Beanibazarview24.com
১৩ দিন ধরে লাপাত্তা সিনহা নিহ’তের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কক্সবাজারের শামলাপুর মসজিদের মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ আমীন। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মসজিদের ইমামের অভিযোগ গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় হু’মকি দেয়া হয়েছে তাকেও। পুলিশ ভোররাতে বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে এমন অভিযোগ করেছেন ঘটনার আরেক সাক্ষী এক সিএনজি চালক। (খবর :সময় টিভি)
শামলাপুর চেকপোস্টের পাশেই বাইতুন নুর জামে মসজিদ। দুই হাত উপরে তোলা অবস্থায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকৎ অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদকে গুলি করেছেন গণমাধ্যমে এমনটি দেখার কথা জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাইতুন নুর জামে মসজিদের ইমাম। তার অভিযোগ এরপর থেকেই কে বা কারা তাকে দেখে নেয়ার হু’মকি দিচ্ছে।
ওই মসজিদের খতিব ও ইমাম হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকজন সিভিল ড্রেসে আর কয়েকজন পুলিশ পোশাক পরেই এসেছিলেন। এসে বললেন, আপনি মসজিদের ইমাম সাহেব এটা নিয়ে আপনার এতো কিছু করার দরকার নাই। আপনি আর এমন কিছু করবেন না। এমন করলে আপনাকেও ‘ইয়ে’ করা হবে। কি করা হবে এটা পরিপূর্ণভাবে তারা বলেনি বলেও জানান তিনি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী শামলাপুর মসজিদের রোহিঙ্গা মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ আমীন ঘটনার একদিন পর থেকে নিখোঁজ বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী। তার অভিযোগ, স্বামীর খোঁজে এখন পর্যন্ত চারবার বাড়িতে এসেছে পুলিশ।
আমীনের স্ত্রী জানান, কোরবানির ঈদের পরদিন পিঠা খেয়ে বের হয়েছিলেন তার স্বামী। এখনও ফিরে আসেনি। কোথায় গিয়েছে তাও জানেন না তিনি। এরই মধ্যে পুলিশ এসে ভিডিও করে নিয়ে গিয়েছে। আর হু’মকি দিয়ে গেছে যে তার স্বামীকে না পেলে সমস্যা হবে।
পুলিশের বিরুদ্ধে ভোর রাতে এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে গালমন্দ করার অভিযোগ করেছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালক কালাম। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথাও জানান তিনি।
কালাম জানান, সেদিন পুলিশ এসে তার কাছে জানতে চেয়েছিলো সাক্ষী দেয়ার ব্যাপারে। ‘যেটা দেখছি সেটাই সাক্ষী দিয়েছি’ বলে জানিয়ে দেন পুলিশকে। এরপর পুলিশ তাকে মারতে চেয়েছিল, ঘরের দুইটা দরজা ভেঙে দিয়ে গেছে।
দু’পাশে বাজার ও লোকালয়ের মধ্যে হওয়ায় কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের তেরোটি চেকপোস্টের মধ্যে শামলাপুর চেকপোস্ট বেশ আলাদা। অভিযোগকারীরা বলছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলেন এসআই অরুন কুমার চাকমা। অবশ্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টায় ফোনে কল করে তাকে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের নতুন ইনচার্জকেও।
গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহ’ত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ৫ আগস্ট টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ ৯ জনকে আসামি করে সিনহার বোন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হ’ত্যা মা’মলা দা’য়ের করেন। মা’মলায় অভিযুক্ত ৯ পুলিশ সদস্যকেই বরখাস্ত করা হয়। মা’মলাটি ত’দন্ত করছে কক্সবাজার র্যাব-১৫। এই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মা’মলায় সিনহার সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ ৯ আগস্ট ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত ১০ আগস্ট জামিনে কা’রাগার থেকে মুক্তি পান।
–ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সূত্র : সময় টিভি
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.