Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ভারতে ‘জাকাত’ হিসেবে ৪০০ টন অক্সিজেন দিলেন একসময়ের কমলা বিক্রেতা


রেলস্টেশনে কমলা বিক্রি করে সংসারের খরচ মেটানোর ভার কাঁধে নিয়েছিলেন চার ভাইবোন। তাঁদের মা-ও বিভিন্ন কাজ করে সংসারের জন্য উপার্জন করতেন। কাজ শেষে প্রতি সন্ধ্যায় সন্তানদের সঙ্গেই বাড়িতে ফিরতেন তিনি। সেই চার ভাইবোনের একজন প্যায়ারে খান। যিনি একসময় অর্থের জন্য অটোরিকশাও চালিয়েছেন, তিনি আজ ৪০০ কোটি রুপির সংস্থার মালিক।

বর্তমানে ভারতের করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা, সেখানে অনেক মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্যায়ারে খান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।

স্টেশনে কমলা বিক্রেতা থেকে পর্যায়ক্রমে একসময় কোটিপতির তালিকায় নাম লেখানো প্যায়ারে খান বিভিন্ন হাসপাতালে দান করেছেন অক্সিজেন। এরই মধ্যে ৮৫ লাখ রুপির ৪০০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন দান করেছেন। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরের বাইরে ও ভেতরে একাধিক হাসপাতালে সাহায্যও করেছেন তিনি। বিনা ভাড়ায় দিয়ে যাচ্ছেন গাড়ি পরিষেবাও।

রমজান মাসে জাকাত হিসেবে দেওয়া এসব সহায়তা মনুষ্যত্বের জন্য করছেন বলে জানিয়েছেন প্যায়ারে খান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার অক্সিজেন সেবার মাধ্যমে সমাজের সেবা করতে পারি, যা এই সংকটের সময়ে সব সম্প্রদায়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে।’ প্রয়োজনবোধে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্যায়ারে খান।

প্যায়ারে খানের জন্ম মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরের তাজবাগের বস্তিতে। নাগপুর রেলস্টেশনের বাইরে ১৯৯৫ সাল থেকে কমলা বিক্রি করে আসছিলেন তিনি। এরপর একটি কুরিয়ার সংস্থায় গাড়ি চালানোর কাজ পান। এক সময় ওড়িষা রাজ্যে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাজ হারান। এরপর অটো চালিয়েও উপার্জন করতে থাকেন প্যায়ারে খান। সংগীতের প্রতিও আগ্রহ ছিল তাঁর।

আর তাই শিখেছিলেন কিবোর্ড বাজানোও। পরে নাগপুর মেলোডি মেকারস নামের একটি ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।

কিন্তু অর্থ উপার্জনের চিন্তা থেকে একসময় সংগীতের সরঞ্জাম বিক্রি এবং টাকা ধার করে কেনেন ছোট একটি বাস। কিন্তু সেই ব্যবসা টেকেনি তাঁর। তবে, ব্যবসায়িক চিন্তা থেকে সরে আসেননি প্যায়ারে খান। ২০০৪ সালের দিকে ২৪ বছর বয়সে ট্রাক কেনার জন্য মনস্থির করেন।

কিন্তু ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। পরে একটি ব্যাংক থেকে ১১ লাখ রুপি ঋণ পান। আর সেই অর্থ দিয়ে ট্রাক কেনেন প্যায়ারে খান। এরপর দুই বছরের মাথায় শোধ করেন ঋণ।

ঋণ নিয়ে ট্রাক কিনে অর্থ উপার্জনের পথ দেখা প্যায়ারে খান বর্তমানে ৩০০টি ট্রাকের মালিক। এ ছাড়া কয়েক হাজার ট্রাক ভাড়া নিয়েছেন তিনি। আশমি রোড ট্রান্সপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি সংস্থা রয়েছে।

ভারতের ১০টি এলাকায় রয়েছে তাঁর অফিস। তাঁর সংস্থায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অন্তত ৫০০ জন। তাঁর ট্রাক চলছে বিভিন্ন দেশে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান। ধীরে ধীরে নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে আসা প্যায়ারে খান আজ নিজ দেশের ক্রান্তিকালে হয়ে উঠেছেন একজন নায়ক।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.