Beanibazarview24.com
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও পৌরসভার অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। উপজেলার সুরমা নদীতীরবর্তী আলীনগর ও চারখাই ইউনিয়ন এবং কুশিয়ারা নদীতীরবর্তী দুবাগ, শেওলা, কুড়ারবাজার, মাথিউরা এবং সোনাই নদীতীরবর্তী তিলপাড়া, মোল্লাপুর, লাউতা ও মুড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
কবলিত এলাকার প্রধান সড়কসহ উপজেলা ও গ্রামীণ সড়কের ৮০ ভাগ তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার দুই লাখ মানুষ।
বন্যাকবলিত হওয়ায় উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ। রবিবার সকাল থেকে কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুশিয়ারা নদীর শেওলা ইউনিয়নের কাকরদিয়া ও আলীপুর এলাকার ডাইক ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। নদীর ভাঙা ডাইক মেরামত করছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শেওলা সাবস্টেশন এলাকা। তবে পল্লী বিদ্যুৎ স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বিবেচনা করে সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় সাবস্টেশনটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসন থেকে বন্যার্তদের জন্য ৩৩ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ দেড় লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ সহায়তার মধ্যে ২২ মেট্রিক টন চাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। একই সাথে বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করবে উপজেলা প্রশাসন।
বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রস্তুত রাখা ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে রবিবার সকাল পর্যন্ত ৮৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আশ্রিত পরিবারের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসহ দুর্গত এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো হচ্ছে।
বন্যাকবলিত কুড়ার বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তুতিউর রহমান তুতা বলেন, গতকাল থেকে আজ রবিবার কুশিয়ারা নদীর পানি আরো বেড়েছে। আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীর পানি পাড় উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের সংখ্যা আজ আরো বুদ্ধি পেয়েছে। আমার জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর জানান, কবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সাথে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষকসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে বিয়ানীবাজার উপজেলাসহ আশপাশ এলাকায় আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার দুই লাখের বেশি মানুষ।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.