Beanibazarview24.com
বাংলাদেশের পুরান ঢাকার মেয়ে সানা বিনতে রহমান সফলতার সাথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মালয়েশিয়াতে। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের তৈরিকৃত ভেষজ উপাদান দ্বারা প্রস্তুতকৃত স্কিনকেয়ার সামগ্রী নিয়ে কাজ করছেন। ত্বকের যত্নের জন্য নিজের তৈরি ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ প্রসাধন সফলতা এনে দিয়েছে সানার জীবনে।
বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সানা বিনতে রহমান। জন্মস্থান রাজধানীর পুরান ঢাকায়। শৈশব-কৈশোর পরিবারের সাথে ঢাকাতেই কেটেছে তাঁর। ২০০৬ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বিক্রমপুরের মালয়েশিয়াপ্রবাসী এস এম নিপুর সঙ্গে। বিয়ের পর প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান এই উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী।
মালয়েশিয়ায় সানা বিনতে রহমান ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি অব মালয়েশিয়া (ইউটিএম) থেকে ২০১১ সালে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের ওপর তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা শেষ করেন। এর পরে ২০১৪ সালে বোটানিক্যাল অর্গানিক স্কিন কেয়ার কনসালটেনসির ওপর দুই বছর মেয়াদি আরও একটি ডিপ্লোমা সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন।
সানা বিনতে রহমান বিয়ের পর ২০০৬ সাল থেকে স্বামী নিপুর সাথে প্রায় ১৫ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর শহরে সানা-নিপু দম্পতির বর্তমান নিবাস।
স্বামী এবং তিন সন্তান নিয়ে পরিবারের পাশাপাশি সানা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে। বোটানিক্যাল অর্গানিক স্কিন কেয়ার কনসালটেনসির ওপর করা ডিপ্লোমা কাজে লাগিয়ে কাজ করছেন ভেষজ উপাদানে তৈরি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট নিয়ে। সানার তৈরি প্রোডাক্টের গুণগত মানের কারণে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে নিয়ে এসেছে ব্যাপক সফলতা।
বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯-এর কারণে সারা বিশ্বে যখন স্থবিরতা বিরাজ করছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে শখের বশে ব্যবসা শুরু করেন সানা। লকডাউনের কারণে গৃহবন্দি জীবনের একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে আসতে কাজ শুরু করেন নিজের অর্জিত জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে খুলে ফেলেন ‘সানা বিউটি’ নামে একটি পেজ। এর পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি এই উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ীর। পরিবার সামলিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হিসেবে।
বিগত চার বছর ধরে ভেষজ উপাদান দিয়ে নিজেই তৈরি করছেন ত্বকের জন্য বিভিন্ন সামগ্রী। তাঁর তৈরি করা সামগ্রীগুলো হলো উপটান, বডি স্ক্র্যাব, বডি মাস্ক, হেয়ার প্যাক, টনিক, ক্রিম, সিরামসহ নানা ধরনের স্কিন প্রোডাক্ট।
সানা বিউটি সম্পর্কে জানতে চাইলে সানা বলেন, ‘আমি নিজেই বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে এই স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলো তৈরি করে থাকি। এগুলো আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। আমার তৈরি স্কিনের প্রোডাক্টগুলো ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্ডার আসে। এ ছাড়া আমি আমার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনেককেই স্কিন অ্যাডভাইস দিয়ে থাকি। আমি চাই, আমার প্রোডাক্টগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিতে, আমি এখন সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে সানার স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলো ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি তাঁর প্রস্তুতকৃত সামগ্রী ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছেন। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শহর থেকে প্রোডাক্ট অর্ডার পেয়ে থাকেন সানা। প্রোডাক্ট বিক্রির পাশাপাশি সানা তাঁর ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের যত্নের পরমর্শ দিয়ে থাকেন।
বর্তমানে সানা তাঁর প্রোডাক্টের গুণগত মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁর প্রস্তুতকৃত স্কিন কেয়ার সামগ্রী। দেশকে ফুটিয়ে তুলতে চান বিশ্ব দরবারে।
প্রবাসীদের অনুপ্রেরণায় নতুন উদ্যমে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন সানা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মানুষ চায় ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, নিজের রূপ-সৌন্দর্য ধরে রাখুক। প্রবাসীদের ভালোবাসায় আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.