Beanibazarview24.com
শুক্রবার দেশের ৩৮ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘মুখোশ’ সিনেমা। গত বুধবার বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রিমিয়ার শো শেষে ছবির নায়ক-নায়িকা রোশান ও পরীমনি বলেছিলেন, মুক্তির দিন তাঁরা বেশ কয়েকটি হলে যাবেন, দর্শকের সঙ্গে বসে সিনেমা দেখবেন, কথা বলবেন। কথা রেখেছেন তাঁরা।
শুক্রবার প্রথমেই তাঁরা মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহে যান। পরীমনি, রোশানসহ পরিচালকের সঙ্গে দশজনের একটি দল বেলা সাড়ে তিনটার শোর বিরতির আগে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হন। তখনো হলের দর্শকেরা বুঝতে পারেননি, মিলনায়তনে বসে পর্দায় যে নায়ক-নায়িকাকে দেখছেন, বাস্তবেই তাঁরা হলে চলে এসেছেন! বিরতির সঙ্গে সঙ্গে দর্শকের সামনে আসেন পরী-রোশানরা।
দর্শকেরা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি স্বপ্নের নায়ক-নায়িকা বাস্তবে হাজির। তাঁদের দেখেই হলভর্তি দর্শক চিৎকার করতে থাকেন, কেউ কেউ শিস বাজাতে থাকনে। এরপর সবাইকে শান্ত হতে বলা হয়। কথা বলতে শুরু করেন পরীমনি।
কেমন লাগছে ছবিটি, সামনে বসা দর্শকের কাছে পরীমনি জানতে চাইলে ‘ভালো লাগছে’ বলে ওঠেন সবাই। এরপর পরী বলেন, ‘ছবিটি যদি আপনাদের ভালো লাগে, বের হয়ে বন্ধুবান্ধব পরিবারকে দেখতে বলবেন। আপনারাই ছবির প্রাণ। আপনারা ছাড়া সিনেমা অচল। ছবিটি খারাপ লাগলেও বলবেন।’
দর্শকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এ সময় পরীমনি আরও বলেন, ‘আমাদের অভিনীত ছবিটি আপনার দেখতে এসেছেন, এ জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞ আমরা। এখন সিনেমার মন্দাকাল যাচ্ছে। এভাবে আপনারা বাংলা সিনেমার সঙ্গে থাকলে সিনেমার দুর্দিন কেটে যাবে।’ সে সময় রোশানও দর্শকের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর দর্শকের সঙ্গে সেলফি তোলেন পরী-রোশানরা।
মধুমিতা থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার শোর ঠিক আগে আগে পুরান ঢাকার চিত্রামহলে যান পরীমনি ও রোশানরা। বাইরে শত শত দর্শক। চিত্রামহলে ঢুকেই অবাক তাঁরা। একদিকে শো শেষ, অন্যদিকে নতুন শো শুরুর আগমুহূর্ত। দুই শোর দর্শকের সঙ্গে কথা বলে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু বের হতে পারছিলেন না।
পরে টিমের সবাই মানবপ্রাচীর তৈরি করেন। পায়ের জুতা খুলে হাতে নিয়ে দৌড়ে কোনোমতে গাড়িতে ওঠেন পরীমনি। এরপরও বেশ কিছুক্ষণ পরীমনির গাড়ি ঘিরে রাখনে শত শত দর্শক।
এমন অবস্থার মুখোমুখি হয়ে পরীমনি কোনো বিরক্ত হননি। বললেন, ‘আরে নায়ক-নায়িকা হলে যাবেন, দর্শক আটকে রাখবেন না, এটা কি হয়! এটাই তো মজা। এটাই তো বাংলা সিনেমার দর্শক। আমি বিষয়টি খুব উপভোগ করেছি। সিনেমায় এমনটিই তো হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, ‘বাংলা সিনেমা নাকি দর্শক দেখেন না। আজ মধুমিতা, চিত্রমহলে গিয়ে সেই ধারণা পাল্টে গেছে আমার। আরও দুটি হলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু রাতেই আমি ঢাকার বাইরে যাচ্ছি। একটু চাপ হয়ে যায়, এ জন্য আর যাওয়া হলো না।’
পুরো বিষয়টি নিয়ে ছবির পরিচালক ইফতেখার শুভ বলেন, ‘মধুমিতা হলে দর্শকের সঙ্গে ছবিটি নিয়ে কথা বলেছি আমরা। সবাই আমাদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন। সেখান থেকে সুন্দরভাবে বের হতে পেরেছি। কিন্তু চিত্রমহলে গিয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরী-রোশানকে তো বেরই করতে পারছিলাম না। এমন ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হব, আগে বুঝিনি। বেশি ভয় পেয়েছিলাম পরীমনিকে নিয়ে। যাক, শেষ পর্যন্ত হল কর্তৃপক্ষ ও আমাদের স্বেচ্ছাসেবী টিমের সদস্যরা মানবপ্রাচীর তৈরি করে বের হতে পেরেছি আমরা।’
এদিকে পরীমনি বাসায় ফিরে গেলেও রোশানসহ পরিচালকের টিম শ্যামলী সিনেপ্লেক্স ও সনি সিনেপ্লেক্সে রাতে শোর দর্শকদের সঙ্গে দেখা করতে যান। মুক্তির প্রথম দিনে ছবিটি নিয়ে সন্তুষ্ট ইফতেখার শুভ। তিনি বলেন, ‘ঢাকার মধ্যে ভালো খবর পাচ্ছি। কয়েকটি হল সফর করে নিজ চোখেই দেখলাম। ঢাকার বাইরের খবরও মোটামুটি ভালো। আরও কয়েক দিন গেলে আসল খবর বলা যাবে।’ ‘মুখোশ’ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, আজাদ আবুল কালাম, ইরেশ যাকের, এ্যালিনা শাম্মী, প্রাণ রায়, ফারুক হোসেন প্রমুখ।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.