Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

র.হস্যময় কোরিন্থ খাল, আ.ত্মহ.ত্যা করতে ছুটে যান শত শত মানুষ


কোরিন্থ খাল হলো মানুষের তৈরি বিশ্বের সবথেকে গভীরতম জলপ্রপাত। ছোট ছোট জাহাজ যাতায়াতের জন্য খালটি নির্মিত হয়েছে। নীল স্বচ্ছ পানির স্তর থেকে খালের দেয়াল প্রায় ৩০০ ফুট উঁচুতে। এটি লম্বায় ছয় দশমিক তিন কিলোমিটার বা তিন দশমিক নয় নয়। কোরিন্থ খাল জলপথটি কোরিন্থের সংকীর্ণ ইস্তমাসকে অতিক্রম করে কোরিন্থ উপসাগরকে সরোনিক উপসাগরের মাধ্যমে এজিয়ান সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

এর পাশাপাশি খালটি গ্রীক মূল ভূখণ্ড থেকে পেলোপনিসকে পৃথক করে একটি উপদ্বীপে পরিণত করে রেখেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠে খালটি ইস্তমাসের মাধ্যমে খনন করা হয়েছিল এবং এর কোনো তালা নেই। এটির দৈর্ঘ্য ছয় দশমিক চার কিলোমিটার বা চার মাইল এবং এর ভিত্তিতে মাত্র ২১ দশমিক চার মিটার বা ৭০ ফুট প্রশস্ত। এর কিছুটা অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে এবং এটি মূলত পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।

খালটির দুই ধারে ৩০০ ফুট উঁচু পাথরের দেয়াল ঘিরে রয়েছে। এই খালটি ওই অঞ্চলে চলাচলকারী একটি ছোট জাহাজের প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পথ কমিয়ে দেয়। সর্বোচ্চ ৫৮ ফুট প্রশস্তের জাহাজ সহজেই এই খাল দিয়ে যেতে পারে। এখান থেকে কোনো বড় আকারের জাহাজ চলাচল করতে পারে না। এখানে মূলত ছোট ছোট জাহাজ চলাচল করতে পারে।

রোমান সম্রাট নিরো ৬৭ খ্রিস্টাব্দে এই খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার প্রায় ছয় হাজার ক্রী.তদা.স এই কাজটিতে প্রথম হাত দেয়। তবে তিনি মা.রা যাওয়ার আগে কেবল এর দৃশ্যটি আছড়াতে পেরেছিলেন। আধুনিক যুগের অটোমান সাম্রাজ্য থেকে গ্রিসের স্বাধীনতার পরপরই এই ধারণাটি প্রথমে গুরুত্ব দিয়ে ১৮৩০ সালে প্রস্তাব করা হয়েছিল। এই খালের নির্মাণকাজ ১৮৮০ সালে শুরু হয়েছিল।

রহস্যময় কোরিন্থ খাল, আত্মহত্যা করতে ছুটে যান শত শত মানুষ
রহস্যময় কোরিন্থ খাল, আত্মহত্যা করতে ছুটে যান শত শত মানুষ

আর ১৩ বছর কাজ চলার পর ১৮৯৩ সালে খনন কাজ সমাপ্ত হয়। কৌশলগত গুরুত্বের কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খালটি সাময়িকভাবে নষ্ট করে দেয়া হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের আর্মির সাহায্যে ১৮৪৮ সালের জুলাই মাসে আবার কাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ১১ হাজার জাহাজ প্রতি বছর এই খালটি অতিক্রম করে।

৭৯ মিটার পর্যন্ত খাড়া লম্বা দেয়ালগুলোর গভীরতম খালের কয়েকটি জায়গায় সরু ক্যানেলটি ২৫ মিটারের কম প্রশস্ত। গ্রীসের সবথেকে আকর্ষণীয় এরিয়াল সাইটের এই সংকীর্ণ এবং গভীর ক্যানেল পার হওয়ার ক্ষেত্রে জাহাজগুলোর সাধারণের থেকে বেশি সময় লাগে। কোরিন্থ খাল সারা বিশ্বের দশটির মধ্যে একটি এবং সমস্ত গ্রীসের সবচেয়ে কুখ্যা.ত আ.ত্মহ.ত্যার জায়গা।

