Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ফ্রান্সে অনিয়মিত থেকে বৈধ হওয়ার সুযোগ এবং প্রতিবন্ধকতা সমূহ


২০১২ সালের ২৮শে নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ক্ষমতায় জারি হওয়া ‘সার্কুলার ভা’র্লসের’ আওতায় একজন অ’ভিবাসী ফ্রান্সে বৈধ বা অ’বৈধভাবে আসার পরে কোন কারণে অনিয়মিত হয়ে গেলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করে বৈধ অ’ভিবাসী হওয়ার একটি সুযোগ থাকে । ইউরোপ পাড়ি দেয়ার আগে অনেকে মনে করেন এটির সাহায্যে খুব সহ’জে বৈধতা পাওয়া যায়। সার্কুলার ভালস কি এবং কারা এই আইনের আওতায় বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টসের এই প্রতিবেদন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলোর মতো ফ্রান্সেও ছাত্র হিসেবে এসে স্থায়ী হিসেবে থাকা, পরিবারের মাধ্যমে আসা অথবা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর হলে বৈধভাবে থাকার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অ’ভিবাসন নিয়ে সংকটে থাকা ইউরোপের অন্য দেশগুলোর মতো ফ্রান্সেও এখন অ’বৈধ বা অনিয়মিত অ’ভিবাসন একটি আলোচনার বিষয়।

একজন অ’ভিবাসী যদি কোন কারণে ফ্রান্সে কাগজহীন বা অনিয়মিত হয়ে পড়ে তার হাতে বৈধ হওয়ার কি আর কোন সুযোগ থাকে? ২০১২ সালের আগ পর্যন্ত দু একটি ব্যতিক্রম ছাড়া ফ্রান্সে এরকম কোন সুযোগ ছিল না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওঁলদের সময় প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বিশেষ ক্ষমতাবলে জারি করা একটি সার্কুলার অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ফ্রান্সে থাকা অনিয়মিত অ’ভিবাসীদের আরো অনেক শর্তসহ নিয়মিত হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়।

নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী, আগের মতো বেশ কিছু সুযোগ বিদ্যমান রেখে নতুনভাবে কাজের মাধ্যমে বৈধতার একটি সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। কোন বাচ্চা নির্দিষ্ট সময় স্কুলে যাওয়ার পরে তার মায়ের বৈধতা, অনিবন্ধিত অ’প্রাপ্তবয়স্কদের বৈধতা কিংবা মানবাধিকার বিবেচনায় পরিবারের কোন সদস্য যেমন স্বামী, স্ত্রী’, কিংবা মা, বাবা ফ্রান্সে থাকলে পারিবারিক নিয়মে বৈধতা এসব নিয়মে বেশ বড়সড় কোন পরিবর্তন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আসেনি। তবে চাকুরির মাধ্যমে বৈধতা পাওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ আ’লোচিত এবং এ নিয়ে অ’ভিবাসীদের মধ্যে অনেক অস্পষ্ট ধারণা রয়েছে।

গণহারে বৈধতা প্রদান এই সার্কুলারের উদ্দেশ্য নয়
২০১২ সালের পর থেকে এই সার্কুলারের আওতায় অনেক অনিয়মিত অ’ভিবাসী বৈধ হওয়া শুরু করলে সাধারণ অ’ভিবাসীদের মধ্যে একটি ধারণা তৈরি হয় যে, এই সার্কুলারের আওতায় বৈধতা পাওয়া খুব সহ’জ।

অ’ভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা এনজিও জিসতির একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রকৃতপক্ষে এই সার্কুলারের উদ্দেশ্য অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল, নিয়মিত কাজ করছেন অথবা পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ কোন সদস্য যেমন মা, বাবা অথবা স্বামী স্ত্রী’ ফ্রান্সে বৈধভাবে বসবাস করছেন এরকম অ’ভিবাসীদের বৈধতা দেয়া। গণহারে বৈধতা প্রদান নয়।

বাংলাদেশ থেকে আসা অ’ভিবাসী সাগর(ছদ্মনাম) ইনফোমাইগ্রেন্টসকে জানান, “আমি ২০১৪ সালের শেষ দিকে ফ্রান্সে আসি। প্রায় ২ বছর আমা’র রাজনৈতিক আশ্রয়ের কার্যক্রম চলার পরে আবেদন নাকচ করা হয়। এর মধ্যে আমি বিভিন্ন জায়গায় কাজের চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু সব মালিক সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে আমাকে বৈধ বেতন রশিদ বা ডিক্লেয়ারের মাধ্যমে কাজে রাখতে চায় না। কারণ হাতে নগদ টাকা দিলে তাদের অনেক সরকারির ব্যয় কমে যায়। অবশেষে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে আমি একটা রেস্টুরেন্টে কাজ খুঁজে পাই। মালিক আমাকে সরকারি নিয়মের বাইরে অনেক কাজ করায়”।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে অ’বৈধ অবস্থায় কাজ করার ঝুঁ’কি নিয়ে নানান সময়ে আলোচনায় এসেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনিয়মিত অ’ভিবাসীদের অ’তিরিক্ত কাজ করতে হয় যেটার জন্য তাদের কোন মজুরি দেয়া হয় না।

