Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

এই বিষয়গুলো না জেনে রক্ত দিলে মৃ’ত্যুও হতে পারে


ধরুন আপনার বাবার রক্তশূন্যতা। হিমোগ্লোবিন কমে গেছে। জরুরী রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হবে। আপনার বাবা আর আপনি দুজনেই একই রক্তের গ্রুপ।

ধরা যাক বি” পজিটিভ। তাহলে নিশ্চয়ই আপনি বাবার জন্য রক্ত দেবেন। এবং সেটা করাই স্বাভাবিক।

আপনি বাবাকে রক্ত দিলেন। বাবা একটু সুস্থ। আপনার বেশ ভাল লাগছে। নিজেকে পরিতৃপ্ত মনে হচ্ছে।

১০-১৪ দিন পর আপনার বাবার জ্বর এলো। সাথে আবার রক্ত শূন্যতা, জন্ডিস, ডায়রিয়া, ত্বকে ফোস্কা। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। চিকিৎসা চলছে। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো গেলো না।

হঠাৎ এমন অসুস্থ হবার কারণটাও খুঁজে পাওয়া গেলো না।

বিষয়টি ভাবুন….

আপনজনের রক্ত পরিসঞ্চালন করার পর TA-GVHD হতে পারে। খুব কম সংখ্যক হয় কিন্তু হলে শতকরা ৯৫ ভাগ মৃ’ত্যু হার। রোগীকে ফিরিয়ে আনা যায় না।

তবে ইরেডিয়েটেড করে রক্ত দিলে এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে এই ব্যবস্থা সবখানে নেই।

অতএব আপনজন ডোনার না হওয়াটাই শ্রেয়। যেমন বাবা, মা, ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে।

স্ত্রীর রক্তশূন্যতা। রক্ত লাগবে। আপনি স্বামী। খুব ভালবাসেন স্ত্রীকে। যেহেতু রক্তের গ্রুপ এক, তাই আপনিই রক্ত দিলেন।

এবার আপনার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। বাচ্চাটা বেড়ে উঠছে জঠরে।

আপনি জানেনও না আপনার দেওয়া রক্তের অন্য কোনো এন্টিজেনের বিরূদ্ধে এন্টিবডি তৈরী হয়ে আছে আপনার স্ত্রীর শরীরে। প্লাসেন্টা দিয়ে সেই এন্টিবডি বাচ্চার শরীরে যাচ্ছে এবং লোহিত রক্ত কণিকা ভাঙছে। এটা হিমোলাইটিক ডিজিজ অব নিউবর্ন।

বাচ্চা প্রসবের পর তার এক্সচেঞ্জ ট্রান্সফিউশন লাগছে। বাচ্চাটাকে নিয়ে টানাটানি চলছে।

অতএব প্রজনন বয়সে স্বামী স্ত্রীকে রক্ত দেওয়া থেকে বিরত থাকাই উপায়।

আপনি জানেনও না আপনার শরীরে থ্যলাসেমিয়া নামক অসুখের জিন আছে। কারণ আপনি মাইনর বা ট্রেইট। আপনার বিয়ের সময় অবশ্যই যার সাথে বিয়ে তার থ্যালাসেমিয়া আছে কিনা জেনে নিন। কারণ আপনার একটু রক্তশূন্যতা হওয়ায় পরীক্ষায় পাওয়া গেছে আপনি এই জিন বহন করছেন।

বিপদটা কোথায়?
আপনি এবং আপনার স্ত্রী দুজনই যদি এই জিন বহন করেন তবে বংশধরেরা এটা পাবে। এবং কেউ না কেউ হয়তো রোগটাকে নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে। তাকে ৩/৪ মাস পর পর রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হবে। তার সাথে আরো কত বিষয় জড়িত!

রক্তপরিসঞ্চালন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরী। এটা কোনো টনিক নয়, স্যালাইনও নয়। শরীরের জীবিত কোষ প্রতিস্থাপন।

নানানরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। প্রয়োজন ছাড়া রক্ত পরিসঞ্চালন থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। আরো অনেকভাবে চিকিৎসা করা যায়।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
মহাখালী, ঢাকা, ডিএমসি কে -৪১।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.