আইফেল টাওয়ারের মতো এটি কেবল স্থানীয়দেরই নয়, সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এই খালের উপরে ব্রিজের রেলিংয়ে রয়েছে হাজার হাজার ঝুলন্ত তালাসহ চিরকুট। আসলে এগুলো সবই হচ্ছে সু.ই.সা.ইড নোট। কেউ চাইলে তা.লাবদ্ধ সু.ইসা.ইড নোট রেখে নিজের জীবন নিজেই আ.ত্মহ.ত্যার মাধ্যমে মৃ.ত্যু ঘটাতে পারে। নীলসাগর গর্ভে হারিয়ে যাওয়া মানুষের কোনো হদীস আর কখনোই মেলে না এবং এটি গ্রীক সরকার দ্বারা অনুমোদিত।

২০১৯ সালে বিশ্বের অন্যতম বড় জাহাজ, যার নাম দ্য এমএস ব্রিমার এই ক্যানেল সম্পূর্ণ পাড়ি দেয়ার ঘটনা বিশ্বমিডিয়ায় আলোড়ন ফেলেছিল। ওই বছরের ২৭শে সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের সাউদাম্পটন থেকে যাত্রা করা জাহাজটি ৯ই অক্টোবর কোরিন্থ খাল অতিক্রম করে। ব্রিটেনের ফ্রেডের মালিকানাধীন জাহাজটি ১৭৩ বছরের পুরনো। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৬৪৩ ফুট বা ১৯৬ মিটার। আর ওজন ২৪ হাজার ৩৪৪ টন।

২২ দশমিক ৫ মিটার বা ৭৩ দশমিক ৮ ফুট প্রস্থের জাহাজটি পেরিয়ে যাওয়ার সময় এর দুই পাশে মাত্র দুই তিন ফুট ফাঁকা ছিল। তবে যাত্রাপথে খালের কোনো প্রান্তেই ওই জাহাজের কোনো আঘাত লাগেনি। কোরিন্থ খাল দিয়ে পার হওয়ার সময় ওই জাহাজে ১২০০ জন যাত্রী ছিল। জাহাজটিকে একটি টাগবোট টেনে নিয়ে খালটি পার হয়েছে।
রহস্যময় কোরিন্থ খাল, আত্মহত্যা করতে ছুটে যান শত শত মানুষ
রহস্যময় কোরিন্থ খাল, আত্মহত্যা করতে ছুটে যান শত শত মানুষ

জাহাজের অপারেটর ক্লেয়ার ওয়ার্ড বলেন, ওলসেন ক্রুজ লাইনের ১৭১ বছরের ইতিহাসে এটি অনেক আনন্দ ও উত্তেজনার যাত্রা ছিল। এই যাত্রার রোমাঞ্চ সেই সময় জাহাজের যাত্রীদের মধ্য ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীরা টুইট করে জাহাজের ওই ক্যাপ্টেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যাত্রাপথে আমরা চাইলে গাছ, লতাপাতা ছুঁয়ে দেখতে পারতাম।

এই খালটি নিয়মিত পরিদর্শন করা হয় যাতে খারাপ দিকগুলো সুরক্ষিত এবং নিরাপদ থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় কোরিন্থ খাল ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সামুদ্রিক সব ধরনের পরিবহনের জন্য বন্ধ রয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে খালটি ভূমিধ্বসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা সমুদ্র উপকূলকে বিপ.জ্জ.নক করে তুলেছিল। বর্তমানে মেরামত কাজ চলমান আছে। তবে এটি কবে শেষ হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো সময়সূচী নেই। গ্রীক সরকার এর মেরামত ব্যয় নয় বিলিয়ন ইউরো ধরে রেখেছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.