Beanibazarview24.com






জার্মানির চাকরি ছেড়ে চলে এসেছেন প্রেমিক, তাই বলে তাকে ছেড়ে যাননি জার্মান সুন্দরী জেনিফার স্ট্রায়াস। বরং প্রিয় মানুষটিকে পরিণয়ের বাধনে বাঁধতে তিনি নিজেই চলে এসেছেন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে।
রোববার জার্মানির বাইলেফেল্ড শহরের বাসিন্দা এই তরুণির সঙ্গে গোপালগঞ্জের একটি আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে কাশিয়ানী উপজেলার চয়ন ইসলামের। এর মধ্য দিয়ে পাঁচ বছরের প্রণয়ের সম্পর্ককে পরিণয়ে রুপ দিলেন এই যুগল।
১৯ বছরের তরুণি জেনিফার মাধ্যমিক লেভেলের শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম জোসেফ স্ট্রায়াস ও মায়ের নাম এসাবেলা স্ট্রায়াস। এ বিয়েতে জেনিফারের বাবা-মাসহ পরিবারের সবাইও খুব আনন্দিত। জোসেফ ট্রায়াস মেয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
জেনিফার তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশকে আমি ভালোবেসে খুশি হয়েছি। এখানকার পরিবেশ, আতিথিয়েতা ও সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
“পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে চলতে পেরে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।”
কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামের চয়ন ইসলাম বলেন, “আমি জার্মানিতে পড়াশোনা করার সময় জেনিফারের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে ভালোবাসা হয়। দীর্ঘ পাঁচ বছরের সম্পর্ক আমাদের মাঝে।
“আমি একটি চাকুরি করতাম। সেখানে মালিকের সাথে মনোমালিন্য হলে চাকুরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসি। আমার ভালোবাসার টানে জেনিফার বাংলাদেশে চলে এসেছে। আমরা বিয়ে করেছি।
“এতে আমার ও জেনিফার পরিবারের সবাই খুব খুশি। কিছু দিনের মধ্যে জেনিফারের বাবা-মা বাংলাদেশ আসবেন। তখন মহা-ধুমধামে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা আছে। ”
চয়ন জানান, তার বাবা রবিউল ইসলাম ইতালি প্রবাসী। বাবার সুবাদে তিনিও ইতালিতে যান। কিছুদিন পর সেখান থেকে জার্মানিতে চলে যান। প্রায় পাঁচ বছর আগে জার্মান ভাষা শিখতে একটি শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হন তিনি।
সেখানেই পরিচয় হয় জেনিফারের সঙ্গে। আর সে পরিচয় থেকেই তাদের মধ্যে প্রণয়ের শুরু হয়। ২০২২ সালের ১০ মার্চ চয়ন বাংলাদেশে ফিরলেও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে।
সেই সম্পর্ককে পাকাপোক্ত করতেই জেনিফার স্ট্রায়াস শুক্রবার রাতে ঢাকার হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে নামেন। সেখানে চয়ন ও তার স্বজনরা তাকে স্বাগত জানান।
রাতেই তারা জেনিফারকে নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরে চলে আসেন। শহরের মডেল স্কুল রোডের ফুফাতো ভাই আব্দুর রহমানের বাড়িতে অবস্থান করেন তার। গোপালগঞ্জে পৌঁছানোর পরে চয়নের স্বজনরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জেনিফারকে।
পরে রোববার সকালে পরিবারের লোকজন নিয়ে আদালতে গিয়ে তারা বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এদিকে ভিনদেশি বধূ পেয়ে চয়নের পরিবার জুড়ে বইছে খুশির বন্যা। হৈচৈ পড়েছে পুরো এলাকায়। নববধূকে দেখতে ছুটে আসছেন অনেকেই।
চয়নের ভাগ্নি সানজিদা আক্তার সিমি (বোনের মেয়ে) বলেন, “জার্মান থেকে আমাদের মামি এসেছে। সে দেখতে অনেক সুন্দর। আমরা অনেক খুশি। সারা দিন আমাদের মামিকে নিয়েই আনন্দেই কেটে যাচ্ছে।”
চয়নের ভাগ্নে (বোনের ছেলে) রাইয়ান রহমান অর্থ বলেন, “নতুন মামিকে পেয়ে আমরা অনেক আনন্দিত। সে অনেক ভাল। আমাদের অনেক আদর করছে। সবাই আমার মামা-মামির জন্য দোয়া করবেন।”
চয়নের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, “ভাবতেও পারিনি জেনিফার আমাদের সঙ্গে এতো সহজে মিশে যেতে পারবে। বিদেশি বৌমাকে পেয়ে আমরা সবাই খুশি। অল্পসময়ের মধ্যেই সে সবাইকে খুব আপন করে নিয়েছে। গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আনন্দ-উৎসব করে আমরা সবাই নববধূকে বরণ করে নেব ।”
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.