Beanibazarview24.com
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো এবার মিশিগানেও বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত হবে। মঙ্গলবার বিশ্বে হিজাব দিবস হিসেবে পালিত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার মিশিগান সিনেটর স্টেফানি চ্যাং (ডেমোক্র্যাট-ডেট্রয়েট) দ্বারা উপস্থাপিত একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। এর মধ্য দিয়ে মঙ্গলবারকে মিশিগানে বিশ্ব হিজাব দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
মিশিগানে হিজাব দিবসকে স্বীকৃতি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন রেবেকা ইসলাম। তার মতে, হিজাব পরা একজন নারীর পছন্দের, স্বাধীনতার প্রতীক। এটা একটি আশীর্বাদ।
তিনি বলেন, এটি এমন একটি বার্তা যা আমেরিকান মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা সরকারতে জানাতে ও দিবসটি পালনে স্বীকৃতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
এপিআইএ ভোট-এমআই-এর (ঐতিহ্যবাহী পর্দা) নির্বাহী পরিচালক রেবেকা ইসলাম বলেন, নারীর চুল ও বুক ঢেকে রাখে হিজাব। এটা নারীর দেহের পবিত্রতা ও সম্মান বাড়ায়। সেই সঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধার সৃষ্টি করে। তার নির্দলীয় সংস্থা এশিয়ান প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জের আমেরিকান সম্প্রদায়কে বিভিন্ন নাগরিক অংশগ্রহণ এবং অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে সেবা দেয়।
রেবেকা ইসলাম স্টার্লিং হাইটসের বাসিন্দা যিনি হ্যামট্রামকে বেড়ে উঠেছেন। সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম-আমেরিকান বসবাস করেন। হিজাবের বিষয়টি নিয়ে তিনি চ্যাংয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালন করা শুরু হয়। সেই থেকে হাজারো মুসলিম, অমুসলিম নারী হিজাব পরে দিবসটি পালন করেন। বিশ্ব হিজাব দিবস সম্পর্কে অনেকেই হয়তো তেমন কিছু জানেন না।
চ্যাং বলেন, হিজাব পরিধান ও মুসলিম নারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে সবার জন্য এটা উন্মুক্ত আমন্ত্রণ। সংস্কৃতি ও বিশ্বাস ভাগ করে নেওয়া, একে অপরকে জানা ও বুঝার জন্যই এ দিবসকে স্বীকৃতি দেওয়া। বিশ্ব হিজাব দিবস ইসলামিক বিশ্বাস ও অনুশীলনের সার্বজনীনতা বুঝার এবং আমাদের সমাজের মধ্যে একটি শক্তিশালী সাম্প্রদায়িক বন্ধন গড়ে তোলার আহ্বান জানায়। নিউইয়র্ক সিটি ১০ বছর ধরে দিবসটিকে পালন করছে।
প্রস্তাবের একটি অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, হিজাব বিষয়টি মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে সম্পৃক্ত একটি বিষয় হলেও বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নারীই দিবসটি উদযাপন করেন। মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানের সংস্কৃতিটি অমুসলিম নারীদেরকেও আকৃষ্ট করেছে। মূলত বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে ধর্মীয় সহনশীলতা, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সংহতি প্রচার করতে উৎসাহিত করার জন্য দিবসটি পালন করা হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতির নারীদের জন্য এমন একটা দিন, যারা সাধারণত হিজাব পরেন না, তবে এই দিনে পরে অন্যরকম অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এর উদ্দেশ্য ধর্মীয় সহনশীলতা, সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া এবং আন্তর্জাতিক সংহতিকে উৎসাহিত করা।
রাজ্য প্রতিনিধি পদ্মা কুপ্পা (ডেমোক্র্যাট-ট্রয়) বলেছেন, এপিআইএ ভোট-এমআই ডিরেক্টর রেবেকা ইসলাম, তার পরিবার ও আমার সহ-সভাপতি (এশিয়ান প্যাসিফিক আমেরিকান লেজিসলেটিভ ককাস) সিনেটর চ্যাংয়ের দ্বারা প্রবর্তিত বিশ্ব হিজাব দিবসের প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ল্যান্সিংয়ে তার সাথে আসা দর্শকদের সম্মান দেওয়া হয়েছে। চ্যাং এবং হাউস গ্যালারিতে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়াটা আরও সুন্দর ছিল।
রেবেকা ইসলাম বলেছেন, আমেরিকার সবচেয়ে বড় শক্তিগুলোর একটি হলো বিভিন্ন সংস্কৃতি ও বিশ্বাসকে আলিঙ্গন করা, নাগরিকদের স্বাধীনভাবে নিজেদের প্রকাশ করার অনুমতি দেয়।
২০১৩ সাল থেকে পৃথিবীজুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাজমা খানের হাত ধরেই হিজাব দিবসের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হিজাব দিবস পালনের উদ্যোগ নেন তিনি। পরবর্তী সময়ে মুসলিম দেশগুলোতে বেশ ভালোভাবেই দিবসটি পালিত হতে আসছে। বর্তমানে প্রায় ১৫০ দেশে দিবসটি পালিত হয়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.