Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

লন্ডনে অনেক নারী ফেসবুকে খুঁজে নিচ্ছেন শুক্রাণুদাতা


ফেসবুকে শুক্রাণুদাতা খুঁজে নিচ্ছেন ব্রিটেনের নারীরা। মূলত যেসব দম্পতির সাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান হচ্ছে না, তারা গর্ভধারণের জন্য ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে স্পার্ম ডোনার খুঁজে নিচ্ছেন।

বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির নিঃসন্তান দম্পতিদের অনেকে ফেসবুকের মাধ্যমে স্পার্ম ডোনার খুঁজছেন। বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে কেস হিসেবে ক্লো নামে এক নারীর কথা উল্লেখ করেন।

সেখানে বলা হয়েছে, ক্লো নামের এক নারী এক বছর ধরে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তার গর্ভসঞ্চার হচ্ছিল না। এরপর তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। সেখানে গিয়ে নানা পরীক্ষার পর দেখা গেল, ক্লোর সঙ্গীর শুক্রাণুর কিছু সমস্যা রয়েছে এবং গর্ভধারণ করতে হলে তাকে কোনো একজন দাতার শুক্রাণু নিতে হবে।

ক্লিনিক থেকে তাদের শুক্রাণুদাতার একটি তালিকা দেওয়া হলো। সেই তালিকা থেকে মাত্র একজন উপযুক্ত দাতার সন্ধান পেলেন তারা; যে ক্লোর মতো একই জাতিগোষ্ঠীর এবং যাকে অন্য কোনো দম্পতি এখনও বেছে নেননি। তার শুক্রাণু ব্যবহার করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ক্লোর প্রথম আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভসঞ্চারের চেষ্টা করা হলো। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হলো না।

তখন ক্লিনিক থেকে ক্লোকে বলা হলো– তারা আইসিএসআই নামে আরেকটি পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন; যাতে সরাসরি ডিম্বাণুর ভেতরে শুক্রাণু প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এ পদ্ধতিটি আরও ব্যয়বহুল এবং এর খরচ তাদেরই বহন করতে হবে। কিন্তু ক্লো জানালেন, তাদের পক্ষে তখন হাজার হাজার পাউন্ড খরচ করা সম্ভব ছিল না।

ততদিনে ক্লো আর তার সঙ্গী বিয়ে করেছেন। তার স্বামীই একদিন বললেন, অনলাইনে একজন শুক্রাণুদাতার খোঁজ করলে কেমন হয়? ক্লো তাই করলেন। তবে তার বন্ধুরা ও পরিবার যাতে ব্যাপারটি জানতে না পারে, সে জন্য তিনি একটা ভুয়া নাম নিয়ে ফেসবুকে কিছু গ্রুপে যোগদান করলেন এবং কয়েক দিনের মধ্যে একজন সম্ভাব্য শুক্রাণুদাতা পেয়েও গেলেন।

সেই শুক্রাণুদাতা লোকটি তার মেডিক্যাল ও পারিবারিক ইতিহাস জানালেন। তার কোনো যৌন রোগের সংক্রমণ হয়েছিল কিনা, তা চেক করার দলিলপত্রও দিলেন। এসব কিছুর পর ক্লো যেখানে থাকতেন, তার কয়েক মাইল দূরে একটি কারপার্কে লোকটির সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করা হলো।

পরিকল্পনা ছিল, সেই দাতা তার নিজের বীর্য নিয়ে আসবেন, তাদের দেখা হবে। তিনি ক্লোর হাতে জিনিসটা তুলে দেবেন। তার পর ক্লো একটা টয়লেটে ঢুকবেন এবং যা করতে হবে তা করবেন। তাই করা হলো। ক্লোর নিরাপত্তার কথা ভেবে তার স্বামীও সঙ্গে এসেছিলেন এবং গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলেন। তারা মোট ছয় বার এটি করেছিলেন।

ক্লো এতে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়। ক্লোর দাতা একটি ক্লিনিকে শুক্রাণু দান করেন, যা থেকে ১০টি সন্তানের জন্ম হয়। প্রতিবার তারা সেই দাতা লোকটিকে তার শুক্রাণুর জন্য ৫০ পাউন্ড এবং যাতায়াতের জন্য ১০ পাউন্ড দিয়েছিলেন।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের আইনকানুনে কিছু অস্পষ্টতা আছে। এর মধ্যে শুরু হলো করোনা মহামারি। লকডাউনের কারণে কোথাও যাতায়াত করার ওপর বিধিনিষেধ থাকায় ক্লো এবং তার স্বামী ভিন্ন উপায় বের করলেন।

তারা ফেসবুক থেকেই অন্য একজন শুক্রাণুদাতা খুঁজে বের করলেন। এই লোকটি এলেন ক্লোর বাড়িতে। এতে ব্যাপারটা তার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল- বলছিলেন ক্লো।

এতে আমি আমার নিজের সময়-সুবিধা অনুযায়ী কাজটা করতে পেরেছিলাম। তাড়াহুড়োর কিছু ছিল না। আমাকে একটা টয়লেটে ঢুকতে হয়নি। নিজের বাড়িতে হওয়ায় ব্যাপারটা আমার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল। এবং এবার ক্লো সাফল্য পান। তিনি এখন সন্তানসম্ভবা।

ক্লো বলেন, আমরা ভীষণ আনন্দিত। অনেক দিন চেষ্টার পর এখন আমাদের একটি সন্তান হতে যাচ্ছে, পরিবার হতে যাচ্ছে, যা আমরা দুজনে অনেক দিন ধরে চেয়ে আসছি। ক্লো এবং তার স্বামী যে সন্তানের জন্য একজন শুক্রাণুদাতা ব্যবহার করেছেন, তা তারা তাদের পরিবার বা বন্ধুদের বলেননি।

আইভিএফ ব্যয়বহুল বলে ব্রিটেনে অনেক নারী ফেসবুক থেকে খুঁজে নিচ্ছেন শুক্রাণুদাতা। একটা কারণ হচ্ছে– ক্লোর স্বামী যে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম তা তারা কাউকে জানতে দিতে চান না। আরেকটা কারণ হলো– কিছু লোক আছে, যারা ভাববে যে এটা একটা গুরুতর অন্যায় কাজ করেছেন তারা।

ক্লো বলছেন, সৌজন্যবোধ থেকেই তিনি তার গর্ভবতী হওয়ার কথা শুক্রাণুদাতাকে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলছেন, এ শিশুর ওপর দাতার কোনো অধিকার থাকবে না এবং সন্তানের জন্ম সনদেও থাকবে ক্লোর স্বামীর নাম। এই দাতা লোকটি আরও সন্তানের বাবা হয়েছেন। একটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তিনি শুক্রাণু দান করেছেন।

বিডি প্রতিদিন

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.