Beanibazarview24.com
যুক্তরাষ্ট্রের কনিষ্ঠতম মুসলিম কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সবার নজর কাড়েন শিকাগোর বাসিন্দা বুশরা অ্যামিওয়ালা। মাত্র ২১ বছর বয়সে স্কোক স্কুল বোর্ডের সদস্য হিসেবে নিজের নাম লিখিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ‘আওয়ার আমেরিকা : উইম্যান ফরওয়ার্ড’ নামের হুলু ডকুমেন্টারিতে তাঁর কৃতিত্ব তুলে ধরা হয়।
কয়েক দশক আগে বুশরার বাবা-মা পাকিস্তারেন করাচি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের অভিবাসন গড়ে তোলেন। প্রথম দিকে আমেরিকায় এসে বুশরার বাবা কাপড়ের দোকানসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন।
বুশরা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ওই সময় বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল তাদের মেয়ে একদিন আমেরিকার সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করবে। তাঁদের ভাবনা ছিল, একদিন ছোট্ট মেয়েটি মুসলিম তরুণী ও নারী সমাজের কাছে আদর্শ হয়ে উঠবে।
বুশরা ১০ বছর বয়স থেকে সপরিবারে ইলিনয়সের স্কোক কুক কাউন্টিতে বসবাস শুরু করেন। এখানের নাইলস নর্থ হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ডেপাউল বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করেন। তা ছাড়া সমাজসেবা ও সরকারি নীতি বিষয়েও পড়াশোনা করেন।
২০১৮ সালে বুশরা স্কোকি ইলিনয় শহরের প্রাথমিক নির্বাচনে কাউন্টি বোর্ড অব কমিশনার্সের কনিষ্ঠতম ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট লাভ করেন। এ নির্বাচনে তিনি ল্যারি সাফরেডিনের কাছে হেরে যান। এরপর সাফরেডিনের পরামর্শে ইলিনয়ের শিক্ষা অফিসের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হোন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সমাজসেবা ও শ্রেষ্ঠ তরুণ হিসেবে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন সম্মাননা পুরস্কার এশিয়ান আমেরিকান কোয়ালিশন অব শিকাগো (এএসিসি) লাভ করেন।
ডেপাউল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সর্বপ্রথম জাতীয় গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে আসেন একজন শিক্ষার্থী হিসাবে প্রচারণা শুরুর পর। ২০১৮ সালে গ্ল্যামার ম্যাগাজিনের ‘কলেজ উইমেন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে নির্বাচিত হন। তাঁর সাফল্যের গল্প ও সম্ভাবনা নিয়ে পিবিএস ডকুমেন্টারি ‘অ্যান্ড শি কুড বি নেক্সট’-এ আলোকপাত করা হয়।
‘চেঞ্জিং আমেরিকা’র এক সাক্ষাৎকারে বুশরা বলেন, ‘সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে শালীনতা ও উদার মনোভাব নিয়ে নারীরা নিজেদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন, তা সত্যিই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে’।
বুশরা বলেন, ‘নারী হিসেবে আমাদের পরিচয় বিশেষত নিজেদের পোশাক ও একজন মুসলিম নারী হিসাবে হিজাবকে অনেক ক্ষেত্রে খাটো করে উপস্থাপন করা হয়। তাই সব সময় মানুষকে বলতে শোনা যায়, মুসলিম তরুণী সরকারি পদপ্রার্থী হয়ে কাজ করছে। অথচ তারা আমার নামও জানেন না’।
বুশরা সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন। প্রথমে তিনি সমাজের দারিদ্র্য, ক্ষুধা, গৃহহীন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং শিক্ষাগত বৈষম্যের বিষয়গুলো নিয়ে অগ্রগাধিকার ভিত্তিতে কাজ করবেন তিনি।
বর্তমানে বুশরা স্থানীয় রাজনীতে সম্পৃক্ত থাকলেও ধীরে ধীরে জাতীয় পর্যায়ে নিজের অবস্থানের জানান দিয়েছেন ও স্থায়ী প্রভাব তৈরি করছেন তিনি। বিশেষত কংগ্রেস উইম্যান ইলহাম ওমরের অনুপ্রেরণা বুশরাকে নিজেকে সামনে এগিয়ে চলতে সহায়তা করে।
সূত্র : এবিসি সেভেন শিকাগো
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.