Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সিলেটে জাল ভিসায় ইউরোপ যাত্রা, রোমানিয়ার বিমানবন্দর থেকে ফিরলেন যুবক


মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান বিমান বৈদ্য। পরিবারের অভাব ঘুচাতে ইউরোপের দেশ রোমানিয়া যেতে সিলেটের দালাল রায়হানের হাতে তুলে দিয়েছিলেন সাড়ে ৬ লাখ টাকা। বিনিময়ে হাতে পান রোমানিয়ার ভিসা। কিন্তু ওই ভিসা নিয়ে তিনি রোমানিয়া ঢুকতে পারেননি। জাল ভিসা হওয়ার কারণে রোমানিয়ার বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

দেশে ফিরে এলেও তিনি প্রতারকদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতে পারেননি। এ কারণে ‘মধ্যস্ততাকারী’ শাহেদ আহমদ দালাল রায়হানের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী শাহেদ আহমদের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই গ্রামে। আর আসামি রায়হান উদ্দিন ও রাসেল আহমদের বাড়ি সিলাম মোল্লারচক এলাকায়। রায়হানের মাধ্যমেই রোমানিয়া যাওয়ান বিধান।

মামলার এজাহারে শাহেদ আহমদ জানিয়েছেন- দালালের প্রতারণার শিকার হওয়া বিধান বৈদ্য তার পরিচিতজন। আর রায়হান উদ্দিন বিভিন্ন দেশে লোক পাঠিয়ে থাকেন। সেজন্য বিধান বৈদ্য রোমানিয়া যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে রায়হান উদ্দিন তাতে সম্মতি দেন। এবং ৬ লাখ ৬৫ হাজার বিনিময়ে বিধান বৈদ্যকে রৈামানিয়া নিয়ে যাবেন বলে জানান।

এ সময় আলোচনা ক্রমে সিদ্ধান্ত হয়- ভিসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম, ভিসা জালিয়াতি কিংবা জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়ে যাত্রী ফেরত এলে সম্পূর্ণ টাকা ক্ষতি পূরণ সহ প্রদান করা হবে। এজাহারে শাহেদ জানান- রাহয়ানের কথা মতো তিনি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিধান বৈদ্যর কাছ থেকে টাকা ও তার পাসপোর্ট সমঝে নেন। এরপর সেই পাসপোর্ট তিনি রায়হান উদ্দিনের কাছে দেন।

এদিকে- কথা মতো রোমানিয়ার ভিসা হওয়ার পর শাহেদ আহমদ তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান শাহেদ এন্টারপ্রাইজের নামে ইউনিয়ন ব্যাংকের একাউন্ট থেকে দালাল রাহয়ান উদ্দিনকে ৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। যার প্রমান শাহেদ আহমদের কাছে রয়েছে।

এদিকে- ভিসা প্রাপ্তির পর বিধান বৈদ্য চলতি বছরের ১১ই জানুয়ারি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কিন্তু রোমানিয়া বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে আটকে দেওয়া হয়। এ সময় পরীক্ষা করে জানানো হয় বিধান বৈদ্যর ভিসা জাল। এরপর রোমানিয়া ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে দেশে পাঠিয়ে দেন। গত ২০শে জানুয়ারি বিধান বৈদ্য রোমানিয়া ইমিগ্রেশন থেকে দেশে ফিরে আসেন বলে জানান শাহেদ। এদিকে- জাল ভিসা থাকার কারনে বিধান বৈদ্য দেশে আসার পর রায়হানের কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হয়।

এ সময় রায়হান জানায়- এক মাসের মধ্যে সে টাকা ফেরত দেবে। মামলার এজাহারে শাহেদ জানিয়েছেন- এরপর থেকে রায়হান উদ্দিন নানা অজুহাতে টাকা ফেরত দেয়নি। কালক্ষেপণ করতে থাকায় গত ২রা অক্টোবর বিধান বৈদ্যকে নিয়ে তিনি রায়হানের দক্ষিণ সুরমাস্থ বাড়িতে গেলে রায়হান টাকার কথা অস্বীকার করে। রায়হান উদ্দিন ইচ্ছাকৃত বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে এই টাকা আত্মসাতের জন্য জাল ভিসা সৃজন করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এদিকে আদালত এজাহারটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের দায়িত্বে দিয়েছেন।

মামলার বাদী শাহেদ আহমদ জানিয়েছেন- ‘রায়হানের প্রতারনা আমরা বুঝতে পারিনি। সে জাল ভিসা দিয়ে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। এখন টাকা ফেরত দিচ্ছে না। সে নানা টালবাহান করছে।’ তিনি জানান- ‘রোমানিয়ার এয়ারপোর্ট থেকে ফেরত আসা বিধান বৈদ্যকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিয়ে আসার পর ফিরতি ফ্লাইটের টাকা দিয়ে তাকে মুক্ত করে নিয়ে আসা হয়। টাকা পেতে তিনি মামলা করেছেন বলে জানান।’ এদিকে- অভিযুক্ত মোল্লারচক গ্রামের রায়হান উদ্দিন জানিয়েছেন- তিনি এ ব্যাপারে অবগত নন।

বিধান বৈদ্য নামের কাউকে বিদেশ পাঠানোর কন্ট্রাক্ট নেননি তিনি। সব কিছুই শাহেদ জানেন। এ ব্যাপারে তার কোনো দোষও নেই। তার বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেটির আইনি লড়াই তিনি চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
-মানবজমিন

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.