Beanibazarview24.com
অ্যাকশন মুভিটি বানাতে মোট খরচ হয়েছে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিশ্ব জুড়ে চলচ্চিত্রের নতুন মাত্রা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম প্রেক্ষাগৃহকে মুভিপ্রেমীদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। বাজেটের পাহাড় উপেক্ষা করে ঘরের আরামপ্রদ সিনেপ্লেক্সে দর্শকদের নিত্য-নতুন চমক উপহার দিয়ে যাচ্ছে নেটফ্লিক্স। সেই রেসে এবার সবাইকে ছাড়িয়ে গেলো রসন মার্শাল থার্বার পরিচালিত কমেডি-ক্রাইম সিনেমা “রেড নোটিশ”।
অ্যাকশন মুভিটি বানাতে মোট খরচ হয়েছে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত ৫ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি নেটফ্লিক্সের গ্রাহকরা ১২ নভেম্বর থেকে সিনেমাটি উপভোগ করতে পারবেন। এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সে মুক্তিপ্রাপ্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই মুভিটির আদ্যোপান্ত নিয়েই এবারের বিনোদনধর্মী ফিচার।
“রেড নোটিশ”-এর কাহিনী
বিশপ নাম নিয়ে বিশ্বের নামকরা মূল্যবান শিল্পকর্মগুলো চুরি করে পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সারা ব্ল্যাক। অন্যদিকে নোলান বুথ লোককে বোক বানিয়ে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করতে ওস্তাদ। আর এই ধড়িবাজকে সঙ্গে নিয়েই সেই বিশপের পিছে লেগেছে ইন্টারপোল এজেন্ট জন হার্টলি। এরকম গল্প নিয়েই হাস্যরস ও দুর্দান্ত অ্যাকশন স্টান্ট নিয়ে সামনে এগিয়েছে “রেড নোটিশ”-এর কাহিনী।
প্রথমে মুভিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল হলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল পিকচার্স-এর ব্যানারে। পরবর্তীতে নেটফ্লিক্স সিনেমাটির প্রকাশের স্বত্ব কিনে নেয়।
“রেড নোটিশ” চলচ্চিত্রের নির্মাণ
২০১৬ এর “সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স” এবং ২০১৮ এর “স্কাইস্ক্র্যাপার”-এর পরে এই তৃতীয়বারের মত চলচ্চিত্র নির্দেশক থার্বার কাজ করলেন “দ্যা রক” খ্যাত ডোয়েইন জনসনের সঙ্গে।
থার্বার নিজে সিনেমাটির চিত্রনাট্যও লিখেছেন। এছাড়া বিউ ফ্লিন, অ্যাডা বাচেভ, হিরাম গার্সিয়া এবং ডোয়েইন জনসনের সঙ্গে মুভিটির প্রযোজনায়ও রয়েছেন এই আমেরিকান মুভি পরিচালক।
২০০০ সালের ডিসি নামের একটি টিভি শোতে সহকারী চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে বিনোদন জগতে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন থার্বার। তার প্রথম রচিত ও পরিচালিত।
চলচ্চিত্র “ডজবল: এ ট্রু আন্ডারডগ স্টোরি” (২০০৪) বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি নিজেও মুভিটিতে অভিনয় করেছিলেন।নিজের পরিচালিত মুভি “উই আর দ্যা মিলার্স”(২০১৩) ও “সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স”- তেও তিনি অভিনয় করেছেন।
চলচ্চিত্রটির ভিজুয়াল ইফেক্টে কাজ করেছেন রিচার্ড আর হুভার, যিনি ২০১৭ এর মুভি ব্লেড রানার ২০৪৯-এর ভিএফএক্স আর্টিস্ট হিসেবে অস্কার জিতেছিলেন।
তার “রেড নোটিশ” মুভিটি গত ৫ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবার পর প্রথম সপ্তাহে আয় করেছে ১.২৫ মিলিয়ন ডলার।
যারা অভিনয় করেছেন “রেড নোটিশ”-এ
“রেড নোটিশ”-এ সুপার ট্রায়ো তাদের নজরকাড়া স্টান্ট নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন। তারা হলে ডোয়েইন জনসন “দ্যা রক”, ওয়ান্ডার ওমেন গ্যাল গ্যাডট ও ডেডপুল রায়ান রেনল্ডস।
এক সময়কার ডব্লিউ ডব্লিউ এফ (ওয়ার্ল্ড রেস্টলিং ফেডারেশ)-এর রিং কাঁপানো খেলোয়াড় দ্যা রক- বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অভিনেতাদের একজন।
তার বিশ্বখ্যাত মুভিগুলোর মধ্যে “মামি রিটার্ন্স”(২০০১), “জার্নি-২: দ্যা মিস্টিরিয়াস আইল্যান্ড”(২০১৩), “সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স”(২০১৭), “জুমাঞ্জি: ওয়েলকাম টু দ্যা জঙ্গল”(২০১৮) অন্যতম। এছাড়া “ফাস্ট অ্যান্ড দ্যা ফিউরিয়াস” ফ্রাঞ্চাইজির পাঁচ, ছয় ও সাত সংস্করণে তার পারফর্মেন্স বেশ দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে।
গ্যাল গ্যাডট তার ভক্তদের কাছে ডায়ানা প্রিন্স বা ওয়ান্ডার ওমেন নামেই অধিক পরিচিত। ২০০৪ সালের “মিস ইসরায়েল”-এর প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে ২০০৯ এর ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস মুভি সিরিজের চার নম্বর মুভির মাধ্যমে। ২০১৬ থেকে তিনি বিশ্বে বিখ্যাত সুপারহিরো ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে অন্যতম ডিসি এক্সটেন্ডেড ইউনিভার্সের সঙ্গে যুক্ত হন। ক্রমান্বয়ে তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রীদের একজন হয়ে উঠেন।
ভক্তদের কাছে ইতোমধ্যে নিজেকে একজন সপ্রতিভ কমেডি অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কানাডিয়ান অভিনেতা রায়ান রেনল্ডস। তার সুপারহিরো মুভিগুলোর মধ্যে ডিসি ইউনিভার্সের মুভি “গ্রিন ল্যান্টার্ন” (২০১১) থেকে মার্বেল ইউনিভার্সের “ডেডপুল” (২০১৬) মুভিটি বেশি প্রশংসিত হয়। সেই সুবাদে ২০১৮ সালে মুভিটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে টোয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স। সম্প্রতি তার “ফ্রি গায়” মুভিটি অভিনব চিত্রনাট্য নিয়ে দর্শক মহলে বেশ সাড়া ফেলে।
এই সুপার ট্রায়ো ছাড়াও “রেড নোটিশ”-এ আছেন ক্রিস ডায়মান্টোপোলোস, রিতু আরিয়া, ইভান এমবাকপ, ভিনসেঞ্জো আমাতো এবং রাফায়েল পেটার্ডি।
নেটফ্লিক্স ও মুভি; শব্দ দুটি যেন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কখনো তারকাদের দৃশ্যায়ন করে প্রচার পাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি আবার কখনও এই মঞ্চের ব্যানার থাকার সুবাদে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে স্ট্রীমিং হওয়া মুভিটি। “রেড নোটিশ”-এর ক্ষেত্রে অবশ্য দুটো বিষয়-ই যুগপৎ ভাবে কাজ করেছেন। নিদেনপক্ষে মুভিটির আইএমডিবিতে ৭.১/১০ এবং রোটেন টোম্যাটোতে ৯২ শতাংশ দর্শক রেটিং তারই জানান দিচ্ছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.