Beanibazarview24.com
মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেছেন সালমান শাহ। সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি দিয়ে তার যাত্রা শুরুতে ক্যারিয়ারের প্রথম নায়িকা হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীকে। এরপর ১৯৯৬ সালে ৬ সেপ্টেম্বর মৃ’ত্যুর আগ পর্যন্ত সালমান অভিনয় করেছেন তার সমসাময়িক ১১ জন নায়িকাদের বিপরীতে।
প্রথম ছবিতে মৌসুমীর সঙ্গে সালমানের জুটি দারুণ জনপ্রিয় হয়। অনেক নির্মাতাই তাদের নিয়ে ছবি করতে আগ্রহী হতে থাকেন। তারা শুরু করেন ‘অন্তরে অন্তরে’ নামে নতুন একটি ছবির শুটিংও। কিন্ত ব্যক্তি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে এই জুটি আর তেমন করে কাজ করেননি অনেকটা সময়।
পরবর্তীতে মৌসুমীর সঙ্গে সালমান শাহ অভিনয় করেন ‘দেনমোহর’ চলচ্চিত্রে। এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। এ ছাড়াও সালমান-মৌসুমী জুটি অভিনয় করেন ‘স্নেহ’ নামের আরও একটি সিনেমায়।
তবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে সবচেয়ে সফল রোমান্টিক জুটি হিসেবে মনে করা হয় সালমান শাহ-শাবনূরকে। প্রয়াত নির্মাতা জহিরুল হক ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করেন ‘তুমি আমার’। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন সালমান শাহ ও শাবনূর। এটি সালমানের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র হলেও নায়িকা হিসেবে শাবনূর তখন বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে সালমানের সঙ্গে জুটি গড়ার পরেই শাবনূরের ক্যারিয়ারে সুবাতাস বইতে থাকে।
এরপর একে একে ‘সুজন সাথী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘বিচার হবে’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘জীবন সংসার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেম পিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভিতর আগুন’; এই ১৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন সালমান-শাবনূর জুটি। সবগুলো ছবিই ছিলো সুপারহিট।
নির্মাতারা দারুণ আগ্রহী হয়ে উঠেন এই জুটিকে নিয়ে। আরও বেশ কিছু ছবিতে চুক্তিবদ্ধ করা হয় তাদের। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘নয়নমনি’, ‘তুমি শুধু তুমি’, ‘মন মানে না’, ‘অধিকার চাই’, ‘মধু মিলন’, ‘কে অপরাধী’, ‘শেষ ঠিকানা’ ইত্যাদি। তবে সালমানের হঠাৎ মৃ’ত্যু সব কাজ থমকে দেয়। পরবর্তীতে সফল জুটি ভেঙ্গে যাওয়া শাবনূর এই ছবিগুলো করেছেন রিয়াজ, ওমর সানী, অমিত হাসানদের সঙ্গে।
শাবনূরের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি ১৯৯৪ সালের শেষ দিকে জীবন রহমান পরিচালিত ‘প্রেম যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রে লিমার সঙ্গে জুটি বাঁধেন সালমান শাহ। পরের বছর দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘কন্যাদান’ চলচ্চিত্রেও দেখা যায় এই জুটিকে। কিন্তু এই জুটি খুব একটা জনপ্রিয়তা পায়নি।
১৯৯৫ সালে হাফিজউদ্দিন পরিচালিত ‘আঞ্জুমান’ চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধেন সালমান শাহ ও শাবনাজ। এই সিনেমাটির পর ‘আশা ভালোবাসা’ ও ‘মায়ের অধিকার’ সিনেমাতেও সালমান-শাবনাজ জুটিকে দেখা যায়। নাঈমের সঙ্গে জুটির বাইরে শাবনাজের সঙ্গে সফল জুটি ছিলেন সালমান শাহ।
এছাড়াও সালমান শাহের সঙ্গে অভিনয় করেছেন শিল্পী, শাহনাজ, বৃষ্টি, কাঞ্চি, শ্যামা ও সাবরিনা। ১৯৯৬ সালে মালেক আফসারী পরিচালিত ‘এই ঘর এই সংসার’ চলচ্চিত্রে সালমানের নায়িকা হিসেবে দেখা যায় বৃষ্টিকে। একই বছরে মডেল ও অভিনেত্রী শিল্পী ‘প্রিয়জন’ চলচ্চিত্রে সালমানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। এ ছবিতে দেখা যায় রিয়াজকেও।
ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘সত্যের মৃ’ত্যু নেই’ সিনেমায় সালমান শাহের বিপরীতে ছিলেন শাহনাজ। এই ছবিটি সালমান শাহ মারা যাওয়ার পরপরই মুক্তি পায়। আর ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আশা ভালোবাসা’ ছবিতে শাবনাজের পাশাপাশি দেখা গিয়েছিলো সাবরিনাকে।
১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘শুধু তুমি’ ছবিতে সালমানের নায়িকা হিসেবে ছিলেন শ্যামা। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ছবিতে শাবনূরের সঙ্গে সালমানের আরেক নায়িকা ছিলেন সোনিয়া। সেই ছবিটি ১৯ কোটি টাকা ব্যবসা করে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক আয় করা চলচ্চিত্রের তালিকায় দ্বিতীয় হয়ে আছে বলে দাবি করেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকেই।
সালমান শাহ আরও বেশ কিছু ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। সেসব ছবির কয়েকটিতে নায়িকা হিসেবে কাজ করার কথা ছিলো তখনকার নতুন মুখ পপির। এ নায়িকার অভিষেক হওয়া ছবি ‘কুলি’-তেই সালমান নায়ক ছিলেন। তার অকাল মৃ’ত্যুর পর সেখানে নায়ক হয়ে অভিনয় করেছেন ওমর সানী।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.