Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সাদা না বাদামি ডিম বেশি স্বাস্থ্যকর, জেনে নিন


ডিম আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসের অন্যতম অংশ। ডিম ভাজা থেকে শুরু করে, সিদ্ধ, কারি, পোচ, ডিমের পুডিং যেন তালিকার শেষ নেই। আর সরাসরি রান্না বাদেও ডিম অন্যান্য খাবারে ব্যবহার হয়ে আসছে।

একটি বড় ডিমের ওজন প্রায় ৫০ গ্রাম হয়ে থাকে । সিদ্ধ করা ডিমে রয়েছে ক্যালোরি, শর্করা, স্নেহ প্রোটিন, থায়ামিন (বি১), রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, মিলিগ্রাম ফসফরাস, পটাশিয়াম, দস্তাসহ অন্যান পদার্থ।

পুষ্টিগুণে ভরা ডিমকে বলা হয় পাওয়ার হাউস অব নিউট্রিশন। প্রাণীজ প্রোটিনের মধ্যে ডিম হলো আদর্শ প্রোটিন। ডিম শুধু আদর্শ প্রোটিনই নয়, বরং অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এতে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। এটি হৃদরোগের বিরুদ্ধে অনেক কার্যকরী। ডিমের একটা বিষয়ে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়। যারা মুরগির ডিম খান, তারা প্রায়ই বুঝতে পারেন না কোনটা খাবেন সাদা না বাদামি।

অন্যান্য খাবারের হিসাব যদি করেন, তবে সাদার চেয়ে বাদামিটাই বেশি স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন- সাদা আটার চেয়ে বাদামি আটা বেশি পুষ্টিকর। সাদা চালের চেয়ে বাদামি চালের ভাত বেশি স্বাস্থ্যকর। সেই হিসাবে বাদামি ডিম কেন বেশি ভালো হবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাদা বা বাদামি দুটি ডিমের মধ্যে পুষ্টিগত দিক থেকে তেমন কোনও বড় পার্থক্য নেই। তবে দেখা গিয়েছে, বাদামি ডিমের মধ্যে বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তবে এই ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ এতটাও বেশি থাকে না যে তার জন্য পুষ্টির বিরাট বড় কোনও পার্থক্য হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে জানার বিষয় হল, সাধারণত পোলট্রির ডিম হয় সাদা রঙের। এই মুরগির সাধারণত সাদা রোম থাকে। অপরদিকে অনেক মুরগির রং হয় বাদমি। তাদের ডিমের রংও হয়ে থাকে বাদামি। তবে বুঝতে হবে, এক্ষেত্রে সাদা পোলট্রি বড় করা ও প্রতিপালন করা অনেকটাই সোজা। তাই এই মুরগির ডিমই আপনি বেশি পাবেন।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, এই বাদামি ডিমের প্রোটিন, কোলেস্টেরল এবং ক্যালোরির ভারসাম্য সাদা ডিমের থেকে ভালো।

বাদামি ডিমে কি ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের ভয় কম থাকে? এদের স্বাদ কি সাদার চেয়ে বেশি? বাদামি ও সাদা ডিমের মধ্যে পার্থক্য আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

ডিমের কুসুম বাদামি ডিমের কুসুমের রঙ একটু বেশি গাঢ়। কারণ বাদামি ডিম যেসব মুরগি পাড়ে, তাদের বেশি পরিমাণ শস্য খাওয়ানো হয়।

বাদামি ডিমগুলো সাদা ডিমের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি দামের হয়ে থাকে। বাদামি ডিম যে মুরগি পাড়ে তাদের আকার অনেক বড়। এদের খাবারের পেছনেও খরচ বেশি। তাই এই ডিমের দাম বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু সাদা ডিম যেসব মুরগি পাড়ে, তাদের খাবারের পেছনে অপেক্ষাকৃত কম খরচ হয়।

