Beanibazarview24.com
মুসলিম মা ও হিন্দু পাঞ্জাবি বাবার সন্তান নাজ। তবে বাবা এখনও কথা বলেন না তার সঙ্গে। মাও সুযোগ পেলেই গঞ্জনা দেন।
নাজ জানিয়েছেন, রূপান্তরকামী হিসেবে অনেকরকম মানসিক য.ন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে। এর সঙ্গে পরিবারকে পাশে না পাওয়া আরও বেদনাদায়ক।
ভারতের প্রথম রূপা.ন্তরকা.মী সুন্দরী তিনি। ভারত ছাড়া বিদেশেও সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছেন। একবার নয়, সাত বার। তবু উপার্জনের জন্য এখনও নিয়মিত রাস্তায় দাঁড়াতে হয় তাকে। খবর আনন্দবাজান পত্রিকার।
নাজ জোশি একজন রূ.পান্তরকা.মী। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজির (এনআইএফটি) ছাত্রী। পোশাক ডিজাইনিংয়ে স্নাতক। নিজের ব্যাচে শীর্ষস্থান অধিকারী ছিলেন নাজ।
তবে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে বারে নাচতে হয়েছে। এমনকি যৌ.নক.র্মীর কাজও করেছেন নাজ।
ছোটবেলাতেই বাবা-মা তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন। তার মেয়েলি হাবভাবে ল.জ্জায় পড়তেন তারা। প্রতিবেশীদের ভয়ে মুম্বাইয়ের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাকে। সেখানেই মানুষ হন নাজ।
তবে নিজের খরচ বরাবর নিজেই বহন করেছেন। পড়াশোনার ইচ্ছে ছিল প্রবল। ১২ বছর বয়স থেকে বারে নাচছেন। তাতে অবশ্য নাজের কোনো অসুবিধা হয়নি। বরং মেয়েদের মতো পোশাক পরতে পেরে, মেকআপ করার সুযোগ পেয়ে ভালোই লাগত তার।
এভাবেই উপার্জন করে আইএমটি থেকে এমবিএও করেছেন নাজ। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের লি.ঙ্গ প.রিবর্তনসং.ক্রা.ন্ত অ.স্ত্রো.পচা.রের খরচও জোগাড় করেছিলেন নিজেই।
মডেলিং করবেন কখনও ভাবেননি। বরং ডিজাইনার হওয়ারই ইচ্ছে ছিল। পেশায় মডেল এক চাচাতো বোনের মাধ্যমে মডেলিংয়ের দুনিয়ায় আসা তার। পরে সেই বোনেরই অকাল মৃ.ত্যু.তে মডে.লিংকে পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা মাথায় আসে নাজের।
২০১২ সাল থেকে মডেলিং এজেন্সির কাজ করতে শুরু করেন। ২০১৪-এ প্রথম সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন নাজ। তার সাম্প্রতিক সাফল্য এমপ্রেস আর্থের খেতাব জয়।
ভারতের হয়ে এ বছরের মে মাসে এই আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন নাজ। গত ১ জুন সেই প্রতিযোগিতায় জয়ী হন। ওই প্রতিযোগিতায় নাজ একাই ছিলেন রূপা.ন্তর.কা.মী।
আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নারীদের সঙ্গে টক্কর দিয়ে সেরা সুন্দরীর খেতাব ছিনিয়ে নেওয়া রূপা.ন্তরকা.মী তিনিই প্রথম। তবে নাজকে তার জন্য অনেক গঞ্জ.না সহ্য করতে হয়েছে। এমনকি কম বয়সিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ায় বয়স নিয়েও কু.মন্তব্য শুনতে হয়েছে তাকে।
মোট ১৫ দেশের প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন। নাজ জানিয়েছেন, একজন রূপা.ন্তর.কা.মীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে জেনে অনেকে প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্র.ত্যাহার করে নেন। তবে এসব অপমান গায়ে মাখেননি নাজ। তিনি তার সেরাটা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং সেরার খেতাবটি ছিনিয়ে নিয়েছেন।
নাজের সঙ্গে শেষ পাঁচে ছিলেন— কলম্বিয়া, মেক্সিকো, ব্রাজিল ও স্পেনের সুন্দরীরা। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হন কলম্বিয়ার প্রতিযোগী ভ্যালেন্টিনা। তৃতীয় স্থানে ছিলেন মেক্সিকোর অলিভিয়া। দুজনেই নাজের বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেছেন।
নাজ অবশ্য এর আগেও আরও বহু আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছেন। ২০২০ সালে মিস ইউনিভার্স ডাইভার্সিটির খেতাব পেয়েছেন। ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পর পর তিনবার মিস ওয়ার্ল্ড ডাইভার্সিটির মুকুট উঠেছে তার মাথায়।
এ ছাড়া মিস রিপাবলিক ইন্টারন্যাশনাল সৌন্দর্য রাষ্ট্রদূত হয়েছেন। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সৌন্দর্য দূত হিসাবে নির্বাচিত করা হয় তাকে।
তবে আন্তর্জাতিক খেতাব পেলেও ব্যক্তিগত জীবনে এখনও বেশ অসহায় নাজ। স্থায়ী উপার্জনের রাস্তা নেই। ফ্যাশন ডিজাইনের টপার, আইএমটি থেকে এমবিএ করা নাজ বহু চেষ্টা করেও একটি চাকরি পাননি।
নাজ জানিয়েছেন, এর কারণ তিনি একজন রূ.পান্ত.রকা.মী, আর সমাজ এখনও একজন রূ.পান্তরকা.মীকে আলাদা চোখেই দেখে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.