Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মৃ’ত দুই বোনের জমজ হয়ে পুনর্জন্মের রহস্যময় ঘটনা


ইংল্যান্ডের হেক্সামে একটি সাধারণ পারিবারে জন্ম নেয় দুই বোন। একজন ৬ বছর বয়সী জ্যাকলিন অন্যজন ১১ বছরের জোয়ানা। দুই বোনের মধ্যে খুব মিল ছিল। বাবা জন পোলক এবং মা ফ্লোরেন্স পোলক তাদের দুই মেয়েকে নিয়ে খুব সুখেই ছিলেন।

তবে ১৯৫৭ সালের ৫ মে তাদের জীবনে ঘটে যায় মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা। জোয়ানা এবং জ্যাকলিন তাদের পাশের বাড়ির এক বন্ধুর সঙ্গে গির্জায় যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। দুই মেয়েকে একসঙ্গে হারিয়ে জন আর ফ্লোরেন্স পাগলের মতো হয়ে যায়। শোকে তারা এই জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যায়।

জন সবসময় প্রার্থনা করত এবং চাইত তার মেয়েরা আবার ফিরে আসবে। এমনকি ফ্লোরেন্সকেও সে সবসময় বলত একথা। ফ্লোরেন্স এ কথা তেমন আমলে নেয়নি কখনো। সে ভাবত একসঙ্গে দুই মেয়েকে হারানোর শোক জন এখনো ভুলতে পারেনি। তাই উল্টা পাল্টা কথা বলত।

এর পরের বছরই ফ্লোরেন্স গর্ভবতী হন। ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায় ফ্লোরেন্সের গর্ভে দুটি জমজ কন্যা সন্তান রয়েছে। এবার জনের ভাবনা আরো জোরালো হয়। ১৯৫৮ সালের ৪ অক্টোবর জন্ম নেয় কন্যা শিশু দুটি। তাদের নাম দেয়া হয় গিলিয়ান এবং জেনিফার।

শিশু দুটি বড় হতে থাকলে জন এবং ফ্লোরেন্স লক্ষ্য করেন অদ্ভূত কিছু বিষয়। তারা লক্ষ্য করেন গিলিয়ান আর জেনিফারের আঁচার আচরণ হুবহু তাদের মৃ’ত মেয়ে জেনিফার আর জ্যাকলিনের মতো। জেনিফারের কপালে জ্যাকলিনের দাগের মতো একই চিহ্ন ছিল। তার কোমরে একটি জন্ম চিহ্নও ছিল যা জ্যাকুলিনেরও ছিল। গিলিয়ানদের এই চিহ্নগুলো ছিল না।

জমজ শিশুদের বয়স যখন তিন মাস তখন তারা সবাই হুইটলি বেতে চলে যায়। যমজ শিশু দুটি একটু বড় হওয়ার পর তাদের বাবা মায়ের কাছে তাদের খেলনা চায়। যেগুলো জোয়ানা এবং জ্যাকলিনের ছিল। তারা খেলনাগুলোর সঠিক নাম বলতে পেরেছিল এবং সঠিক উপায়েই খেলছিল।

জমজ শিশু দুটির বয়স যখন চার বছর তখন তারা আবার হেক্সামে ফিরে আসে। তারা তাদের বড় বোনদের সম্পর্কে কোনো কিছুই জানত না। আর এই খেলনাগুলো তারা আগে কখনোই দেখেনি। তাহলে কীভাবে জানলো এগুলোর কথা। এমনকি জেনিফার আর গিলিয়ান তাদের বড় দুই বোন জোয়ানা আর জ্যাকলিনের স্কুলে গিয়ে বলেছিল এটা তাদের স্কুল।

মৃ'ত দুই বোনের দুর্ঘটনার সংবাদ
মৃ’ত দুই বোনের দুর্ঘটনার সংবাদ

জন এবং ফ্লোরেন্স খেয়াল করেন একদিন জেনিফার গিলিয়ানের কোলে মাথা রেখে শুয়ে ছিল। আর গিলিয়ান তাকে গাড়ি বলছিল, কখনো গাড়ির কাছে যাবে না। জোয়ানা আর জ্যাকলিন যেভাবে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল সে কথাই বলছে তারা। এ কথা কীভাবে জানলো ছোট এই জমজ দুই বোন? কারণ সেখান থেকে অনেক আগেই এই দম্পতি চলে এসেছে।

এখানকার কেউই তাদের আগে দুটি মেয়ে মারা গিয়েছে একথা জানত না। এর একমাস পর একদিন রাস্তায় গাড়ি দেখে দুইজনই চিৎকার করতে থাকে। আর বলতে থাকে গাড়ি তাদের মেরে ফেলবে। পাঁচ বছর বয়সের পর শিশু দুটি সব কিছু ভুলে যায়। তারা সাধারণ শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠতে থাকে।

ডাঃ আয়ান স্টিভেনসন, একজন মনোবিজ্ঞানী তখন এই ঘটনাটি নিয়ে অনেক গবেষণা চালান। স্টিভেনসন নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সবকিছু শুনে। তিনি বলেছিলেন, জমজরা দুই বোন তাদের মৃ’ত বোনদের স্মৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল। জ্যাকলিনের প্রভাব ছিল জেনিফারের উপর। আর জোয়ানার স্মৃতি ছিল জেনিফারের মধ্যে।পাঁচ বছর বয়সের পর শিশু দুটি স্বাভাবিক হয়ে গেলেও স্টিভেনসন তাদের সঙ্গে অনেকদিন ছিলেন।

তিনি এদের ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নজরদারিতে রাখেন। তিনিও এক সময় এই সব কিছু বিশ্বাস করে নেন। কারণ হিসেবে তিনি ধরে নেন, শিশু দুটি গর্ভে থাকাকালীন ফ্লোরেন্স তার মৃ’ত মেয়েদের কথা ভাবত। তাই জিনগতভাবে তারা এসব কিছু পেয়েছিল। তবে জমজ এই দুই বোনের সঙ্গে মৃ’ত বোনের স্মৃতির ঘনিষ্টতার বিষয়টি আজো রহস্য হয়েই রয়েছে।

সূত্র: মিস্টেরিয়াসফ্যাক্টস

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.