সরবরাহ বাজারে সাদা ডিমের সরবরাহ একটু বেশিই দেখবেন। আবার বাদামিটাও বেশি থাকতে পারে। কারণ সাদা পালকের মুরগি অনেক বেশি মেলে। আবার এরা ডিমও পাড়ে বেশি।

স্বাদ বাদামি ও সাদা ডিমের স্বাদ ভিন্ন। আসলে মুরগিকে যে খাবার দেওয়া হবে তার ওপর নির্ভর করবে ডিমের পুষ্টিগুণ কেমন হবে।

অন্যদিকে সাধারণ ধারণা হলো, সাদা পালক ও সাদা বা হালকা রঙের কানের লতিবিশিষ্ট মুরগী পাড়ে সাদা ডিম আর বাদামি পালক ও লাল কানের লতি বিশিষ্ট মুরগী পাড়ে বাদামি ডিম। যদিও এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় না। কারণ লেগহর্ন জাতের মুরগী সাদাসহ বিভিন্ন রঙের হয় কিন্তু তারা সবাই সাদা ডিম পাড়ে।

বাজারে সাদার চেয়ে বাদামি ডিমের দাম বেশি হওয়ার পেছনের কারণ বুঝতে হলে ডিম উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। ডিমের খোসার রঙ বাদামি হয় মূলত মুরগীর জরায়ুর মধ্যে। এটিকে বলে শেল গ্ল্যান্ড। এখানে অনেকটা ঘরে রঙ করার মতো ডিমের ওপর বাদামি রঙ যুক্ত হয়।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি এক্সটেনশন এ প্রক্রিয়ার একটি চিত্র দিয়েছে। তাদের হিসাবে, একটি ডিম তৈরি হতে প্রায় ২৬ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে প্রাইম টাইমে অর্থাৎ জীবনের প্রথম দুই বছর মুরগী দৈনিক একটি করে ডিম দিতে পারে। ডিম তৈরির প্রক্রিয়াটি শুরু হয় মূলত কুসুম তৈরির মধ্য দিয়ে। গর্ভে তৈরি হয় এটি। এরপর সেটি চলে যায় অভিডাক্ট টিউবে। এখানে কুসুমের চারদিকে সাদা অংশটি (অ্যালবুমিন) তৈরি হতে প্রায় তিন ঘণ্টা লাগে। এরপর খোসার নিচের ঝিল্লি তৈরি হয় ৭৫ মিনিটে। এরপর ডিমটি চলে যায় শেল গ্ল্যান্ডে। এখানেই তৈরি হয় উপরের শক্ত খোসা।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের খাদ্য প্রযুক্তির গবেষক ডিনা জোনস বলেন, শেল গ্ল্যান্ডে একটি ডিম সবচেয়ে বেশি সময় অবস্থান করে। খোসা তৈরি হতে কমপক্ষে ২০ ঘণ্টা সময় লাগে। ডিম তৈরির একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে যোগ হয় রঙ। এটি ঘরে রঙ করার মতো একটা ব্যাপার। সব ডিমই প্রাথমিকভাবে সাদা হয়। সাদা ডিম রঙ করার ধাপটি এড়িয়ে যায়।

জোনস বলেন, বাদামি ডিমের দাম বেশি হওয়ার পেছনের রহস্য এখানেই। বাদামি রঙ দিতে বেশি পরিমাণে পুষ্টি ও শক্তি খরচ হয়। এ কারণে বাদামি লেয়ার মুরগী পালনে খাবারের পেছনে খামারির বেশি খরচ করতে হয়। এ কারণেই বাণিজ্যিকভাবে পালন করা বাদামি পালকের মুরগীর খাদ্যচাহিদা বেশি।

ওজন-ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গার্গি শর্মা মনে করেন, সাদা ডিমের চেয়ে বাদামি ডিম স্বাস্থ্যকর। তার মতে, যারা সঠিক মাত্রায় প্রোটিন, কোলেস্টরেল ও ক্যালোরি গ্রহণে ইচ্ছুক তাদের জন্য বাদামি ডিম একটি ভালো বিকল্প।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.