Beanibazarview24.com






প্রবাসে বসবাসকারী সিলেটীদের কারণে স্থানীয় শুঁটকির পরিচিতি এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সিলেটের শুঁটকি এখন ইংল্যান্ড আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। সিলেটেও শুঁটকি উৎপাদনে সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।




বিদেশে শুঁটকির কদর বাড়ায় সিলেটেও শুঁটকি উৎপাদন বেড়েছে। সিলেটের মাহতাবপুরের শুঁটকির পরিচিতি এখন বিশ্বময়। এখানে উৎপাদিত শুঁটকি রপ্তানি হচ্ছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এই শুঁটকি উৎপাদনের কল্যাণে সিলেটের একটি গ্রামের হাজার খানেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ পেশায়। তাই মাহতাবপুর গ্রামটি এখন শুঁটকি গ্রাম নামে পরিচিতি লাভ করেছে। আর সেখানে বছরে কোটি টাকার শুঁটকি উৎপাদিত হচ্ছে।




সিলেট মহানগরী থেকে মাহতাবপুরের দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। এ গ্রামের প্রায় ৫ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে শুঁটকি উৎপাদন কেন্দ্র। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কলাগোয়া বিশ্বনাথ উপজেলায় গ্রামটির অবস্থান। সড়কের উত্তর পাশে মাহতাবপুর শুঁটকি উৎপাদন কারখানা; আর দক্ষিণ পাশে অবস্থিত একটি বড় মৎস্য আড়ত।




এ আড়তে প্রতিদিন সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর থেকে বিপুল পরিমাণ মাছ আসে। এ মাছের বাজারকে কেন্দ্র করেই মূলত গড়ে উঠেছে মাহতাবপুর শুঁটকির আড়ত।
সেখানে চাতাল করে বা উঁচু মাটির ডিবিতে শুঁটকি শুকানো হয়। এই শুঁটকি শুকিয়ে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সেখানে সুনামগঞ্জের গজার মাছের শুঁটকির কেজি ৭০০ থেকে ২০০০ টাকায় বিক্রি হয়।
সেই গ্রামের মানুষ সারা বছর ধরে শুঁটকি উৎপাদন করেন। তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি হলো মাছ শুকানোর ভরা মৌসুম। সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর থেকে মাছ সংগ্রহ করা হয়। সেখানে ১৮ থেকে ২০ প্রজাতির শুঁটকি উৎপাদন হয়। এই গ্রাম থেকে বছরে প্রায় ২০০ টন শুঁটকি উৎপাদিত হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।
শুঁটকির চাহিদা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দিন দিন বাড়ছে। পাইকারের কাছে প্রতি কেজি পুঁটি মাছের শুঁটকি ৬০০-৭০০ এবং টেংরা মাছের শুঁটকি ৭০০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাইকাররা এই দুই জাতের শুঁটকি বেশি ক্রয় করেন। তারা পুঁটির শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করে ‘সিঁদল’ শুঁটকি তৈরি করেন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের ‘সিঁদল’ শুঁটকির কদরই আলাদা। এ সিঁদল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি দেশীয় বাজারেও বিক্রি হয়। তাদের উৎপাদিত শুঁটকি যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিলেটের কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করেন। প্রবাসীদের কাছে শুঁটকির কদরই আলাদা। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে সিঁদল শুঁটকির চাহিদা ব্যাপক। লন্ডন থেকে অনেকের স্বজন দেশে এলে তারা মূলত সঙ্গে সিঁদল শুঁটকি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। লন্ডন বা আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে থাকা সিলেটীরা সে দেশে যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রায় ১০-১৫ কেজি শুঁটকি নিয়ে যান।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.