Beanibazarview24.com
দুই দফা উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেয়ার পরও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় মঙ্গল অভিযানের নির্ধারিত সময় থেকে সরে আসতে হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। অবশেষে সবকিছু অনুকূলে নিয়ে মঙ্গলের পথে যাত্রা শুরু করেছে মুসলিম বিশ্বের প্রথম নভোযান। সফলভাবে যাত্রা শুরু করা আরব আমিরাতের এই মঙ্গল অভিযানের নাম “হোপ”।
জাপানের তেনিগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ৬টা ৫৮ মিনিটে মুসলিম বিশ্বের ইতিহাস হয়ে এইচ২-এ রকেটে করে মঙ্গল গ্রহের দিকে যাত্রা শুরু করেছে হোপ। ৫০ কোটি কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এটি পৌঁছাবে মঙ্গলে; তারপর লাল এই গ্রহটির আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশ্লেষণ গবেষণা এগিয়ে নিতে তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে।
আর এই মিশনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আরব আমিরাতে বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান সারাহ আল আমিরি, যিনি দেশটির অ্যাডভান্সড সায়েন্স বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
বিবিসি জানিয়েছে, জাপানের সবচেয়ে বড় রকেটবন্দর তানেগাশিমা থেকে উড্ডয়ন করে আমিরাতের স্যাটেলাইট ‘হোপ মিশন’। মহাকাশযানটি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে পৌঁছাবে যা কাকতালীয়ভাবে আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী।
তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় এর আগে দু’বার মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণের সময় পেছাতে হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মঙ্গল অভিযান সফল হলে তাদের নাম যুক্ত হবে বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের তালিকায়। এ তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপ আর ভারতের মতো গুটিকয়েক দেশ, যারা মঙ্গলগ্রহে সফল মহাকাশ অভিযান করতে পেরেছে।
মহাকাশযান ডিজাইন ও নির্মাণ করার ক্ষেত্রে আরব আমিরাতের অভিজ্ঞতা একেবারেই নেই। তবে দেশটির উচ্চাভিলাষ তাদেরকে চ্যালেঞ্জটি নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মঙ্গল থেকে কিভাবে বাতাস কমে গেলো কিংবা পানির বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
তবে হোপ মিশন আসলে পরিণত হবে অনুপ্রেরণার বাহন হিসেবে যা আরব আমিরাতসহ পুরো আরব অঞ্চলের তরুণদের বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে আকৃষ্ট করবে।
দেশটির সরকার বলছে, এ মহাকাশযাত্রা তেমন কিছু প্রকল্পের অংশ যা দেশটিকে তেল গ্যাস নির্ভর অর্থনীতি থেকে জ্ঞানভিত্তিক সমাজের দিকে নিয়ে যাবে।
তবে মঙ্গল অভিযানে আরব দেশের একজন নারীর নেতৃত্ব অবাক করার মতো ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
সারাহ আল-আমিরি ‘হোপ মিশনের’ বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান। একই সঙ্গে তিনি দেশটির অ্যাডভান্সড সায়েন্স বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
এই নবীন বিজ্ঞানী এরই মধ্যে আরব বিশ্বের নারীদের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। ‘হোপ মিশন’ পৃথিবী ছেড়ে যখন রওনা হয়েছে মঙ্গল অভিমুখে, তখন একই সঙ্গে সবার নজর সারাহ আল-আমিরির দিকেও।
মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণের পর তার স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সারাহ আল আমিরি।
তিনি বলেন, তার দেশের ওপর এর প্রভাব অনেকটাই ৫১ বছর আগে আমেরিকার চাঁদে পা রাখার মতো। সেটিও ২০ জুলাই তারিখেই হয়েছিল।
‘আজি আমি আনন্দিত যে আরব আমিরাতের শিশুরা ২০ জুলাই তারিখে ঘুম থেকে উঠে তাদের নিজস্ব অভিযানটি দেখতে পাবে, যা নতুন একটি বাস্তবতা। যা তাদের নতুন কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.