“দীর্ঘ ৩ বছর কাজ করার পরে আমি সার্কুলার ভা’র্লস অনুযায়ী ন্যূনতম পাঁচ বছর ফ্রান্সে থাকার শর্ত পূরণ সহ কাজের সকল শর্ত পূরণ করে ২০২০ সালে প্যারিস প্রেফেকচুর থেকে বৈধতা অর্জন করি। বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়াটি ছিল অ’ত্যন্ত কঠিন, কারণ নানান প্রশাসনিক নথি যোগাড় করা, একজন উকিলের শরণাপন্ন হওয়া সহ নানান উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে”, যোগ করেন সাগর।

ডমিসিল এবং চাকুরি স’ম্পর্কিত ডকুমেন্ট সংগ্রহ
সার্কুলার ভা’র্লস অনুযায়ী, কোন অনিয়মিত অ’ভিবাসী যদি কাজের মাধ্যমে বৈধ হতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে তার চাকুরি স’ম্পর্কিত নানান শর্ত পূরণ করতে হয়। উদাহ’রণ হিসেবে, আপনি যদি পাচঁ বছর ধরে ফ্রান্সে বসাবাস করেন, সেক্ষেত্রে ৮ মাস নিয়মিতভাবে বৈধ বেতন রশিদের সাহায্যে কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং মালিকের পক্ষ থেকে প্রেফেকচুর নির্ধারিত সকল ডকুমেন্ট প্রেরণ করা।

কিন্তু বৈধতার জন্য নিয়মিত কাজ থাকার পাশাপাশি আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সকল প্রশাসনিক কাজে ব্যবহারের জন্য একটি ঠিকানা বা ডমিসিল পাওয়া, যেখানে সরকারি সকল প্রয়োজনীয় চিঠি ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়ে থাকে।

২০১৯ সালে ইল-দ্য-ফ্রঁস বিভাগের আওতাধীন সার্সেল প্রেফেকচুর থেকে বৈধতা পাওয়া বাংলাদেশি অ’ভিবাসী সাইফুল জানান, “আমা’র জন্য সবচেয়ে বড় বাধা ছিল একটি ঠিকানা যোগাড় করা, কারণ সার্সেল প্রেফেকচুরের আওতায় কোন এনজিও বা সংস্থার মাধ্যমে ঠিকানা পাওয়ার সুযোগ ছিল না। উপায় না দেখে আমি একজন ব্যক্তিকে ১০০০ ইউরো দিয়ে তার বাসার ঠিকানা ব্যবহারের অনুমতি পাই৷ যার ফলে বাকি অন্যান্য সব ডকুমেন্ট প্রস্তুত করে আমি বৈধতা অর্জন করি”।

প্রেফেকচুর ভেদে ভিন্নতা এবং আইনজীবী নিয়োগ ফ্রান্সের প্রশাসনিক কাজে প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট এর আওতাধীন প্রেফেকচুরগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় ক্ষেত্রে নিজস্ব কিছু নিয়ম অনুসরণ করে থাকে। যেমন ইল দ্য ফ্রঁস বিভাগের প্রায় সব পেরফেকচুরে সার্কুলার ভালসের অধীনে কাজের মাধ্যমে প্রেফেকচুরে বৈধতা আবেদন জমা দিতে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া রীতিমত দুস্কর একটি কাজ। অধিক সংখ্যক আবেদনের বিপরীতে প্রেফেকচুরের অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্বল্পতার জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে সহ’জে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় না।

এক্ষেত্রে ফ্রান্সের অন্য বিভাগগুলোতে এই অ্যাপয়েন্টমেন্ট জটিলতা নেয়। এ ব্যাপারে আম’রা মুজিব নামের (ছদ্মানাম)বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল থেকে আসা একজন অ’ভিবাসীর সাথে কথা বলেছি, যিনি ফ্রান্স অউদ ফ্রঁস বিভাগের আওতাধীন নর্দ প্রেফেকচুর থেকে বৈধতা পেয়েছেন। তিনি জানান, “ প্যারিসে আমা’র অনেক পরিচিতরা একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আমি যেই শহরে থাকি এখানে এরকম দীর্ঘ সময় অ’পেক্ষা করতে হয়নি৷ তবে আইনজীবী নিয়োগের জন্য আমাকে অর্থব্যয় করতে হয়েছে৷ কারণ সকল আইন কানুন জানা না থাকায় এবং ভাষা দক্ষতার অভাবে নিজে নিজে পুরো আবেদন প্রক্রিয়া আমা’র পক্ষে করা জন্য বেশ কঠিন ছিল।’’

প্রশাসনিক কাজগুলো বেশি জটিল হওয়ায় এবং ভাষা দক্ষতা একটি বড় প্রশ্ন হওয়ায় বেশিরভাগ সময় বৈধতা আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য অ’ভিবাসীরা একজন আইনজীবীর শরনাপন্ন হতে বাধ্য হন। এক্ষেত্রে তাদের আরো বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.