Beanibazarview24.com





সাড়ে সাত লাখ টাকা খরচ করে কুয়েতে এসেছি। সোনার হরিণের খোঁজে এসে ছাইও মেলেনি। ভেবেছিলাম পরিবারে অভাব মোচন করব। তাই শত কষ্ট করে টাকা-পয়সা জোগাড় করে কিছু করার আশায় পাড়ি জমালাম। কিন্তু এখানে এসে হতাশা ছাড়া কিছুই দেখছি না। আমার কী অবস্থা বুঝতে পারছি না।’
আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন ফটিকছড়ির উপজেলার সাঈদ। তিনি সাত মাস আগে ‘খাদেম ফ্রি ভিসায়’ কুয়েত আসেন। এই সদ্যপ্রবাসী বলেন, আমার মতো আরো অনেকেই এসেছে। সাড়ে সাত লাখ টাকা দালালকে দিয়ে আসলাম। অথচ চাকরি তো দূরের কথা ঠিকমতো খাবারই জুটছে না।
ফ্রি ভিসার নামে অভিনব কায়দায় প্রতারণা চলছে। বাস্তবে এর অস্তিত্ব না থাকলেও এই ভিসার নাম করে মধ্যপ্রাচ্যসহ কয়েকটি দেশে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। বৈধ ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট না থাকায় এসব দেশে গিয়ে কোনো কাজ পাচ্ছেন না শ্রমিকেরা। ফলে প্রবাসে অমানবিক জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
‘আমার আত্মীয়-স্বজন দেশেও আছে বিদেশেও আছে কেউ চাকরি খুঁজে দিচ্ছে না। যা করার নিজেকেই করতে হবে। আমার মতো এভাবে বিদেশে আসলে সবকিছু ভেবে-চিন্তে আসবেন। এখানে এসে বুঝলাম ফ্রি ভিসা বলতে কোন ভিসা হয় না। যে শ্রমিক যে ভিসা নিয়ে আসবে তাকে ওই কাজ করতে হবে। অন্যস্থানে কাজ করা স্থানীয় আইনের অপরাধ ও অবৈধ।’
‘স্থানীয় প্রশাসনের হাতে আটক হলে জেল জরিমানা এমন কি দেশেও পাঠিয় দিতে পারে। দেশে শিক্ষিত বেকার তরুণদের সংখ্যা দিনেদিনে বেড়েই চলছে। দেশে কর্মসংস্থানে সংকটের কারণে অদক্ষ এ রকম অসংখ্য তরুণ দালালের খপ্পরে পড়ে তাদের লোভনীয় কথায় মুগ্ধ হয়ে জমিজমা বন্ধক রেখে চড়া লোনে ফ্রী ভিসা নিয়ে এসে সাঈদের মত চাকরি খুঁজছে অনেকে।’
দেশটিতে লামানা মাধ্যমে ভিসা চালু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নতুন প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক এসেছে। বর্তমানে কুয়েতে প্রায় ৩ লাখ প্রবাসী রয়েছে। কাজের তুলনায় লোক সংখ্যা বেশি হওয়াতে কমেছে শ্রমের মজুরি। বেড়েই চলেছে চাকরির সংকট।
বর্তমানে কুয়েতের প্রবাসীর সংখ্যা ৩৩ লাখ। যেখানে কুয়েতের নিজস্ব জনসংখ্যা ১৪ লাখ। প্রবাসীদের সংখ্যা কমাতে এবং কর্মসংস্থানের বাজার নিজেদের দখলে নিতে আগামী সাত বছরের মধ্যে কুয়েত থেকে ১৫ লাখ প্রবাসীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে এই রকম প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.