Beanibazarview24.com
ঘরের কোণায় কোণায় নিজেকে লুকিয়ে রাখে টিকটিকি। আওয়াজ হলেই দৌড়ে পালায়। কেউ ধরতে চাইলে নিজের লেজটিই খসিয়ে পালায়। এই নিরীহ টিকটিকি এককালে বিষধর ছিল। ছিল পৃথিবীর বড় প্রাণীদের একটি। সেই বিষধর টিকটিকিদের নাম ছিল ‘মেগালানিয়া’।
অপ্রচলিত ভেরানাস প্রিসকাস মহাজাতির অন্তর্ভূক্ত ছিল টিকটিকি মেগালানিয়া। গোয়ান্না প্রজাতির এই টিকটিকি পৃথিবীর বৃহত্তম স্থলজ টিকটিকি। যা সর্বোচ্চ ৭ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতো। এমনকি তারা বিষধর মেরুদণ্ডী প্রাণী বলেও পরিচিত ছিল। তবে বর্তমান সময়ের টিকটিকিদের দেখলে মনেই হবে না যে, এককালে এ প্রজাতির পূর্বপুরুষরা ছিল বিষধর।
প্রাগৈতিহাসিক প্লেইস্টোসিন যুগে অস্ট্রেলিয়ায় বাস করত এসব টিকটিকি। পেটের তলায় থলিতে এরা শাবক বহন করত। শাবকবাহী এই প্রাণীটি ছিল স্তন্যপায়ী।
বিলুপ্ত মেগালানিয়ার প্রমাণ হিসেবে মিলেছে তাদের হাড়। যদিও বিশেষজ্ঞরা এখনও পুরো শক্ত কঙ্কাল খুঁজে পাননি। প্রায় ৮০ শতাংশ মেগালানিয়া কঙ্কাল টুকরা থেকে এদের নিয়ে গবেষণা করেছে বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই যুগে উচ্চতায় রেকর্ড ভঙ্গকারী অস্ট্রেলিয়ার প্রাগৈতিহাসিক এ সরীসৃপেরা শিকারে-আতঙ্ক সৃষ্টিতে ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
দৈত্যাকার বিষধর টিকটিকি মেগালানিয়া বিলুপ্ত হয়ে গেছে ৩০ হাজার বছর আগে। তবে এখনকার ভ.য়ঙ্কর কমোডো ড্রাগনরা তাদের উত্তরসূরি। কমোডো ড্রাগনদের সঙ্গে তুলনায় আগে অনুমান করা হতো যে, এটি অন্তত সাড়ে পাঁচ মিটার দীর্ঘ ছিল।
বিখ্যাত জীবাশ্ম বিজ্ঞানী স্যার রিচার্ড ওয়েন মেগালানিয়ার জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণায় জানিয়েছেন, এরা ৭ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের হতো, যা খাদ্য শৃঙ্খলের ওপরে বিপদ ডেকে আনত।
মেগালানিয়াকে একটি সত্যিকারের বিকট জীব বলেও বর্ণনা করেছেন রিচার্ড ওয়েন।
তিনি বলেন,ভালোভাবে প্রাচীন অস্ট্রেলিয়ার বাস্তুতন্ত্র বোঝা গেছে মেগালানিয়ার জীবাশ্ম পাওয়ার মাধ্যমে। বিলুপ্ত শাবকবাহী এই প্রাণীটি সিংহসহ স্তন্যপায়ী শিকারি প্রাণীদের চেয়েও ভয়ংকর ছিল এরা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.