Beanibazarview24.com
প্রতিদিনের মত হাঁসের পাল নিয়ে বিলের মাঝখানে যায় ফারুক মিয়া (১৮)। সেখানে গিয়ে দেখতে পান একটি উচু মাটির টিলায় ঝোঁপের আড়ালে রয়েছেন ৯০ বছরের এক বৃদ্ধা নারী। মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ শরীরে ও আশপাশে ঘিরে ধরেছে তাকে।
কাছে গিয়ে দেখতে পান অস্পষ্ট শব্দ করছেন ওই নারী। পরক্ষণই প্রতিবেশী রুবেলের সহযোগিতায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন ফারুক। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে আধমরা অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার উত্তর মুশুলী গ্রামের ভাররা বিলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই বিলে লোকজন কম যায়। তার উপর গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় এলাকার লোকজনের বিলে যাওয়া আসা অনেকটাই কমে গেছে। এই অবস্থায় গত তিন দিন ধরে ওই নারী বিলে পড়ে ছিল। তার শরীর কঙ্কাল সার, ডান চোখের উপরে মাথার একাংশসহ বড় টিউমার।
লালচে হয়ে মাংস পেন্ডির মতো ডান চোখ বের হয়ে যাচ্ছে। দাঁড়ানোর মতো ক্ষমতা নেই তার। পরে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে নান্দাইল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুবেল মিয়া ফসলি খেতে জমে থাকা পানি ভেঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে আধমরা অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
জরুরি সেবায় ফোন করা রুবেল জানান, শনিবার দুপুরে তার প্রতিবেশী ফারুক বিলের মাঝখানে থেকে মোবাইলে ফোন করে ঘটনাটা জানালে নিজ চোখে দেখার জন্য আমি বিলে যাই। পরে ঘটনা দেখে তাৎক্ষণিক ৯৯৯-এ ফোন করি। তখন পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন আব্দুল কাদির নামে এক ব্যক্তি।
তিনি জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে জিজ্ঞাস করলে তিনি জানান, তার ছেলে তাকে গত তিন দিন আগে চোখমুখ বেঁধে এখানে ফেলে রেখে যায়। আসবে বলে পরে আর আসেনি।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার উপ-পরিদর্শক রুবেল মিয়া বলেন, ‘বৃদ্ধা ওই নারীকে তার ছেলে রেখে গেছে বলে জানিয়েছেন। ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ভাররা বিলের মাঝখানে একটি ঝোঁপের আড়ল থেকে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করি। তার শরীরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’
নান্দাইল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বয়সের ভারে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই নারী এমনিতেই গুরুতর অসুস্থ্য। এর মধ্যে খাওয়া দাওয়া না করায় প্রেসার কমে গিয়ে শরীর খারাপ হয়ে গেছে।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.