Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মুসলিম নারীদের জীবনে নতুন আলো ফেলতে চান তিনি


রুজিনা আহাদ একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক এবং লেখক। তার বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর। সম্প্রতি মুসলিম নারীদের ওপর অনুপ্রেরণামূলক একটি বই লিখেছেন তিনি। বইটির নাম Dream Du’a Do (ড্রিম দু’য়া ডু)। ইংরেজিতে লেখা বইটি ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় তা আরবিতেও অনুবাদ করা হয়েছে। বইটি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত হয়েছে এবং বইটির প্রকাশনা সংস্থার নাম ড্রিমওয়ার্ক কালেকটিভ। বইটি নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন রুজিনা আহাদ।

আপনার অ্যাকাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড কী?
রুজিনা আহাদ : সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আমি সোশিওলোজিতে বিএসসি করছি, যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটি থেকে লিডারশিপ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে এমএ করার পর এখন আমি শিক্ষকতা পেশায় রয়েছি। লেখালেখি আমি সবসময়ই করে গেছি, তবে এবারই প্রথম নন-ফিকশন কোনো কাজ করলাম।

এখন আপনি কী করছেন?
রুজিনা আহাদ: সংযুক্ত আর আমিরাতে লেখালেখির সঙ্গে জড়িত আছি।

এর আগে আপনি কী করেছেন? সেখানে আপনি কী অবদান রেখেছেন?
রুজিনা আহাদ : আগেও মূলত আমি শিক্ষকতা করেছি। এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও দিয়েছি। যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমি বেশ কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

এখনও কোনো পুরস্কার পেয়েছেন?
রুজিনা আহাদ : আমার বইয়ের জন্য? এখনও না। বইটা বের হয়েছে মাত্র ৩ মাস হলো। কিন্তু এই তিনমাসের মধ্যেই বইটা যে কেবল টিডিসি ওয়েবসাইটে উঠেছে তা নয়, যুক্তরাজ্যের ব্র্যাকওয়েলস, ওয়াটারস্টোনস, ফয়েলস, যুক্তরাষ্ট্রের বার্নস অ্যান্ড নোবেল, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কিনোকুনিয়া ও ভার্জিন মেগাস্টোর, অস্ট্রেলিয়ার বুকটোপিয়ার মতো দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে বই। আর কিন্ডলে ইবুক ভার্সন তো রয়েছেই, অডিবলে রয়েছে অডিওবুক। আরব আমিরাতের জাতীয় পত্রিকাগুলো আমার বই নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, ভগ আরবিও খবর প্রকাশ করেছে। এছাড়া বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক সাহিত্য উৎসব আমিরাত লিট ফেস্টিভ্যালে অংশ নেওয়ার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

কোন দেশে বইয়ের কত কপি গেছে?
রুজিনা আহাদ: লেখকরা রয়্যালটি পান বছরে দু’বার। এ বছরের জুলাইয়ে এটার পুরো চিত্র আমরা পাবো।

বইটা লিখতে কতদিন সময় লেগেছে আপনার?
রুজিনা আহাদ: শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, গবেষণা, প্রকাশ মিলে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে।

এ বই থেকে বাংলাদেশি নারীরা কিভাবে অনুপ্রাণিত হতে পারে?
রুজিনা আহাদ: ঠিক যেমন একটা জীবন আমাদের সকলের চাওয়া, যেমন জীবনের স্বপ্ন আমরা দেখি তার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উপাদান আর কৌশল রয়েছে আমার বইয়ে। অতীত এবং বর্তমান সময়ের অনুপ্রেরণামূলক মুসলিম নারীদের কথা এসেছে এ বইয়ে। নাদিয়া হুসেইন নামে ব্রিটিশ বাংলাদেশি এক নারীর অনুপ্রেরণামূক কথাও তুলে ধরা হয়েছে বইয়ে; যাতে পাঠকরা তার সম্পর্ক জানতে পারেন।

সংক্ষেপে বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু বলুন।
রুজিনা আহাদ: কিছুটা তথ্যভিত্তিক, কিছুটা স্মৃতিচারণমূলক। ড্রিম দু’য়া একটা গাইডবুক যেখানে আন্তরিকভাবে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নিউরোসায়েন্সের সর্বশেষ গবেষণা, ইতিবাচক মনোবিজ্ঞান আর মুসলিম নারীদের অনুপ্রেরণামূলক গল্পে সাজানো বইটির উদ্দেশ্য আজকের পৃথিবীতে নারীদের কেবল বাঁচতে শেখানোই নয়, বরং কিভাবে তারা সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছাতে পারে তার পথও দেখানো।
এ বইয়ে অতীত ও বর্তমানের মুসলিম নারীদের সফলতার গল্পগুলো ড্রিম, ডু’য়ার পাঠকদের বড় স্বপ্ন দেখাতে সাহস যোগাবে।

বাঙালি মুসলিম নারীদের জন্য কিছু করার পরিকল্পনা আছে?
রুজিনা আহাদ: মার্চে আমি বাংলাদেশে যেতে চাই, সেখানে আমি বইটার মোড়ক উন্মোচন করব। সেখানে আমি ব্লগার, মন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানাবো।

