Beanibazarview24.com
সিলেটের ওসমানীনগরে এক গৃহবধুর পিতার বাড়ি থেকে পাঠানো ইফতারীতে স্বামীর জন্য আলাদা সাজানো থাল না থাকার জের ধরে সৃষ্ট পারিবারিক বিরোধ ও ঈদুল ফিতরে নতুন কাপড় না দেয়ায় স্বামী ও শাশুড়ীর নি’র্যা’তনে ৭ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃ’ত্যুর অ’ভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গৃহবুধুর স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ী মিনারা বেগমকে আ’ট’ক করেছে পু’লিশ। মা’রা যাওয়া শরিফা বেগম (২০) নবীগঞ্জ উপজে’লার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মে’য়ে।
আ’ট’ককৃত স্বামী ও শাশুড়ির দাবি- পরিবারের সবার অজান্তে শরিফা আত্মহ’ত্যা করেছে। যদিও শনিবার দুপুরে শরিফার স্বামীর বাড়ির নিজ ঘরের বিছানা থেকে তার লা’শ উ’দ্ধার করে পু’লিশ। নি’হতের শরীরে একাধিক আ’ঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ও পু’লিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে উপজে’লার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃ’ত ইছন আলীর ছে’লে আরশ আলীর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় নবীগঞ্জ উপজে’লার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মে’য়ে শরিফার। বিয়ের কিছু দিন পর যৌতুকসহ নানা অযুহাতে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ী মিনারা বেগম নি’র্যা’তন শুরু করেন গৃহবধূ শরিফার ওপর।
নিজে অন্তস্বত্তা থাকায় তাদের নি’র্যা’তন সহ্য করে গর্ভের সন্তানের আলোর মুখ দেখাতে তাদের সকল নি’র্যা’তন সহ্য করেই স্বামীর বাড়িতে পড়ে থাকেন শরিফা। চলতি রমজান মাসে তার পিত্রালয় থেকে ইফতারী দিতে দেরি করায় এবং ইফতারীর সাথে স্বামীর জন্য আলাদাভাবে সাজানো থাল না দেয়ায় অন্তস্বত্তা শরিফার ওপর নি’র্যা’তনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
শুক্রবার(৭ মে) সন্ধ্যায় শরিফার পিত্রালয় থেকে স্বামীর বাড়ির লোকজনের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না আসাকে কেন্দ্র করে শাশুড়ীর সাথে কথা কা’টাকাটির জের ধরে আরশ আলী ও মিনারা বেগম মিলে মা’রপিট করেন শরিফাকে। বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শরিফা তার ভাইকে অবগত করে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন। এমতাবস্থায় সেহরির সময়ে শরিফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার ভাই-বোনেরা।
আজ শনিবার শরিফার বড় বোন শিপন আক্তার শরিফার স্বামী শাশুড়ীর জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আরশ আলীর বাড়ির (বোনের বাড়ী)উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেই পথিমধ্যে শরিফার ভাশুরের মাধ্যমে খবর পান তার বোন খুবই অ’সুস্থ। এর কিছুক্ষনের মধ্যে আবার খবর আসে শরিফা আত্মহ’ত্যা করে মৃ’ত্যুবরণ করছে।
খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে থা’না পু’লিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শরিফার লা’শ উ’দ্ধার করে ময়না ত’দন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের ম’র্গে প্রেরণ করে।
নি’হতের বড় বোন শিপন আক্তার ও ভাই মিনার হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমা’র বোনের ওপর তার স্বামী ও শাশুড়ী যৌতুকসহ নানা অযুহাতে নি’র্যা’তন করতো। তাদের নি’র্যা’তনের কারনে আম’রা তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও গর্বের সন্তানের কথা চিন্তা করে আমা’র বোন সব কিছু নিরবে সহ্য করে যেত।
আম’রা গরিব মানুষ লকডাউনের কারণে অভাব অনটনে চলতি রমজান মাসে ইফতারী পাঠাতে দেরি ও আরশ আলীর জন্য আলাদা করে সাজানো থাল না দেয়ায় তার স্বামী ও শাশুড়ী শরিফাকে নানা ভাবে নি’র্যা’তন করে। সর্বশেষ নতুন কাপড় পাঠাতে দেরি করায় তারা আমা’র বোনকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়ে তার গর্ভের সন্তানটিকেও আলোর মুখ দেখতে দিলো না। তারা তাদের বোন হ’ত্যার বিচার দাবি করেন।
ওসমানীগর থা’নার ভা’রপ্রাপ্ত কর্মক’র্তা(ওসি) শ্যামল বনিক বলেন, খবর পেয়ে লা’শ উ’দ্ধার করে ম’র্গে প্রেরণ করা হয়েছে। লা’শের গায়ে একাধিক আ’ঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নি’হতের স্বামী ও শাশুড়ীকে আ’ট’ক করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মা’মলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.