Beanibazarview24.com
ভ্রমণ পাস নিয়ে সিলেট অঞ্চলের মানুষেরা আসাম সফরে যেতে পারবেন। তেমনিভাবে আসাম বা মেঘালয়ে থাকা ভারতীয় নাগরিকরা তাদের বাংলাদেশি আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে আসতে পারবেন। শনিবার ঢাকায় দুদেশের সীমান্ত র’ক্ষী বা’হিনীর শীর্ষ সম্মেলনে এমনই একটি অগ্রগতির ইঙ্গিত মিলেছে। বাংলাদেশের প্রস্তাবে ভারত নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আগামী নভেম্বর মাসে একান্নতম সীমান্ত সম্মেলন আসামের গৌহাটিতে বসবে বলে আশা করা হচ্ছে । এই সম্মেলনে উক্তরুপ নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে। বিজেবি এবারে বাংলা-ভারত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বসবাসরতদের জন্য দৈনিক ভ্রমণ পাস দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। যাতে তারা ভারতে তাদের আত্মীয়দের দেখতে যেতে পারে। বিএসএফ এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। এবং উভয় বা’হিনী এজাতীয় সামাজিক ভ্রমণ সহজ করার জন্য নিজ নিজ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি প্রক্রিয়া তৈরীর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
গত শনিবার দুদেশের সী’মান্তর’ক্ষী বা’হিনীর মহাপরিচালকদের মধ্যে একটি যৌ’থ দলিলও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে সীমা’ন্ত হ’ত্যাকা’ণ্ড ক’মিয়ে আনা, মা’দকদ্র’ব্য পা’চার রো’ধ, অ’বৈ’ধ অ’স্ত্র এবং মা’নবপা’চার রোধ এবং মা’নবাধিকারের বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়ার ব্যাপারে যৌথ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী একযোগে কাজ করবে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসএফ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছিল। আর বরাবরের মতো এবারেও বিএসএফ নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে সীমা’ন্তে হ’ত্যা ব’ন্ধে তারা সব রকমের চেষ্টাই করবে ।
বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম সী’মান্ত হ’ত্যা ব’ন্ধে সীমা’ন্তে অপ’রাধ দমনে যৌ’থভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন । তবে ভারতের সীমা’ন্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান মি. রাকেশ আস্তানা বলেছেন তিনি স¤প্রতি বিএসএফের মহাপরিচালক পদে যোগদান করেছেন। সীমান্তের সমস্যাগুলো তিনি গভীর মনোযোগের সঙ্গে পর্যালোচনা করে উপযুক্ত পদক্ষে’প নেবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত আলোচনায় সবসময়ই সীমান্তে বিএসএফের গু’লিতে বাংলাদেশি নিহ’ত হওয়ার ঘটনা প্রা’ধান্য পায় । বহুদিন বাদে সেই ধা’রা ফিরে এসেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত হ’ত্যাকা’ণ্ড আগের তুলনায় কিছুটা কমে এসেছিল। কিন্তু এটা নতুন করে তা করোনাকালে বি’স্ময়করভাবে বাড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মা’নবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের গত সাড়ে আট মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন সী’মান্তে স’হিংসতায় মৃ’ত্যু হয়েছে অন্তত ৪০ জনের। এর মধ্যে ৩২ জনের মৃ’ত্যু হয়েছে বিএসএফ সদস্যদের গু’লিতেই।
বিএসএফ সদস্যদের দ্বারা শারী’রিক নি’র্যাত’নের শি’কার হয়ে আরো ৫ জনের মৃ’ত্যু ঘটেছে। গত বছর এই সময় (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর) সীমান্তে বিএসএফের নি’র্যাতনে মা’রা গিয়েছিলেন ২৮ জন বাংলাদেশি । গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে সীমা’ন্তে হ’ত্যা কিছুটা কমলেও ২০১৯ সালে সেটা তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে । আসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে সীমান্তে ১৫৮ জন বাংলাদেশী নিহ’ত হয়। সুতরাং গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৈঠকের আলোচ্যসূচির এক নম্বরে ছিল সীমান্তে নির’স্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের হ’ত্যা বা নানাভাবে জ’খম করার বিষয়টি।
ভারতীয় গণমাধ্যমে রিপোর্ট অনুযায়ী বিএসএফের মহাপরিচালক সীমা’ন্ত হ’ত্যাকা’ণ্ডের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তার ভাষায় হ’ত্যাকা’ণ্ডের বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে রাত সাড়ে ১০ টা থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে । তিনি নি’শ্চয়তা দিয়েছেন যে, হ’ত্যাকা’ণ্ডের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে । এজন্য বিএসএফ-বিজিবি সী’মান্তে যৌথ ট’হল দেবে এবং এলাকার লোকজনের মধ্যে সচে’তনতা বাড়ানোর কাজে সচেষ্ট হবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.