Beanibazarview24.com






সিলেটের জাফলংয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন স্বামী। এ সময় একটি রিসোর্টে উঠেছিলেন। কিন্তু একটি রিসোর্টের পাশে পাথর চাপা অবস্থায় তার ম.রদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাতে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পৃথক দুটি অভিযানে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি খুশনাহার (২১) এবং নাদিম আহমেদ নাঈমকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে খুশনাহার ওই পর্যটক ইমরানের স্ত্রী এবং নাদিম খুশনাহারের পরকীয়া প্রেমিকের বন্ধু বা সহযোগী। তিনি নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার বেলদি গাজীরটেক গ্রামের মো. জিন্নাতের ছেলে। আর খুশনাহার কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার ছেত্রা গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল জাফলংয়ে একটি রিসোর্টের পাশ থেকে তার ম.রদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার গুরই গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে আলী ইমরান (৩২)।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, ইমরানের স্ত্রী খুশনাহারের সঙ্গে মাহিদুল হাসান মাহিন (২৪) নামে এক তরুণের দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছরের অবৈধ প্রেম চলছে। মাহিন ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে জিএম পদে কর্মরত। ইমরানের সঙ্গে গত পাচঁ বছর আগে খুশনাহারের বিয়ে হয়। মাহিনের সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর পর থেকেই খুশনাহার এবং তার প্রেমিক মাহিন বিভিন্ন সময় ইমরানকে হত্যা করার চেষ্টা করে আসছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় হত্যা করার উদ্দেশ্যে খুশনাহার বেড়ানোর কথা বলে স্বামীকে নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল রাতে ভৈরব থেকে ট্রেনযোগে সিলেটের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন। অন্যদিকে একই দিনে প্রেমিক মাহিন ও মাহিনের অফিসে কর্মরত গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাদিম এবং রাকিব নামের এক সহযোগী ঢাকা কমলাপুর থেকে ট্রেনযোগে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পরে গত ১৬ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে জাফলং বল্লাঘাটস্থ ‘রিভারভিউ রিসোর্ট অ্যান্ড আবাসিক হোটেল’র ১০১ নং কক্ষে স্ত্রীকে নিয়ে উঠেন ইমরান। এ সময় অন্য তিন আসামি জাফলং বল্লাঘাটের হোটেল শাহ আমিনে অবস্থান করেন।
এদিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে খুশনাহার কৌশলে ‘রিভারভিউ রিসোর্ট অ্যান্ড আবাসিক হোটেল’র তাদের কক্ষের সামনের সিসিটিভি ক্যামেরা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন। পরবর্তীতে মাথা ব্যথার ঔষধের কথা বলে রাত ১০টার দিকে ইমরানকে তার স্ত্রী খুশনাহার ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর ইমরান গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলে স্ত্রী খুশনাহার রাত ১২টার দিকে তার প্রেমিক মাহিন ও সহযোগীদের হোটেল কক্ষে নিয়ে আসেন। রাত ২টার দিকে ইমরানের গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুশনাহার ও তার প্রেমিক মাহিন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। এ সময় আসামি নাদিম পর্যটক ইমরানের পা চেপে ধরেন এবং রাকিব নামের একজন রুমের বাহিরে পাহারা দেন। ইমরানের মৃত্যু নিশ্চিত হলে রাত ৩টার দিকে সকলে ইমরানের মরদেহ লুকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে হোটেলের পাশে পাথরচাপা দিয়ে রাখেন। পরে রাত সাড়ে ৪টার দিকে তারা হোটেল থেকে বের হয়ে সিএনজিচালিতে অটোরিকশাযোগে সিলেট ছেড়ে পালিয়ে যান।
পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, স্ত্রীকে নিয়ে সিলেটের জাফলংয়ে ঘুরতে এসে খু.ন হন ইমরান৷ প্রেমিক মাহিন ও তার দুই বন্ধুকে নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান স্ত্রী খুশনাহার। পরে এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে প্রেম ঘটিত কারণেই খু.ন হন ইমরান।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.