মার্চে দুটি দিবস আছে, ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস আর ২৭ মার্চ মুসলিম নারী দিবস। আর বাংলাদেশ যেহেতু নারীর ক্ষমতায়নকে সমর্থন করে, তাই এ দুই দিবসের মাস মার্চেই আমি বইটা নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করতে চাই। এটা মূলত ওয়ার্কশপভিত্তিক হবে, আমি চাই সেখান থেকে যেন বাংলাদেশি নারীরা বড় স্বপ্ন দেখার সাহস পায়।

আয়োজনের উদ্দেশ্য কী?
রুজিনা আহাদ: আমার নতুন বই ড্রিম ডু’য়া ডু অনুষ্ঠান প্রমোট করা, পাঠকদের কৌশলগত পরামর্শ দেওয়া আর অন্যদের অনুপ্রেরণা দিতে সক্ষম এমন বাংলাদেশি নারীদের নেটওয়ার্ক তৈরি করা।

লেখক হিসেবে বিভিন্ন দেশে আপনার জনপ্রিয়তা কেমন?
রুজিনা আহাদ: নভেম্বরে বইটার প্রকাশনা অনুষ্ঠানের পর থেকে সারা বিশ্বের পাঠকরাই বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার পাঠকরা বইটা পড়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেছেন।

যেসব বইমেলায় ইতোমধ্যে আপনার বই প্রকাশিত হয়েছে-
রুজিনা আহাদ:
• এমিরেটস লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল ২০২০০
• এমিরেটন পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন
• কায়রো ইন্টারন্যাশনাল বুক ফেয়ার

অন্যানো দেশেও কি কোনো কাজ করছেন?
রুজিনা আহাদ: হ্যাঁ, কয়েকদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার একটি প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি।

বইটার নাম ড্রিম দু’য়া ডু কেন? এ বই লেখার অনুপ্রেরণা পেলেন কোথায়?
রুজিনা আহাদ: ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আমার স্বামী আমাকে একটা জার্নাল উপহার দিয়েছিল। মূলত সেটাই আমাকে প্রথম অনুপ্রেরণা দেয়। ২০১৯ সালে আমরা যখন নতুন একটা দশকে পা রাখছিলাম, আমি ভাবতে শুরু করলাম- ২০২০ সালে আমি নিজেকে ঘিরে কী কী স্বপ্ন দেখেছিলাম, কী কী ভেবেছিলাম আমি। তারপর সেগুলো আমি লেখা শুরু করলাম। প্রথম যা লিখেছিলাম তা হলো ড্রিম দু’য়া ডু। ব্যক্তিগতভাবে এই কথাগুলো আমার কাছে মন্ত্রের মতো। তাই শুরুতেই এটা লেখা আমার কাছে খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয় ছিল। এরপর বিভিন্ন দুয়া নিয়ে গবেষণা শুরু করি, সেগুলো লিখেও রাখি। কয়েকদির পর দেখি কিভাবে দুয়া করতে হয়, কখন দোয়া করার সবচেয়ে ভালো সময়, সেসব নিয়ে বেশ খানিকটা লেখা হয়ে গেছে।

পৃষ্ঠাগুলো উল্টে দেখতে দেখতে গিয়ে মনে হলো এটা দিয়ে তো সুন্দর একটা বই হয়ে যায়। কিশোরী বয়সে আমি যে ধরনের বই পড়তে চাইতাম, ঠিক সেরকম একটা বই। আমি যখন বড় হয়েছি তখন এরকম কোনো বই পাইনি, যা আমার ধর্মচর্চা সহজ করেছে। তাই আমার সন্তানদের জন্য এমন একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম।

মহামারিও আমাকে এ বই প্রকাশ করতে তাড়না দিয়েছে। কোভিডের শুরুর দিকে সব কিছু প্রচণ্ড বিষাদগ্রস্ত হয়ে উঠেছিল। আমি যদি পাশে নাও থাকি, জীবনে সফল হতে আমার সন্তানদের কী কী জানা প্রয়োজন, সেসব ভাবতে শুরু করি।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকাটাও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে আমাকে। আমি দেখেছি তারা কতটা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, বিশেষ করে নারীরা। আমিরাতে এমন অনেক নারী আছে যাদের দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হতে পারি। এমন নারীদের মধ্যে রয়েছেন- অ্যাথলেট জাহরা, মহাকাশচারী নোরা আল মাতরুশি, পাইলট শেইখা মোজাহ আল মাখতুম, রাজনীতিবদ নোরা আল কাবি। কোনো স্বপ্ন পূরণই যে অসম্ভব না, তারা এর প্রমাণ।

অন্য কোনো বই নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
রুজিনা আহাদ: হ্যাঁ, নতুন আরেকটা বই নিয়ে কাজ করছি, এর নাম ফোরটি রুলস অব লাইফ। সুখি এবং সুন্দর একটা জীবন পেতে মানুষের মধ্যে যে ৪০টা অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন, বইটা তা নিয়ে।

নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
রুজিনা আহাদ: পৃথিবীতে আরও নতুন নতুন মুসলিম নারী লেখকের খুব প্রয়োজন। এখন খুব বেশি লেখক নেই। সুযোগ পেলে নারীদের তাদের কাজের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে বড় পাবলিশিং হাউসগুলোর সাথে কাজ করতে আগ্রহী আমি।

বাংলাদেশ থেকে আপনার বই পাওয়ার উপায় কী?
রুজিনা আহাদ: বইবাংলা বা দারাজের মতো কোনো অনলাইন প্লাটফরম খুঁজছি আমরা।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.