Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মঙ্গলের জীবন বুঝতে পৃথিবীর যে অঞ্চলে চলছে গবেষণা


চারদিকে লালচে পাথুরে মাটি। ধু ধু প্রান্তর বলা চলে। কোথাও উঁচু, আবার নিচু। এই বিরান প্রান্তরে ঘাঁটি গেড়েছেন একদল গবেষক। খানিকটা দূরে সার বেঁধে রাখা কয়েকটি সোলার প্যানেল। বোঝা যায়, সেটাই তাঁদের বিদ্যুতের উৎস। এমনিতে সুনসান নীরব, তবে মাঝেমধ্যে মৃদু গুঞ্জন তুলে পাশ কাটিয়ে যায় স্বয়ংক্রিয় রোবটযান (রোভার)। দেখলে মঙ্গল গ্রহ মনে হতে পারে। অন্তত লাল গ্রহের যে ছবি আমাদের কল্পনায় আছে, তার সঙ্গে মিলে যায়।

জায়গাটি দক্ষিণ ইসরায়েলের মরুভূমিতে। নাম র‍্যামন ক্র্যাটার। ছয়জনের যে দল সেখানে আপাতত বসতি গেড়েছে, তার মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, একজন নারী। মাসখানেক সেখানে থেকে তাঁরা বোঝার চেষ্টা করবেন, মঙ্গল গ্রহের জীবন কেমন হতে পারে।

দলটির সাময়িক আবাসের নাম আমাদি-২০। এর ভেতরেই ঘুমান, গবেষণা চালান। খাওয়াদাওয়াও সেখানে। বাইরে গেলে গায়ে স্পেস স্যুট চড়ান। সেটা অবশ্য নকল, পরীক্ষামূলকও বলা চলে। তাতে ক্যামেরা আছে, মাইক্রোফোন আছে, আবার শ্বাসপ্রশ্বাস জারি রাখার কৃত্রিম ব্যবস্থাও আছে। দলের ছয় সদস্যকে সার্বক্ষণিক ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
স্বয়ংক্রিয় রোভারও রয়েছে
স্বয়ংক্রিয় রোভারও রয়েছে


অস্ট্রিয়ান স্পেস ফোরামের পরিচালক গারনট গ্রোমার সে অভিযানের ব্যাপারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের মূলমন্ত্র হলো দ্রুত ত্রুটি শনাক্ত করে খরচ কমানো এবং ক্রমাগত শিক্ষা অর্জন। কারণ, যেসব ভুল আমরা এখানে, এই পৃথিবীতে করব, আশা করছি, মঙ্গলে তার পুনরাবৃত্তি হবে না।’

ইসরায়েল স্পেস এজেন্সি এবং স্থানীয় সংগঠন ডি-মার্সের সঙ্গে অস্ট্রীয় অ্যাসোসিয়েশনটি র‍্যামন ক্র্যাটারের প্রকল্প পরিচালনা করছে।

মঙ্গল গ্রহের সাম্প্রতিক অভিযানগুলোয় ব্যবহৃত রোভার জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভক্তদের দৃষ্টি কেড়েছে। নাসার পার্সিভারেন্স সেগুলোর অন্যতম, তা ছাড়া এই প্রথম ইনজেনুইটি নামের খুদে স্বয়ংক্রিয় হেলিকপ্টারও পাঠানো হয় মঙ্গলে। এতে লাল গ্রহের ভূপৃষ্ঠের দেখা মেলে ঠিকই, তবে মানুষ গিয়ে থাকলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়াবে, তা বোঝা কঠিন।

নানা দেশের ছয়জন কাজ করছেন প্রকল্পটিতে
নানা দেশের ছয়জন কাজ করছেন প্রকল্পটিতে


ইসরায়েলের মরুভূমিতে আমাদি-২০ নামের অভিযানটি পরিচালনার কথা ছিল ২০২০ সালে। তবে করোনার জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষামূলক এই অভিযানের শিক্ষা মঙ্গলে অভিযান সফল করতে কাজে লাগানোর ইচ্ছা গবেষকদের। গ্রোমার বলেন, এই আবাস বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল, সবচেয়ে আধুনিক, তবে অ্যানালগ গবেষণাকেন্দ্র।

পৃথিবীর গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) মঙ্গলে অচল। তাই দিকনির্দেশনার জন্য প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা ড্রোন ও রোভারের সাহায্য নিয়ে থাকেন।

সব মিলিয়ে প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা ২০টির বেশি পরীক্ষা চালাবেন। গবেষণার বিষয়ের মধ্যে রয়েছে ভূতত্ত্ব, জীবতত্ত্ব ও চিকিৎসাবিদ্যা। পরীক্ষা শেষে কিছু ফলাফল প্রকাশের ইচ্ছা আছে তাঁদের।

ওই গবেষক দলের একজন অ্যালন টেনজার। গায়ে প্রায় ৫০ কেজি ওজনের যন্ত্রপাতিওয়ালা স্পেস স্যুট চড়িয়ে রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি বলেন, ‘অল্প জায়গায় আমরা ছয়জন কাজ করে যাচ্ছি। অনেক পরীক্ষা চালানোর চাপ আমাদের ওপর। চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। তবে আমাদের সদস্যদের ওপর বিশ্বাস আছে, চ্যালেঞ্জগুলো জয় করবই আমরা।’

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.