Beanibazarview24.com
সিলেটে মা-ছেলেকে খুনের দায়ে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূরে আলম ভূঁইয়া এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কুমিল্লার তিতাস এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ খান ও তার কথিত স্ত্রী তানিয়া বেগম। আদালতের বিচারক রায় ঘোষণার সময় আদালতে দুই অভিযুক্ত আসামি উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের বিষয়টি নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো: জোবায়ের বখ্ত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল সিলেট নগরের মিরাবাজার খারপাড়া এলাকায় একটি বাসা থেকে রোকেয়া বেগম (৪০) ও ছেলে রবিউল ইসলাম (১৬) নামের মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় রোকেয়া বেগমের পাঁচ বছর বয়সী শিশু রাইসা ইসলামকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো: জাকির হোসেন ওই দিন রাতে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযান চালিয়ে তানিয়া ও ইউসুফ খানকে গ্রেফতার করে। রোকেয়ার বাসায় গৃহকর্মী ছিলেন তানিয়া। পরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তানিয়া চলে গিয়েছিলেন। তিনি স্বামী ইউসুফ খানের সাথে নগরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পূর্ববিরোধের জেরেই ইউসুফ ও তানিয়া মিলে চায়ের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা-ছেলেকে খাইয়ে কুপিয়ে খুন করে বিছানায় ফেলে যান। এ সময় রোকেয়ার পাঁচ বছর বয়সী শিশু রাইসা ইসলামকেও শ্বাস রোধ করে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
একপর্যায়ে ওই শিশু অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যান তারা। এরপর পুলিশ ওই বাসা থেকে মা-ছেলের লাশ এবং ওই শিশুকে জীবিত উদ্ধার করে।
পিবিআই সিলেটের পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন ২০১৯ সালের ১৯ মে ইউসুফ ও তানিয়াকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে আদালতের বিচারক ২০২০ সালে ৯ জানুয়ারি চার্জ গঠন করে বিচারকাজ শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে অবশেষে বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দেন।
সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি মো: জোবায়ের বখ্ত নয়া দিগন্তকে বলেন, মা-ছেলেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে রাইসা ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিমূলক সাক্ষ্য দিয়েছে। এর আগে গ্রেফতার দু’জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে দুই জবানবন্দিতেই মিল পেয়েছেন আদালতের বিচারক। হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পাশাপাশি ইউসুফকে শিশু রাইসাকে হত্যাচেষ্টার দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ও দিয়েছেন আদালতের বিচারক।
তিনি আরো বলেন, মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ রায়ে মামলার বাদি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.