Beanibazarview24.com
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক বাবা ইমরান শরীফের কাছেই বড় দুই শিশু সন্তানকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত তার আদেশে বলেছেন- জাপানি মা এরিকো নাকানো বছরে তিনবার বাংলাদেশে এসে ১০ দিন করে দুই শিশুর সঙ্গে থাকতে পারবেন। এছাড়াও প্রতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ পর ভিডিও কলে শিশুরা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।
রবিবার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
দেশে থাকাবস্থায় মায়ের খরচ বাবাকেই বহন করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি এরিকো নাকানোকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ইমরান শরীফকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, ওই দম্পতির ছোট আরেকটি শিশুকে নিয়ে করা বাবার রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
আদালতে শিশুদের বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ফাইজা মেহরিন। অন্যদিকে জাপানি মায়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে দুই মেয়েকে হাইকোর্টে হাজির করাতে রিট করেছিলেন জাপান থেকে আসা ডা. এরিকো নাকানো। ওই রিটের প্রেক্ষিতে দুই মেয়েকে হাজিরের পর এখন গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় দিন-রাত হিসাব করে এরিকো ও ইমরান শরীফ মেয়েদের দেখাশোনা করছেন।
গত ১৯ আগস্ট শরীফ ইমরানের জিম্মায় থাকা দুই শিশু সন্তানকে ৩১ আগস্ট হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। শিশুদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এসব আদেশ দেন।
পরে দুই শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগে তাদের মা পৃথক মামলা দায়ের করলে শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। এরপর তাদেরকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিলো।
এরপর শরীফ ইমরানের জিম্মা থেকে দুই শিশু সন্তানকে সিআইডি কর্তৃক উদ্ধারের পর গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে উন্নত পরিবেশে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তাদের মা ও বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাবা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন বলেও আদালত সময় বেধে দিয়েছিলেন। এছাড়াও ৩১ আগস্ট শিশুদেরকে হাইকোর্ট হাজির করতে এবং এ সময়ের মধ্যে আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বিষয়টি সমাধান করতে ভূমিকা রাখার প্রচেষ্টা চালাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের দুই শিশুকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিবর্তে গুলশানস্থ বাসায় একসঙ্গে ১৫ দিন বসবাস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঢাকার সমাজ সেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক পদের একজনকে বিষয়টি তদারকির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারকে তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়।
ওই সময়ের মধ্যে তাদেরকে বিষয়টির সুরাহা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন আদালত। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় দুইপক্ষের আইনজীবীদের আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এ বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় মামলাটি পুনরায় শুনানিতে ওঠে।
এদিকে জাপানে থাকা তার তৃতীয় ছোট কন্যাকে হাজির করানোর ও দেখা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক আরেকটি রিট দায়ের করেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.