Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

খেয়ে না খেয়ে মানুষ করা ছেলেটি এখন পঙ্গু মায়ের খোঁজখবর নেয় না


২৫ বছর আগে তিন বছরের শাহজাহানকে রেখে মারা যান বাবা ইয়াছিন হাওলাদার। বসতভিটা ছাড়া কিছুই রেখে যাননি তিনি। স্ত্রী শাহাবানু অন্যের বাসায় কাজ করে ছেলে শাহজাহানকে লালন-পালন করেন। খেয়ে না খেয়ে ছেলেকে বড় করেন মা। কিন্তু ছেলে বড় হয়ে মাকে রেখে চলে যান।

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা শাহাবানু। দুঃখে-কষ্টে চলে তার সংসার। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে হামাগুড়ি দিয়ে চলেন তিনি। পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই।

শাহাবানুর কষ্টের দিনগুলোতে সহায়তা করেছেন প্রতিবেশীরা। এরই মধ্যে ১০ বছর সহায়তা করেছেন এমন দাবি তুলে সহায়তার অর্থ লিখে রাখেন এক প্রতিবেশী। এরপর সহায়তার অর্থ শাহাবানুর কাছে ফেরত চান তার প্রতিবেশী। কিন্তু ওই অর্থ ফেরত দেয়ার মতো অবস্থা ছিল না শাহাবানুর। এ অবস্থায় তার বসতভিটার জমির দিকে নজর দেন প্রতিবেশী। পরে ওই প্রতিবেশীকে জমি লিখে দেন শাহাবানু। ছাড়তে হয় তাকে বসতভিটা। প্রতিবেশীকে জমি লিখে দেয়ার ক্ষোভে ১৪ বছরের ছেলে শাহজাহান মাকে ফেলে চলে যায়। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংগ্রাম করছিলেন শাহাবানু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্যের বাড়িতে কাজ করার সময় পুকুরঘাটে হোঁচট খেয়ে কোমরে আঘাত পান শাহাবানু। সেই থেকে আর কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। এখন চলাফেরা করতে অক্ষম। বর্তমানে তার বয়স ৭০ বছর। হাঁটু ও দু’হাতে ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করেন তিনি।

বিষয়টি জেনে স্থানীয় ইউপি সদস্য তাকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করে দেন। চলাফেরায় অক্ষম হওয়ায় এক প্রতিবেশীকে ১২০ টাকা দিয়ে বয়স্কভাতার টাকা উত্তোলন করান। অন্যের বাড়িতে থাকেন তিনি।

শাহাবানু বলেন, আমাকে ছেড়ে ছেলে শাহজাহান চলে গেছে। থাকে পাশের গ্রামে। বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শান্তিতে আছে। কিন্তু আমার খোঁজখবর নেয় না। পরনে একটা কাপড় নেই আমার। ছেঁড়া কাপড়ে শরীর ঢেকে চলতে হয়। হাঁটতে পারি না, হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হয়। ছেলে খোঁজ না নিলেও অভিযোগ দেই না কারও কাছে। সন্তান তো আমার। পেটে ধরেছিলাম, কষ্ট করে বড় করেছি। এজন্য অভিশাপও দেই না।

শাহাবানু বলেন, কেউ যদি আমার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতো, থাকার একটু ব্যবস্থা করে দিতো; খাবার এবং পরনের কাপড় দিতো তাহলে মরার আগে একটু স্বস্তি পেতাম।

পুটিয়াখালীর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ শাহাদাত বলেন, শাহাবানুর ছেলে থাকতেও নেই। ছেলে শাহজাহান মাকে ছেড়ে চলে গেছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখে আছে তার ছেলে। কিন্তু মা শাহাবানু কষ্টে আছে। তার থাকার স্থান নেই, খাবারের ব্যবস্থা নেই। এমনকি পরনের কাপড় নেই। হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফারুক মোল্লা বলেন, শাহাবানু অসহায় মানুষ। চলতে পারেন না, খাইতে পারে না, নেই পরনের কাপড়। তাকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করিয়ে দিয়েছি। তার পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানাই।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.