Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

ইসরাইলে শুক্রাণু বিক্রির হিড়িক তরুণদের


করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট আর্থিক সংকটে ইসরাইলে ব্যাপকভাবে স্পার্ম ডোনেশন বেড়েছে। দেশটির কয়েকটি সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ হার বেড়েছে ৩শ’ শতাংশ পর্যন্ত। একজন ডোনার প্রতিমাসে স্পার্ম বিক্রি করে ৪ হাজার শেকেল আয় করতে পারেন বলেও জানানো হয়।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুক্রাণু দাতাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী এবং সামরিক বাহিনীর সদস্য। করোনার কারণে যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন বা বেতন ছাড়া ছুটিতে রয়েছেন। শুক্রবার দেশটির গণমাধ্যম চ্যানেল টুয়েলভ এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরাইলে বেকারত্বের হার বেড়ে ২১ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যার হিসেবে যা ৮ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি। করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিধিনিষেধ আরোপের কারণে অর্থনীতিতে আরো নেতিবাচক প্রভাব পড়েছ। দ্রুত সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

ইসরাইলের সরকারি এবং বেসরকারি স্পার্ম ব্যাংকগুলো একবার শুক্রাণু দিলে দেড় হাজার শেকেল পর্যন্ত অর্থ দেয়। গেলে কয়েক সপ্তাহে স্পার্ম ডোনেটের এ হার ৩শ’ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলেও জানানো হয়।

২৫ বছর বয়সী অ্যালন বলেন, ‘তিনি তার চাকরি হারিয়েছেন। ওই চাকরিতে তিনি এক লাখ শেকেলের মতো বেতন পেতেন। তাকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় পরিবারসহ বাসা ছাড়তে হয়েছে।’

যখন আয়ের নতুন উৎস খুঁজছিলেন, তখন তিনি স্থানীয় রামবাম মেডিকেল সেন্টারের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পান। যেখানে হাসপাতালের স্পার্ম ব্যাংকের জন্য ডোনার চাওয়া হয়েছিল। বলেন, অ্যালন।

‘আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এটি অর্থ আয়ের ভালো একটি সুযোগ। চ্যানেল টুয়েলভকে অ্যালন বলেন, মাত্র কয়েক মিনিটে, আয় করতে পাড়ি কোনো পরিশ্রম ছাড়াই। মাসে ৩ হাজার শেকেল (৮শ’৭৯ মার্কিন ডলার) আয় করা যায়। বেকার থাকা অবস্থায় অনেক ভালো আয় এটা।’

‘আমার পরিচিত বহু তরুণ আছে। যারা করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছে। তাদের অনেকে বেসরকারি স্পার্ম ব্যাংকে, হাসপাতালে স্পার্ম বিক্রি করছে। যাতে তারা ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে টিকে থাকাতে পারে।’

২৬ বছর বয়সী তেল আবিবের এক শিক্ষার্থী বলেন, তিনি একটি বেসরকারি স্পার্ম ব্যাংকে কয়েকবার স্পার্ম দিয়েছেন। আয় করেছেন ৫ হাজার শেকেল (১ হাজার ৪শ ২ ডলার)।

‘আমি কখনো স্পার্ম ব্যাংকের কথা শুনিনি। কাছের এক বন্ধু বললো, এতে অংশ নিতে। খুব ভালো অর্থ পাওয়া যায়। প্রতিবার ডোনেট করার জন্য আমি এক হাজার থেকে দেড় হাজার শেকেল অর্থ পাই। যা অন্য যেকোনো কিছু থেকে ভালো। অন্তত আমি টিকে থাকতে পারছি, বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে পারছি। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারছি।’

বেসরকারি স্পার্ম ব্যাংকগুলো একবার ডোনেট করার জন্য দেড় হাজার শেকল (৪শ’ ৪০ ডলার) প্রদান করে। শিক্ষাগতযোগ্য, সামরিক অভিজ্ঞতা এবং বাবা-মায়ের পরিচিতির উপর অর্থ প্রাপ্তির বিষয় নির্ভর করে।

স্পার্ম গ্রহণকারীরা ব্যয়বহুল জেনেটিক পরীক্ষা এবং ভালো মানের স্পার্মের জন্য ব্যাংকগুলোকে অনেক অর্থ প্রদান করে। এতে স্পার্ম ব্যাংকগুলো মোটা অংকের অর্থ আয় করে। যা দেশটিতে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বর্তমানে বেশি বেড়েছে।

সরকারি হাসপাতালে একজন ডোনার সপ্তাহে দু‘বার স্পার্ম ডোনেট করতে পারেন। প্রতিবার ডোনেট করার জন্য ৬শ’ শেকেল আয় করেন। মাসে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮শ’ শেকেল। চ্যানেল টুয়েলভের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ আয় থেকে সরকারকে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না।

মহামারীর শুরুতে দেশটিতে লকডাউন এবং স্পার্ম থেকে করোনা ছড়াতে এমন আতঙ্কে ডোনেশন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ডোনেশনের হার ১৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১শ’ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩শ’ শতাংশ।

‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে, এটা খুবই ভালো সুযোগ। ডোনারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি স্পার্ম ব্যাংকের মতো আমরাও গ্রাহককে পছন্দের অনেক সুযোগ দিতে পারি।’ বলেন, ডা. ওফের ফেইনরো। একটি হাসপাতালের স্পার্ম ব্যাংকের এই ম্যানেজার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য গ্রাহকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সেবা দেয়া। এ সেবা নিশ্চিত করতে ডোনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারাতে বাড়াতে চাই আমরা।’

ফেইনরোর পর্যবেক্ষণ, আর্থিক সংকটের কারণে স্পার্ম ডোনারের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া, ডোনার চেয়ে তাদের দেয়া বিজ্ঞাপন ইচ্ছুকদের সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছে।

মার্চে ইসরাইলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে নেয়া পদক্ষেপে ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন চিকিৎসাকে অপ্রয়োজনীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বন্ধ করে দেয়। এপ্রিলের শেষ দিকে পুনরায় চালুর জন্য এ কার্যক্রম শুরু হয়।

ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন হল একটি প্রজনন চিকিৎসা। যেখানে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুকে ভ্রূণ তৈরির জন্য একটি পরীক্ষাগারে মিলিত করা হয়। এবং একটি আইভিএফ শিশুকে গর্ভে ধারণ করার জন্য সার্ভিক্সের মাধ্যমে সেটিকে জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। আইভিএফ চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্রজনন চিকিৎসা হিসেবে বিবেচিত। ২০১৭ সালে ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে বলা হয়, দেশটিতে জন্ম নেয়া ৫ শতাংশ শিশু এ প্রক্রিয়া জন্ম গ্রহণ করে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.