Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

বাবরি মসজিদের স্থানে নির্মাণাধীন রামমন্দিরের প্রধান করোনাক্রান্ত


ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোদ্ধায় বাবরি মসজিদের স্থানে নির্মাণাধীন বিতর্কিত রামমন্দিরের ট্রাস্ট প্রধান নৃত্য গোপাল দাস করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। গত বুধবার এই মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের এই প্রধান।

বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত সপ্তাহে অযোদ্ধায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মঞ্চে যে পাঁচজন ভিআইপি উপস্থিত ছিলেন; তাদের মধ্যে রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের নৃত্য গোপাল দাসও ছিলেন। বৃহস্পতিবার তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।

ওইদিন অযোদ্ধায় রামমন্দিরের উদ্বোধনীতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের নৃত্য গোপাল দাস, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল, বিজেপির আদর্শিক পরামর্শক ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত।

রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রধান নৃত্য গোপাল দাস বর্তমানে মথুরায় রয়েছেন। মথুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরভাগ্য রাম মিশ্র বলেন, মহারাজ নৃত্য গোপাল দাসের কিছুটা জ্বর আছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। যে কারণে আমরা একটি মেডিকেল টিম পাঠিয়েছিলাম। তারা পরীক্ষা করে কিছু ওষুধ দিয়েছেন। জ্বর স্বাভাবিক ছিল। তবে হালকা শ্বাসকষ্ট ছিল। আমরা তার অক্সিজেনের মাত্রাও পরীক্ষা করেছি। এতে গুরুতর কিছু ধরা পড়েনি। পরে করোনা পরীক্ষা করা হলে তার পজিটিভ রিপোর্ট আসে।

সম্প্রতি রামমন্দিরের ট্রাস্টের এই প্রধানের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান ম্যাজিস্ট্রেট রাম মিশ্র।

উল্লেখ্য, রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের কিছুদিন আগে রাম জন্মভূমি চত্বরের দায়িত্বে থাকা পুরোহিত প্রদীপ দাস এবং ১৪ জন পুলিশ সদস্যের দেহেও করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। গত বুধবার বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রথম ইট স্থাপন করেন।

দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গত নির্বাচনের মূল প্রতিশ্রুতিগুলোর অন্যতম ছিল অযোদ্ধায় রামমন্দির নির্মাণ। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে মন্দিরের ‘ভূমি পূজা’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২৯ বছর পর অযোধ্যায় যান নরেন্দ্র মোদি।

অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের ২ দশমিক ৭৭ একর বিতর্কিত জমির আইনি লড়াইয়ের শুরু হয় ১৯৫০ সালে। রামের ভক্ত গোপাল সিংহ বিশারদ বাবরি মসজিদকেই রামের জন্মভূমি দাবি করে সেখানে পূজার অধিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন।

পরমহংস রামচন্দ্র দাস সেখানে পূজার দাবি জানিয়ে মামলা করেন। ১৯৬১ সালে উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জমির অধিকার চেয়ে আদালতে যায়। ‘রামলালা বিরাজমান’ নিজেও মামলার পক্ষ হয়ে ওঠেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি দেবকীনন্দন আগারওয়ালের প্রধান দাবি, রামের জন্মভূমিই দেবতার চরিত্র পেয়েছে।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোদ্ধার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীরা। পরে এই মসজিদের স্থানের মালিকানার দাবি নিয়ে করা মুসলিম-হিন্দু; উভয়পক্ষের মামলা এলাহাবাদ হাইকোর্টে যায়। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখাড়া, রামলালার মধ্যে জমি সমান ভাগে করে দেয়া হোক। এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দু’ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ।

এর বিরুদ্ধে সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীরা দাবি করেন, রামের জন্মভূমি দেবতা-স্বরূপ। তার ভাগ হয় না। বিতর্কিত জমি মন্দিরের জন্য দেয়ার রায় ব্যাখ্যা করে গত বছরের ৯ নভেম্বর দেশটির সুপ্রিমকোর্ট বলেন, আর্কিওলজি সার্ভে অফ ইন্ডিয়া প্রমাণ পেয়েছে যে, মোঘল সম্রাট বাবরের ১৬ শতকের মসজিদ ফাঁকা জায়গায় নির্মাণ করা হয়নি।

দেবতা রামচন্দ্রের জম্মভূমির ওপর তৈরি করা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে বলে ধারণা দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের। ১৯৯২ সালে হামলা চালিয়ে এই মসজিদ ধ্বংস করার পর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হয়। এতে প্রায় ২ হাজার মানুষ মারা যান।

মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিলেও ষোড়শ শতকের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে আইনের পরপন্থী বলে রায়ে বলেছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

সূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.