Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

রায়হানের মায়ের অনশন ভাঙালেন মেয়র আরিফ


আমরণ অনশনে বসা রায়হান আহমদের মায়ের অনশন ভাঙিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশেনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। রোববার সন্ধ্যার আগে রায়হানের মা সালমা বেগমকে শরবত খাইয়ে অনশন ভাঙান মেয়র।

এসময় মেয়র আরিফ রায়হানের মাকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, রায়হান হ’ত্যাকারীদের গ্রে’প্তার দাবিতে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবো। তারপরও অভিযুক্তরা গ্রে’প্তার না হলে সিলেটবাসীকে সাথে নিয়ে আমিও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।

মেয়রের আশ্বাসে অনশন থেকে উঠলেও এসময় রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, আমি আর আশ্বাস শুনতে চাই না। এখন উদ্যোগ দেখতে চাই। অভিযুক্তদের ‘গ্রে’প্তার চাই।

এরাআগে রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে রায়হানের মা সালমা বেগমসহ তার পরিবারের সদস্যরা অনশন শুরু করেন। অনশনে সংহিত জানিয়ে অনেকেই অংশ নেন। বিকেলে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সড়ক অবরোধ করে দেয় বিক্ষো’ব্ধ জনতা।

রায়হান হ’ত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াসহ অন্য অভিযুক্তরা গ্রে’প্তার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলেও সেসময় জানিয়েছিলেন সালমা বেগম।

সকাল ১১ টা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনের রাস্তায় বসে পড়েন সালমা বেগম। এসময় আশপাশের বাসিন্দারাও তাদের সাথে সংহতি জানয়ে অনশনে অংশ নেন। অনশনকারীদের হাতে রয়েছে হ’ত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রে’প্তার ও শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন ফেস্টুন। এছাড়া মাথায় সাদা কাপড় পরে অনশনে অংশ নিয়েছেন রায়হানের পরিবারের সদস্যরা।

গত ১১ অক্টোবর রায়হানকে হ’ত্যার পর থেকেই পরিবার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে টানা বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হচ্ছে। রায়হান হ’ত্যাকারীদের গ্রে’প্তারে এরআগে সংবাদ সম্মেলনকরে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন মা সালমা বেগম। তাতেও কাজ না হওয়ায় আজ থেকে অনশন শুরু করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত গত ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে নগরীর নেহারিপাড়া মৃ’ত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদকে গুরুতর আহ’ত অবস্থায় ওসমানী মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী হ’ত্যা ও হেফাজতে মৃ’ত্যু নিবারণ আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্র’ত্যাহার করা হয়।

মামলার ত’দন্তকারী সংস্থা পিবিআই ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশিদকে গ্রে’ফতার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর (রোববার) ভোরে রায়হান আহমদ (৩৩) নামে সিলেট নগরের আখালিয়ার এক যুবক নিহত হন। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে প্রচার করা হয়, ছিন’তাইয়ের দায়ে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় গণপি’টুনিতে নিহ’ত হন রায়হান। তবে বিকেলে পরিবারের বক্তব্য পাওয়ার পর ঘটনা মোড় নিতে থাকে অন্যদিনে। পরিবার দাবি করে, সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নি’র্যাতনে প্রা’ণ হারান রায়হান।

ওই রাতেই পুলিশকে অভিযুক্ত করে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃ’ত্যু আইনে অজ্ঞা’ত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। পরদিন রায়হানের মৃ’ত্যুর ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট মহানগর পুলিশ।

এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নি’র্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটুচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।

এ মামলায় ২০ অক্টোবর পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও ২৪ অক্টোবর কনস্টেবল হারুনুর রশীদকে গ্রে’প্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই।

এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনমূখড় হয়ে পরে সিলেট। সিলেট মহানগর পুলিশকে নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এই সমালোচনার মুখে বুধবার (২২ অক্টোবর) মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা। আর এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূইয়া ১২ অক্টোবর থেকে পলাতক রয়েছেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিনের মৃ’ত্যু ও নি’র্যাতনের প্রাথমিক সত্যতাও পায় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি জানতে পারে রোববার ভোর ৩টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সুস্থ অবস্থায় রায়হান আহমদকে আনা হয় বন্দরবাজার ফাঁড়িতে। সেখানে ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বেই তার ওপর নি’র্যাতন চালানো হয়। নি’র্যাতনে গুরু’তর অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রায়হানকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ৭টার দিকে মারা যান তিনি।

রায়হান নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়া এলাকার মৃ’ত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারি হিসেবে কাজ করতেন।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.