূর্বে বৃটিশ সরকার জুড়ে দিয়েছে ‘স্যার’ পদবীর অলংকার। একনামে পরিচিতি এখন তার ‘স্যার এনাম’। নিজ উদ্যোগেই শুরু করেছেন এলাকায় উন্নয়ন বিপ্লব। তার ছোঁয়ায় আধুনিক নাগরিক সুযোগ সুবিধার সমন্বয়ে দেশে উন্নয়নের অনন্য মডেল হতে যাচ্ছে কেএমটিলা।

এ টিলায় তাঁর উদ্যোগে নিমার্ণযজ্ঞ চলছে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের। প্রাক্কলিত ব্যয় ৫ (পাচ) শত কোটি টাকা হলেও এখন ১১ (এগার) শত টাকা ব্যয়ে যেয়ে দাঁড়িয়েছে। গৃহিত চলমান এ প্রকল্পে রয়েছে ৩তলা বিশিষ্ট সেন্ট্রাল এসি সমৃদ্ধ হাজী আব্দুল জলিল গ্রাউন্ড মসজিদ, স্যার এনামুল ইসলাম ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্যার এনামুল ইসলাম ফাউন্ডেশন হাসপাতাল (হেলিপ্যাডসহ), দশ তলা বিশিষ্ট বহুতল মার্কেট, দশতলা বিশিষ্ট শিক্ষা ভবন, বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক এলাকা হাজী আব্দুল মছব্বির পল্লী। এ স্থাপনার কার্যক্রমে উপকৃত হবে স্থানীয় সাধারন মানুষ। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জ কলেজের পাশে প্রস্তাবিত ফাইবার অপটিকেল ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠার কাজও অগ্রসরমান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মসজিদ কেবল মসজিদ নয়, গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে রূপ দেয়া হবে। স্যার এনাম নিজ দাদার নামে নির্মাণাধীন ‘হাজী আব্দুল জলিল গ্রান্ড মসজিদ’ দেশী বিদেশী বিভিন্ন উপরণ দিয়ে আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলা হচ্ছে। মুসল্লীরা যাতে স্বস্তিতে সালাত আদায় করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ কমপ্লেক্সের অধীনে থাকবে ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের স্কলারশীপের ব্যবস্থাও থাকবে।

মুসলমানদের প্রাত্যহিক জীবনের অনেক কিছু জানা যাবে এখানে। এছাড়া স্যার এনাম উল ইসলামের সম্পুর্ন ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত এ প্রকল্পের আওতায় আরও রয়েছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক হাসপাতাল যেখানে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা থাকবে মুমূর্ষু রোগীদের উন্নত জায়গায় পাঠানোর জন্য। বহুতল মার্কেটে ও শিক্ষাভবনে থাকবে অফিস, ব্যাংক, বীমা, দোকান ফিমেল কলেজ, মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ইত্যাদি। স্থানীয় আবাসিক পল্লীতে থাকার সুব্যবস্থা থাকবে সর্ব সাধারনের। এছাড়্ওা একজন ক্রীড়ামোদি হিসেবে সুপরিচিতি পেয়েছেন স্যার এনাম উল ইসলাম।

ইতিমধ্যে একাধিক টুনামেন্টের আয়োজন করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। চলতি মাসের ১২ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে স্যার এনাম উল ইসলাম ফাউন্ডেশন নাইট ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট। জমকালো পরিবেশে নিরাপদ ব্যবস্থায় এ টুর্ণামেন্টের আয়োজন করছেন। একই সাথে আকর্ষণীয় পুরুস্কার ঘোষনা করেছেন তিনি। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, উচ্চশিক্ষিত স্যার এনাম অনন্য মেধার পাশাপাশি বিত্ত বৈভবও ব্যাপক। জনকল্যানে কাজ করার ইর্ষনীয় মানসিকতা তার। ইংল্যান্ডে ফিন্যান্সিয়াল ট্রেডার্স ও বিল্ডার্স ব্যবসার সাথে জড়িত তিনি। ব্যবসায়ী স্যার এনাম ব্রিটেনের সর্বোচ্চ এক করদাতা। তারপরও মনে টেনে নিয়ে এসেছে জন্মভূমির জন্য কিছু করার। সেই অভিপ্রায়ে শুরু করেন উন্নয়ণ গাথাঁ। স্থানীয় মানুষের সহযোগীতা সমর্থনও তাকে এ উন্নয়ন কাজে আপ্লূত ও অনুপ্রানীত করেছে।

