Beanibazarview24.com
বাংলাদেশে ‘ক্লোনাল রাইডার অ্যান্ট’ নামের ভয়ংকর প্রজাতির পিঁপড়ার সন্ধান পেয়েছেন হার্ভার্ড গবেষক ওয়ারিং ট্রাইবল। পিঁপড়াগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা এবং ক্ষতিকর আচরণ। এই প্রজাতির পিঁপড়া বাংলাদেশ থেকেই পৃথিবীতে ছড়িয়েছে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অফিসিয়াল নিউজ সাইট হার্ভার্ড গেজেটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। ওয়ারিং তার অনুসন্ধানের বিস্তারিত গত জুনে বায়োলজি লেটারসে প্রকাশ করেন।
ক্লোনাল রাইডার অ্যান্ট’র আকার ২ মিলিমিটার। এই পিঁপড়া চোখহীন ও হুল সমৃদ্ধ। এর কোনো রানি নেই। শ্রমিক পিঁপড়ার ভ্রূণ গর্ভনিষেক ছাড়াই বেড়ে উঠলে এরা জন্ম নেয়।
পৃথিবীর অধিকাংশ পিঁপড়াই দ্রুত বংশ বিস্তারে সক্ষম ক্ষতিকর প্রজাতির। এদের বেশ কিছু প্রজাতি মানুষের নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়েছে। তাদের সহজাত আচরণ সম্পর্কে বিশদ জানতে পারলে বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন ওয়ারিং।
বাংলাদেশে এ জাতটি শনাক্তের আগে প্রফেসর ড্যানিয়েল জে.সি. ক্রোনাউরের ল্যাবে ম্যাকেনজির সঙ্গে কাজ করার সময় তারা ভারতেও একটি পিঁপড়া শনাক্ত করেন। এটিকে তারা প্রথমে ক্লোনাল রাইডার ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে প্রজাতিটি যে আলাদা, তা বুঝতে পারেন। তখন তারা ল্যাবে পাওয়া জেনেটিক ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ধারণা করেন ১ হাজার ২৪০ মাইলের কাছাকাছি এদের আসল প্রজাতি থাকতে পারে।
ওয়ারিং এবং ম্যাকেনজি ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে আসেন। একটি জার্মান এনজিও তাদের সহায়তা করে। বাংলাদেশে আগে কখনো কেউ এই ধরনের পিঁপড়া শনাক্ত করেনি। তবু অনেকটা বাজি ধরার মতো এ দেশে এসে গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটতে থাকেন ওয়ারিং।
বাংলাদেশে এসে তৌহিদ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীকে দোভাষী হিসেবে সঙ্গে নেন তারা। তিনজন দেশের পশ্চিমাঞ্চলে চলে যান। দিনে ১৬ ঘণ্টা কাজ করে তারা ১৬টি আবাসস্থল পান। এর একটিতে পেয়ে যান প্রায় পাঁচশ’ পিঁপড়া।
জুনে প্রকাশিত আর্টিকেলে ওয়ারিং লিখেছেন, পিঁপড়াগুলোকে নিয়ে কোনোমতে ল্যাবে ফিরে জিন নকশা উন্মোচন করতে সক্ষম হই। নানাভাবে গবেষণার পর নিশ্চিত হই, এগুলোর জন্ম বাংলাদেশেই।
ওয়ারিং বলেন, মানুষের মাধ্যমে পৃথিবীর অন্য দেশে যারা ছড়িয়েছে তাদের বাদ দিয়ে নিজেদের জন্মস্থানে পিঁপড়াগুলোকে শনাক্ত করা গেলে সহজাত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরও ভালো জানা যায়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.