Beanibazarview24.com
ভারতের সাম্প্রতিক যতগুলো আন্দোলন বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে তার বেশিরভাগই শুরু হয় জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দ্বারা। দেশটিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বি’রোধিতা প্রথম এখান থেকেই শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারত বর্ষে। এমনকি আশপাশের দেশগুলোতেও এর প্রভাব দেখা দেয়। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সি’দ্ধান্তের বিরু’দ্ধেও আ’ন্দোলন হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সরকারের বিত’র্কিত সি’দ্ধান্তের বিরুদ্ধে খোলা তরবারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এবার সে দেশের শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থান দখল করে নিয়েছে। বঞ্চিতের অধিকার আদায়ে রাজপথে নয় শুধু, মেধার স্বাক্ষর রাখতে শিক্ষা, গবেষণা ও আবিষ্কারেও তারা সবার আগে।
ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা তালিকায় ৯০ শতাংশ স্কোর করেছে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ৮৩ শতাংশ স্কোর করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের রাজীব গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়। ৮২ ও ৭৮ শতাংশ স্কোর করে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি, এমফিল অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, তাদের কাজ বা গবেষণার মানসহ শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন সূচক বিবেচনা করা হয়েছে তালিকা প্রস্তুতির সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা, অন্য রাজ্য এবং অন্য দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যার শতাংশও এই স্কোরিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, শিক্ষকের শূন্যপদ, ভিজিটিং অধ্যাপক প্রভৃতিও বিচার করা হয়। পাশাপাশি, ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ন্যাশনাল ইলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট বা নেটের মতো পরীক্ষাগুলোতে কতজন সুযোগ পেয়েছেন, তাও বিবেচনায় আনা হয়েছে।
পরিচালন দক্ষতা, অর্থের সঠিক ব্যবহার এবং কিছু কো-কারিকুলার ও এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিতেও অনেকখানি বেশি স্কোর করেছে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এইআইআরএফ, এনএএসি প্রভৃতি দেশি ও আন্তর্জাতিক তালিকায়ও ভালো জায়গায় আছে জামিয়া।
জামিয়ার ভাইস চ্যান্সেলর নাজমা আখতার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সাফল্যে তারা খুশি। আসছে বছরে তারা এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চান।
ভারতের ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন (ইউজিসি) ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে এমওইউ সই করেছিল। এই এমওইউ সইয়ের পর নির্ধারিত পাঠ্যক্রম ও পড়ানোর পঠন-পাঠনের ভিত্তিতেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্কোর তৈরি করা হয়। জামিয়াই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়, যারা ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো এই এমওইউ সই করে।
বিভিন্ন সময় আন্দোলন করতে গিয়ে চ’ড়া মূল্য দিতে হয়েছে এখানকার শিক্ষার্থীদের। তকমা লেগেছিলো দেশদ্রোহের। পুলিশের হাতে অমা’নবিক নি’র্যাতনের শি’কার হন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পেটা’নোর ভি’ডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) শিক্ষার্থীরাও সরকারের রোষা’নলে পড়েছিলেন। বিভিন্ন ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দো’লন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম শিক্ষার্থীরা। বিত’র্ক তু’ঙ্গে ওঠে যখন আ’রএসএসের শাখা সংগঠন অখিল ভারতীয় পরিষদের শিক্ষার্থীরা জেএনইউয়ের ছাত্রাবাসে হা’মলা চালান।
শ্লী’লতাহানি ও মা’রধর থেকে রক্ষা পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরাও। হা’মলায় গুরু’তর আহ’ত হন জেএনইউর নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধি বাম নেত্রী ঐশী ঘোষ। তালিকার ১১ নম্বরেই আছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তারপরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৬৯ নম্বরে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.