কর্মসংস্থান, অসহায়দের সহায়তা ও জাতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের পাশে নিরলসভাবে কাজ করছেন তিনি। তার স্যার এনাম উল ইসলাম ফান্ডেশন নামে আর্ন্তজাতিক একটি চ্যারেটি সংগঠন রয়েছে তার। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে তার হেড অফিস। এ সংগঠন ফিলিস্তিন, সোমালিয়া সহ পাশ^বর্তী দেশ কলকাতার অসহায় মুসলমানদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে রাখছে অবদান। নিজ দেশে বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগের আহবান পেয়েছেন বর্তমান সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেই তিনি। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে, পরামর্শক্রমে নিজ জন্মভূমিতেই প্রকল্প শুরুর উদ্যোগ নেন। আগামী বছর থেকে প্রতি বছরে ১০০ টি গৃহহীন পরিবারকে গৃহ নির্মান করে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন তিনি। করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও তিনি এক কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।

বৃটেনে স্যার উপাধিপ্রাপ্ত চার জন বাঙালীর একজন হলেন স্যান এনাম উল ইসলাম। এদিকে, বিশাল এই প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী কম্ফোর্ট বিল্ডিং ডিজাইনের সত্ত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এ প্রকল্পটি বহুমুখী এবং অনেক বিশাল। বড়। প্রকল্পের গুণগত মানের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এতে দেশের ও স্থানীয় মানুষের ভাগ্য বদলের যাবে, সেই সাথে নিশ্চিত হবে উন্নত চিকিৎসা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবা।
প্রকল্প পরিচালক খলিলুর রহমান চৌধুরী বলেন, জণকল্যানে মানসিকতা নিয়ে এ প্রকল্পগুলোর অবকাঠমোগত উন্নয়ন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ২০০/২৫০‘শ শ্রমিক নির্মাণযজ্ঞে কাজ করছে।

প্রবাসী স্যার এনাম উল ইসলাম জানান, এ উন্নয়ন প্রকল্প স্যার এনাম উল ইসলাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রিত হবে। একান্ত ফি সাবিলিল্লাহ বা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে এ প্রকল্পগুলো। ব্যক্তিগত কোন লাভে এ প্রতিষ্টানগুলো গড়ে তোলছেন না তিনি। তার গৃহিত প্রকল্পে ১১শ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে জানান তিনি। তিনি এই বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর সমাজ উন্নয়ন ও জনকল্যাণ মুলক জনসেবা ধর্মী কাজ করতে চান। তিনি বলেন, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার প্রকল্পে একাধিক মুফতি কাজ করবেন। এখানে শরীয়াহ গবেষণাগার, ইসলামী মিউজিয়াম, লাইব্রেরী, মহিলাদের নামাজের স্থানসহ বিভিন্ন বিভাগ থাকবে।

স্থানীয় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বলেন, যুগান্তকারী এ উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রহন কেবল নয়, বাস্তবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন স্যার এনাম। অঁজেয় পাঁড়া গায়ে এ উন্নয়ন অবিশ^াস্য। আমরা সর্বাতœকভাবে তার সফলতা কামনা করি। প্রস্তুত রয়েছি সহযোগীতার। ফোকাস হওয়ার জন্য নয়, একান্ত জনহিতকর এ উদ্যাগ তার। ব্যবসায়িক কোন দৃষ্টি ভংঙ্গি নয়, মানুষের কল্যানে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন স্যার এনাম।

এ গুনী ব্যক্তির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এলাকাটি শিগগিরই উন্নয়ন বিপ্লবের মডেল হতে চলছে দেশের। একজন প্রবাসীর অর্থ শুধু নয়, মেধার পরিচয় ফুঠে উঠছে গৃহিত প্রকল্পের কর্মযজ্ঞে। তিনি বলেন, স্যার এনামের পথ ধরে হয়তো আগামীতে নিজ এলাকার উন্নয়নে এগিয়ে আসবেন অনেক প্রবাসী। তাদের হাতে উন্নতির শিখরে পৌছে যাবে স্থানীয় জনগোষ্টি ও দেশ। সেই সাথে কর্মসংস্থানের সুযোগে উপকৃত হবে বেকার শিক্ষিতরা।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.