Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

উচ্চ আয়ের দেশে প্রবাসী কর্মীদের আয় কমছে: আইএলও


উচ্চ আয়ের দেশে কর্মরত প্রবাসীদের আয় একই ধরনের কাজে নিযুক্ত সেসব দেশের নাগরিকদের তুলনায় কমছে। এই কমের পরিমাণ গড়ে ১৩ শতাংশ। তবে, ৪২ শতাংশ পর্যন্তও আছে।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা- আইএলও প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন চিত্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইপ্রাসের নাগরিকরা দেশের ভেতরে কাজ করে যে পরিমাণ আয় করেন, সে দেশে প্রবাসী শ্রমিকরা কাজ করে সেই তুলনায় ৪২ শতাংশ কম আয় করেন। ইতালিতে এই পার্থক্য ৩০ শতাংশ আর অস্ট্রিয়ায় তা ২৫ শতাংশ। তবে, ফিনল্যান্ডে এই পার্থক্য গড় হিসাবের নিচে, দেশটিতে এই পার্থক্য ১১ শতাংশ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নে তা ৯ শতাংশ।

গত পাঁচ বছর ধরেই উচ্চ আয়ের দেশে এই আয়ের পার্থক্য বেড়ে চলছে। যেমন ২০১৫ সালে ইতালিতে এই পার্থক্য ছিল ২৭ শতাংশ; এ বছর এসে এই পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। পর্তুগালে ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ শতাংশে আর ২০১৫ সালে আয়ারল্যান্ডে এই পার্থক্য ১৯ শতাংশ ছিল; বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশে।

প্রতিবেদনটি বলছে, নিজ দেশের নাগরিক ও প্রবাসীদের আয়ের এই পার্থক্য এটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, প্রবাসীদের জন্য উচ্চ আয়ের দেশ ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে (কম লাভজনক) উঠছে। কারণ, এসব দেশে ২৭ শতাংশ প্রবাসী করেন চুক্তিভিত্তিক আর ১৫ শতাংশ করে পার্ট টাইম হিসেবে।

কৃষি, মৎস্য আহরোণের মতো প্রধান প্রধান খাতে প্রবাসী শ্রমিকরা কম সুযোগ পান যেখানে খনি ও খনন কাজে বেশি সুযোগ পান প্রবাসীরা। এছাড়া, উৎপাদন, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি ও নির্মাণখাতে ভিন্ন দেশের নাগরিকদের বেশি সুযোগ দেয় উচ্চ আয়ের দেশগুলো।

আইএলও’র মাইগ্রেশন শাখার প্রধান মিচেল লেইটন বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রত্যেকটা দেশেই প্রবাসী শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার হন যা এই করোনা মহামারি আরও প্রকট করে তুলেছে। প্রবাসী কর্মীরা প্রায়ই বেতন-ভাতা, চাকরিপ্রাপ্তির সুযোগ ও প্রশিক্ষণ সুবিধা, কর্মক্ষেত্রের অবস্থা, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক সংগঠন করার সুবিধা প্রাপ্তির দিক থেকে শ্রমবাজারে বৈষম্যের বলি হন। যদিও অনেক দেশেই তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তবে, তারা সে সব দেশের ২য় শ্রেণির নাগরিক হিসেবেও গণ্য হয় না।

এই দুই শ্রেণির কর্মীর আয়ের পার্থক্যের কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়কে বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি।

দক্ষতার অমিল:

উচ্চ আয়ের দেশে কর্মরত প্রবাসীরা একই ধরনের কাজে সেদেশের নাগরিকদের তুলনায় যে কম আয় করেন তার বড় একটি কারণ হল দক্ষতার অমিল।

প্রবাসীরা সাধারণত কম দক্ষতা ও কম বেতন-ভাতার কাজ করে থাকেন। যা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে মানানসই নয় এবং এই পার্থক্য করা শুরু হয় তাদের বাছাই করা থেকেই। এমনকি উচ্চ শিক্ষিত প্রবাসীরাও দক্ষতার বিচারে ভালো কাজের সুযোগ কম পান।

যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও ফিনল্যান্ডে দেখা যায়, দেশ দুটির সেকেন্ডারি স্কুলগুলোতে ৭৮ থেকে ৯৮ ভাগ প্রবাসীরা চাকরির সুযোগ পান অথচ উচ্চ দক্ষ বা আধা দক্ষ কাজে ৩৫ শতাংশ প্রবাসী সুযোগ পান। এই হার বড়জোড় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে; এর বেশি নয়।

আবার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে এই চিত্র পুরোপুরি উল্টো। এসব দেশে সাময়িকভাবে হলেও প্রবাসীরাই উচ্চদক্ষতার কাজগুলো করে থাকে। এবং ওই সব দেশের নাগরিকদের তুলনায় তারা প্রতিঘণ্টায় ১৭.৩ শতাংশ বেশি আয় করেন।

প্রবাসী নারী দ্বিগুণ বৈষম্যের শিকার:

উচ্চ আয়ের দেশে কর্মরত প্রবাসী নারীরা একদিকে দক্ষতার অভাবের কারণে বঞ্চনার শিকার হন আবার তারা নারী হিসেবেও বঞ্চনার শিকার হন। একই ধরনের কাজ করে প্রবাসী নারীরা কর্মরত দেশের পুরুষ কর্মীদের তুলনায় প্রতি ঘণ্টায় ২১ শতাংশ কম আয় করেন। এসব দেশে এমনিতেই নারীরা, পুরুষের তুলনায় ১৬ শতাংশ কম আয় করেন। তবে, তা প্রবাসী নারী কর্মীদের গড় আয় বৈষম্যের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এর একটা বড় কারণ হতে পারে যে, প্রবাসী নারীরা সাধারণত ঘরের কাজে বেশি নিয়োগ পান। হিসাব বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত নারী শ্রমিকদের ৭৩ শতাংশ অর্থাৎ ৮৪ লাখ ৫০ হাজার নারী ঘর-গৃহাস্থলির কাজ করে থাকেন। এক্ষেত্রেও উচ্চ আয়ের দেশের নাগরিকরা নিজ দেশে এধরনের কাজ করে ১৯ শতাংশ বেশি আয় করেন থাকেন।

করোনার প্রভাব:

করোনা মহামারিতেও প্রবাসী শ্রমিকরাই তুলনামূলক অধিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তারা স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। লাখ লাখ প্রবাসী শ্রমিক কাজ হারিয়ে নিজ দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

ওই প্রতিবেদনে আইএলও জানিয়েছে, আসলে এই বৈষম্য হিসাবের শেষ চিত্র পাওয়া যায়নি। তবে, নিজ দেশের কর্মী ও প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে বিদ্যমান আয়ের পার্থক্য চাকরির বাজারকে জটিল করে তুলছে এবং এটা অনুমেয় যে আগামীতে এই দুই শ্রেণির মানুষের আয়ের পার্থক্য আরও বাড়বে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.