Beanibazarview24.com
আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের বাংলাদেশি চার সদস্যকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের একটি দল। এই চক্রটি চাকরি ভিসায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
আটকরা হলেন, মো. হাবিবুর রহমান, মামুনুর রশিদ, মো. জামাল হোসেন ও নাহিদুল ইসলাম পলাশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৮টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন দূতাবাস, ব্যাংক, এজেন্সির ১৯টি সিলমোহর ও কম্বোডিয়ার ১০টি জাল ভিসা জব্দ করা হয়েছে।
শেখ ওমর ফারুক বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদেশে যেতে ইচ্ছুকদের ইউরোপের বিভিন্ন দেশে (মাল্টা, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, মিশর মালদ্বীপ, কম্বোডিয়া) পাঠানোর কথা বলে টাকা নেয়। পরে তারা অনুমোদনহীন এজেন্সির মাধ্যমে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অনুমোদন ছাড়া প্রথমে ভিজিট ভিসায় ভারতে পাঠাত।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ভারতে নেয়ার পর ভুয়া ভিসা দিয়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের পরিবারের কাছ থেকে নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নিতো। টাকা না দিলে বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা আদায় শেষে জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হতো। এই সংঘবদ্ধচক্রে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের দালাল চক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
প্রতারণার শিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার হাতুড়াবাড়ি গ্রামের আহসান হাবীব ঢাকাটাইমসকে বলেন, মাল্টা পাঠানোর কথা বলে তার সাথে চক্রটির ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয়। পরে তার কাছ থেকে প্রথমে আট লাখ টাকা নেয়। এরপর ভারতের হায়দারাবাদে নিয়ে নির্যাতন করে আরও চার লাখ টাকা আদায় করে জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে তিনি স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসেন।
শেখ ওমর ফারুক বলেন, আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, তারা ছয়-সাত বছর ধরে এই কাজ করে আসছে। তবে আরো তথ্য পেয়েছি তারা প্রায় একশ লোককে এভাবে পাচার করেছে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত সেসব ভিকটিমদের সন্ধান পাইনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রথমে ভিকটিমদের বিআরটিসি বাসে করে বেনাপোল নেয়া হয়। সেখান থেকে তাদেরকে বাস করে নেয়া হয় কলকতায়। পরে ট্রেনে করে হায়দারাবাদ থেকে টলারে করে নেয়া হয় শ্রীলঙ্কায়।
সেখানে জঙ্গলে ফেলে নির্যাতন করে টাকা আদায় করা হতো। ভিকটিমরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে। পরে তাদের পরিবার থেকে টাকা পাঠালে দেশে ফিরে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হন।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের বিশেষ পুলিশ সুপার সামসুন নাহার, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জাকির হোসেন ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক উপস্থিত ছিলেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.