Beanibazarview24.com






ফুটবল বিশ্বকাপ আসলেই উন্মাদনায় ভাসেন ফুটবলপ্রেমী বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা। আসন্ন কাতার বিশ্বকাপকে সামনে রেখেও ভক্তদের মাঝে চলছে ভিন্ন কিছু করার প্রতিযোগিতা। কেউ প্রিয় দলের পতাকার রঙে গাড়ি রঙ করে, কেউবা বাড়ির ছাদে দীর্ঘ পতাকা উড়িয়ে, আবার একদল ভক্ত মিলে কয়েক কিলোমিটার পতাকা টাঙিয়ে আসন্ন বিশ্বকাপকে উদযাপন করছেন। এবার সব ছাড়িয়ে আলোচনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন ভাই।




মৃ.ত বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে তার ও নিজেদের প্রিয় দলের পতাকার রঙে বসতঘর রাঙিয়েছেন তারা। সর্বশেষ ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ বাবাকে নিয়ে দেখলেও ২০২২ বিশ্বকাপ তাদের দেখতে হবে বাবাকে ছাড়া। এমন শূন্যতা থেকেই তিন ভাইয়ের এই অভিনব উদ্যোগ।




জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের রামরাইল ইউনিয়নের উলচাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ারুল ইসলামের (দারু মিয়া) তিন ছেলে শেখ তাজিম উদ্দিন আহমেদ (২৮), শেখ তারেক আহমেদ (২৬) ও শেখ রোহান উদ্দিন (২৩) এই ব্যতিক্রমী কাজ করে আলোচনায় উঠে এসেছেন। আনোয়ারুল ইসলাম ছিলেন ফুটবলের অন্ধ ভক্ত।




গ্রামের ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রিয় দলের খেলার দিনগুলো আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে পার করতেন তিনি। আর্জেন্টিনাকে নিয়ে তার আবেগের বিষয়টি উপভোগ করতেন এলাকাবাসী। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি মারা যান। রেখে যান ৯ ছেলে ও এক মেয়েকে। তাই এবার বাবার শূন্যতা পূরণ করতে ও শ্রদ্ধা জানাতে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে নিজেদের বসতবাড়ি রঙ করেছেন।




প্রয়াত আনোয়ারুল ইসলামের ৮ম ছেলে শেখ তারেক আহমেদ বলেন, ‘আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি আমাদের অগাধ ভালোবাসা। এই ভালোবাসা সেই ছোটবেলা থেকে। যখন আমরা ছোট ছিলাম, আব্বা রাত ৩টায় আমাদের পরিবারের সবাইকে আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা টিভিতে দেখতে ঘুম থেকে ডেকে তুলতেন। আমার আব্বা ছিলেন আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত। তখন থেকেই দলটির প্রতি আমাদের ভালবাসা তৈরি হয়েছিল। এখন আমার আব্বা নেই। আব্বার প্রতি ভালোবাসা এবং সম্মান জানিয়ে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে বসতঘর রঙ করেছি।’




৭ম ছেলে শেখ তাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের বসতঘরটিতে শয়ন কক্ষ রয়েছে পাঁচটি। যার পরিমাণ ১ হাজার ৮০ স্কয়ার ফিট হবে। গত এক সপ্তাহে আটজন মিস্ত্রীসহ আমরা তিন ভাই এই রঙের কাজ করেছি। ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আমি ও আমার পরিবারের সবাই আর্জেন্টিনার ভক্ত। আমার বাবা ছিলেন এই দলের অন্ধ ভক্ত। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আর্জেন্টাইন পতাকার মত রঙ করেছি।




স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ওয়াসিম বলেন, ‘সকালে সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম তারা ঘর রং করেছেন। তাদের বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাজারের সেক্রেটারি। তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার ভক্ত। তার ৯ ছেলেও আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের ভক্ত, আমিও এই দলের সাপোর্টার। খেলা আসলে আমরা অনেক উল্লাসে মেতে উঠি। তাদের ঘর রঙ করার বিষয়টি এলাকায় আলোড়ন তৈরি করেছে।’
স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড মেম্বার হুমায়ূন কবির বলেন, ‘তারা ঘরটি আর্জেন্টিনার পতাকার রঙ করায় খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। প্রয়াত আনারুল ইসলাম আমার সম্পর্কে চাচা হন। তিনি আর্জেন্টিনার ভক্ত ছিলেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.