Beanibazarview24.com
নিউইয়র্ক নগর এখন গৃহহীনদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে নগরের গৃহহীনদের হোটেল নিবাস দেওয়া হয়েছিল। জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নগরের খালি থাকা তারকা হোটেলগুলোতে এক বছরের বেশি সময় আবাসনের সুযোগ ছিল গৃহহীনদের। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরের আগের অবস্থা ফিরে আসছে। হোটেল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গৃহহীনদের। কিন্তু নিউইয়র্কের পাঁচটি বরোতে ছড়িয়ে থাকা এসব আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছে না গৃহহীন লোকজন। তারা আবার সড়কের পাশে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এখন গ্রীষ্মের আবহাওয়ায় ম্যানহাটনের গগনচুম্বী অট্টালিকার পাশেই দেখা যায় কাগজের বাক্স দিয়ে তাঁবু খাটানো। কেউ প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে সামান্য আড়াল করে নিজেদের আস্তানা গড়ে নিচ্ছে যত্রতত্র। অনেকেই বলছেন, নিউইয়র্কের গৃহহীনতার সমস্যা গত শতাব্দীর ৭০ দশককে এর মধ্যেই অতিক্রম করেছে। করোনা মহামারির কারণে আগস্ট মাস পর্যন্ত বাড়ি থেকে লোকজনকে উচ্ছেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কয়েক দফা এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগস্টের পর শুরু হবে ভাড়া দিতে না পারা লোকজনকে উচ্ছেদ অভিযান। এর ফলে নিউইয়র্ক নগরে গৃহহীন লোকজন অনেক বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কের গৃহহীনদের স্বার্থে কাজ করে এমন অনেক সংগঠন রয়েছে। আইনগত সহায়তা দেওয়ার সংগঠন লিগ্যাল এইডের অ্যাটর্নি হোজে গোল্ডফেইন জানিয়েছেন, বড় বড় হোটেল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো গৃহহীনরা আবার সড়ক পথেই ফিরে আসছে। আশ্রয়কেন্দ্র তাদের ধরে রাখা যাচ্ছে না।
এ আইনজীবী জানিয়েছেন, হোটেল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো গৃহহীনদের কোনো সংখ্যাও তাঁদের জানা নেই। নগরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে তা কখনো সরবরাহ করা হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে শুধু নিউইয়র্কেই ৮০ হাজারের বেশি গৃহহীন লোকজন রয়েছে বলে বলা হয়ে থাকে। নগরের খোলা আকাশের নিচে, সড়ক পাশে, ট্রেন স্টেশনে প্রতি রাতে চার হাজার গৃহহীন নারী-পুরুষ ঘুমায় বলে নগরের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে।
নিউইয়র্ক নগরের গৃহহীনদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন কোরাইন লো। তিনি বলেন, নগরের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না। আশ্রয়কেন্দ্র গৃহহীনদের আকৃষ্ট করতে পারলে পেন স্টেশনে বা সড়কপথে বেপরোয়া রাত যাপনের জন্য লোকজনকে দেখা যেত না বলে তিনি মনে করেন।
কোরাইন লো বলেন, গৃহহীনদের চাহিদাকে প্রাধান্য না দিয়ে শুধু আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের জন্য একটা বিছানা বরাদ্দ করলেই নিউইয়র্কের সড়ক পাশ আর মুক্ত এলাকা থেকে লোকজনের স্থানান্তর ঘটবে না। গৃহহীনরা ঠিকই আবার সড়ক পাশ বা বাস স্টপে ফিরে আসবে।
নিউইয়র্ক নগর গৃহহীনদের সামাল দিতে দীর্ঘদিন থেকে সংগ্রাম করছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এ সংগ্রাম আরও নাজুক হয়ে উঠেছে। নাগরিক সংগঠনগুলো মনে করে, নিউইয়র্কের মতো নগর দ্রুততার সঙ্গে গৃহহীনদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনের সাহায্যে যেন এগিয়ে আসে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.