Beanibazarview24.com
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা বিবেচনায় রেখে এবার সিলেট নগরীতে কোরবানীর পশুর হাটের জন্য তিনটি উন্মুক্ত স্থান ইজারা দেয়ার উদ্যোগ নেয় সিটি করপোরেশন। এই তিনটি স্থানের মধ্যে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ। খেলার মাঠে পশুর হাট বসানো নিয়ে শিক্ষার্থী, সচেতনমহল ও ক্রীড়া সংগঠকদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে আন্দোলন। আন্দোলনের মুখে সিলেট সরকারি আলীয়া মাদরাসা মাঠ ইজারা দেওয়া থেকে সরে আসে সিটি করপোরেশন। এবার এমসি কলেজ মাঠের ইজারা বাতিলের দাবিতে মাঠে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে এবার জেলা প্রশাসনের অনুমতি স্বাপেক্ষে সিলেট নগরীর সরকারি আলীয়া মাদরাসা মাঠ, এমসি কলেজ মাঠ ও দক্ষিণ সুরমাস্থ ট্রাক টার্মিনালের পাশের মাঠে কোরবানীর পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নেয় সিটি করপোরেশন। হাট ইজারা দেয়ার জন্য দরপত্রও আহ্বান করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠে পশুর হাট বসানোর দরপত্র আহ্বানের পর থেকে আন্দোলনে নামেন সরকারি আলীয়া মাদরাসার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ওই মাঠে পশুর হাট বসানো থেকে সরে আসে সিটি করপোরেশন।
কিন্তু এমসি কলেজ মাঠে পশুর হাট বসানোর ব্যাপারে অনড় থাকে করপোরেশন। ইতোমধ্যে ২০ লক্ষাধিক টাকায় ইজারাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের মাঠ পশুর হাটের জন্য ইজারা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থী, ক্রীড়া সংগঠক ও সচেতন মহল।
তাদের দাবি প্রতিদিন বিশাল এই মাঠে শত শত শিশু, কিশোর ও যুবক খেলাধুলা করে থাকে। কয়েকটি ক্রীড়া একাডেমি নিয়মিত প্রশিক্ষণও করায়। এখানে পশুর হাট বসলে পরবর্তীতে এই মাঠ খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। খেলার মাঠে পশুর হাট না বসাতে গতকাল শনিবার দুপুরে মানববন্ধন করেছে এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। খেলার মাঠে পশুর হাট বসাতে গেলে প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যপারে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমদ জানান, স্থানীয় সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক খেলার মাঠটি কোরবানীর পশুর হাটের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। সরকারি কলেজের মাঠ সরকার বরাদ্দ দিলে কলেজের করার কিছু থাকে না।
সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস চৌধুরী রুহেল বলেন, এমসি কলেজের মাঠে প্রতিদিন শত শত খেলোয়াড় এই মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট অনুশীলন করে থাকে। খেলার মাঠে পশুর হাট বসালে ঐতিহ্যবাহী এই মাঠটি পূর্বাবস্থায় নিয়ে আসা কোনভাবেই সম্ভব হবে না।
সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ম্যানেজার আলী ওয়াসিকুজ্জামান চৌধুরী অনি বলেন, এমসি কলেজের মাঠটি খেলার জন্য খুবই চমৎকার ছিল। কিন্তু অতীতে দু’বার মেলা হওয়ার পর থেকে মাঠটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পানি জমে থাকে। এখন পশুর হাট বসলে মাঠটি খেলাধুলার একদম অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রাজিন সালেহ জানান, এমসি কলেজের মাঠকে কেন্দ্র করে খেলোয়াড়দের অনেক স্বপ্ন জড়িয়ে আছে। এই খেলার মাঠে পশুর হাট বসিয়ে সেই স্বপ্ন নষ্ট করা উচিত হবে না।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.