Beanibazarview24.com
দেশে ফিরে নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করার পর থেকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন প্রবাসীরা। অনেকে দেশে ফেরার জন্য আগে টিকিট কেটে রাখলেও কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনা জানান পর টিকিট বাতিলের রীতিমত হিড়িক পড়েছে। ফলে লন্ডন-সিলেট রুটে বিমানের যাত্রী কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। এতে এই রুটের ফ্লাইট নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৭জানুয়ারি) সকালে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আসবে বিমানের আরেকটি ফ্লাইট। এই ফ্লাইটে মাত্র ৩৬ জন যাত্রী দেশে আসছেন। এরমধ্যে ২৯ জন সিলেটের। যদিও এই ফ্লাইটের টিকিট কেটেছিলেন ২০৩ জন। বাকী ১৬৬ জন যাত্রীই টিকিট বতিল করে দিয়েছেন।
এরআগে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনা কার্যকরে পর গত সোমবার সিলেটে প্রথম ফ্লাইট আসে। এই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন মাত্র ৪৮ জন। এরমধ্যে ৪২ জন ছিলেন সিলেটের। এই ফ্লাইটের ১৫২ জন যাত্রী টিকিট কেনার পরও বাতিল করে দেন।
জানা যায়, শীত মৌসুমে এমনিতেই সিলেটের যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের দেশে ফেরার হার বাড়ে। এবার শীতে যুক্তরাজ্যে নতুন ধরণের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ভয়ে আরও অধিকসংখ্যক যাত্রী দেশে ফিরে আসছিলেন। তবে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরা যাত্রীদের নিজ খরচে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়ায় সিলেটের যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা দেশে ফেরার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টি থাকার নির্দেশনা গত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়।
বাংলাদেশ বিমানের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সিলেটে আসা ফ্লাইটের টিকিটি কিনেছিলেন ২০০ জন যাত্রী। তবে নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় ১৫২ যাত্রীই তাদের টিকিট বাতিল করেন। আর আজ বৃহস্পতিবার ফ্লাইটের টিকিট কেটেছিলেন ২০৩ জন যাত্রী। এরমধ্যে দেশে আসছেন মাত্র ৩৬ জন।
অথচ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত কার্যকরের আগে সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ যাত্রী নিয়ে বিমানের তিনটি ফ্লাইট ওসমানী বিমানবন্দরে আসে। এই তিনদিন আসা যাত্রীদের মধ্যে যথাক্রমে ১৬৫, ১৪৪ ও ২০২ জন ছিলেন সিলেটের যাত্রী। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের প্রত্যককেই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বাড়ি চলে যেতে দেওয়া হয়েছিলো।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিলেট অফিসের ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ মজুমদার জানান, দেশে ফিরে নিজ খরচে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এই ভয়ে যাত্রীরা টিকিট বাতিল করেছেন। সোমবার ও বৃহস্পতিবারের ফ্লাইটে দুইশতাধিক যাত্রী টিকিট কনফার্ম করার পরও তাদের বেশিরভাগই পরে বাতিল করে দেন।
একই তথ্য জানিয়েছেন সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (কোভিড-১৯ ও মিডিয়া সেল) শামমা লাবিবা অর্ণবও। তিনি বলেন, নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনার পর যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনেকেই দেশে আসার আগ্রহ হারিফেলেছেন। তাদের অনেকেই টিকিট বাতিল করেছেন।
এদিকে, যাত্রী না থাকার কারণে ২৩ ও ৩০ জানুয়ারির লন্ডন ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান।
ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জতিক বিমানবন্দরে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট আসে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণের কারণে যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান যোগাযোগ নিয়ে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান যোগাযোগ বন্ধেরও দাবি উঠেছে। তবে ঝুঁকি কমাতে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা যাত্রীদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। যা কার্যকর হয় ১ জানুয়ারি।
এরপর সোমবার ৪৮ যাত্রী নিয়ে লন্ডন থেকে সিলেটে আসে বিমানের প্রথম ফ্লাইট। যাতে ৪২ জন যাত্রী সিলেটের ছিলেন। এরপর কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিআরটিসির দুটি বাসে করে প্রবাসীদের বিমানবন্দর থেকে সিলেট নগরের চারটি হোটেলে এনে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
তথ্যসূত্র:-Sylhettoday24.news
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.