Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

৮৩ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র


ডোনান্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের ওপর নেমে আসে নানা ধরনের নির্যাতন। বিশেষ করে যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে একরকম যুদ্ধই ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। তাদের ধরতে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন রাজ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়েছে।

করোনাভাইরাসের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ট্রাম্প প্রথমে তিনমাসের জন্য সব ওয়ার্কিং ভিসা স্থগিত করেছিলেন। যা গত সপ্তাহে বাড়িয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত করা করেছেন। এ নির্বাহী আদেশ জারি করার সময় তিনি অজুহাত হিসাবে উল্লেখ করেছেন, এখন আমেরিকানরাই অধিক সংখ্যায় বেকার। আমেরিকানদের বেকারত্ব দূর করতেই তিনি এ নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন।

শুধু তাই নয়, তিনি বিভিন্ন ক্যাটাগরির ওয়ার্ক ভিসাই বাতিল করেননি, এই ক্যাটাগরির গ্রিনকার্ড প্রক্রিয়াও স্থগিত করেন। এদিকে গত ২৫ জুন আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট (নবম সার্কিট) অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এক রায় দিয়েছে। ফলে অ্যাসাইলাম প্রার্থীরা আর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে বা আপিল করতে পারবেন না। ইমিগ্রেশন জজ রায় দেয়ার পরই তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়া হবে। গত ২৫ জুন শ্রীলঙ্কান একজন অ্যাসাইলাম প্রার্থীর শুনানিতে আদালত এ রায় দেন।

অনেকেই এই রায়কে ট্রাম্প প্রশাসন বা হোমল্যান্ড সিকিউরিটির জয় হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো মানবতাবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে ৭-২ ভোটে জয় পাওয়া মামলার রায়ে বলা হয় অ্যাসাইলাম প্রার্থীরা আর ফেডারেল কোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না এবং আমেরিকায় আশ্রয় প্রার্থীদের আশ্রয় পাওয়ার পথ সংকুচিত করলো।

একটি সূত্রে জানা গেছে, এ রায়ে রাতেই আমেরিকার সীমান্তবর্তী স্টেটগুলোর ডিটেনশন সেন্টারে যেসব বাংলাদেশি ছিলেন, তাদের টেক্সাসের পরারিল্যান্ড ডিটেশন সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। পরে ওইদিন রাতেই তাদের বিশেষ একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ২৫ জুনের ওই বিশেষ ফ্লাইটে প্রায় ৮৩ জন বাংলাদেশি ছিলেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, যে ৮৩ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরৎ পাঠানো হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০ জনের করোনাভাইরাস রয়েছে। এর আগেও বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে তাদের বিমানেও তোলা হয়েছিল কিন্তু কোনো ডকুমেন্ট না থাকায় তাদের পাঠানো সম্ভব হয়নি।

তাদের ১০ ঘণ্টা বিমানের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছিল। এরই মধ্যে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করলে ৮৩ জন বাংলাদেশির ডকুমেন্ট পাঠানো হয়। ডকুমেন্ট পাওয়ার সাথে সাথেই তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া কয়েকজনের আত্মীয়/বন্ধু নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে ৮৩ জন অ্যাসাইলাম প্রার্থীকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে, তারা এখন নিজনিজ বাসায় পৌঁছে গেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন মামুন, সালাউদ্দিন, সাহেদ, মুন্না, জাহের, পেয়ার হোসেন প্রমুখ। তারা সবাই নোয়াখালীর।

এছাড়াও যাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে, তারা নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, চাঁদপুর এবং গাজীপুর জেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে গ্রেটার নোয়াখালীর লোকজনই বেশি।

তারা বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে তারা বিভিন্ন দেশ ঘুরে, জেলজুলুম ভোগ করে আমেরিকায় এসেছিলেন। যারা ফিরে গেছেন, তাদের পরিবার এখন নিঃস্ব। যে কারণে অনেকেই মন্তব্য করেন, শেষ সম্বল ভিটেমাটি বিক্রি করে দালালকে অর্থ দিয়ে এভাবে আমেরিকায় আসার কোন অর্থ হয় না।

এই মামলায় সাত জন বিচারপতি সরকারের পক্ষে ছিলেন, কিন্তু বিচারপতি স্যামুয়েল আলিতো দ্বারা লিখিত সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে রায়টি দেয়া হয়। ৭ জন বিচারপতির মধ্যে ৫ জনই ছিলেন রক্ষণশীল। আলিতো বলেছিলেন অতিরিক্ত আদালতের চ্যালেঞ্জগুলিও অভিবাসন ব্যবস্থাকে জোরদার করতে পারে।

রায়ে বলা হয়, অভিবাসীরা যারা স্থল সীমান্তের ১০০ মাইলের মধ্যে এবং আগমনের ১৪ দিনের মধ্যে ধরা পড়বে, তাদের দ্রুত শুনানি শেষ নিজনিজ পাঠিয়ে দেয়া হবে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের নীতিবিষয়ক পরামর্শদাতা অ্যারন মেলনিক বলেন, এ রায় অ্যাসাইল প্রার্থীদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি- সোনিয়া সটেমেয়ার এবং এ্যালিনা কাগান বলেছেন, এ রায় আমেরিকার ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার খর্ব করবে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.